Durga Puja Special: দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে কেন যৌনপল্লীর মাটিই প্রয়োজন হয়?

Durga Puja Special: যৌন পল্লীর মাটি ছাড়া তৈরিই হবে না উমার মূর্তি। বহু যুগ ধরেই চলে আসছে এই নিয়ম। কিন্তু কেন এই প্রথা? সারাটা বছর যেখানে যাওয়া সমাজের কাছে লজ্জার, দুর্গাপুজোর সময়ে কেন প্রথমে সেখানেই ছুটে যেতে হয়?

Durga Puja Special: দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে কেন যৌনপল্লীর মাটিই প্রয়োজন হয়?
যৌনপল্লীর মাটি ছাড়া কেন দুর্গা প্রতিমা তৈরি হয়না? Image Credit source: Chung Sung-Jun/Getty Images, Jayati Saha/Moment/Getty Images

Sep 30, 2024 | 4:38 PM

সমাজের কাছে চিরকাল অবহেলিত। একবার তাঁদের পাড়ায় গেলে মান যায় ভদ্রপরিবারের ছেলেদের। সেই পাড়ার মহিলাও বঞ্চিত সমাজ থেকে। অথচ জগতের কি অদ্ভুত নিয়ম! তাঁদের ছাড়া অসম্পূর্ণ বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। যৌন পল্লীর মাটি ছাড়া তৈরিই হবে না উমার মূর্তি। বহু যুগ ধরেই চলে আসছে এই নিয়ম। একটা সময় ব্রাহ্মণরা নিজে গিয়ে মন্ত্র পাঠ করে মাতৃ নির্মাণের জন্য নিয়ে আসতেন সেই মাটি। কিন্তু কেন এই প্রথা? সারাটা বছর যেখানে যাওয়া সমাজের কাছে লজ্জার, দুর্গাপুজোর সময়ে কেন প্রথমে সেখানেই ছুটে যেতে হয়?

এই প্রথার পিছনে নানা যুক্তি রয়েছে। মনে করা হয় একবার কোনও পুরুষ এই বেশ্যালয়ে গেলে, যৌনকর্মীর বাড়ির দরজায় পুরুষেরা নিজেদের সারা জীবনে সঞ্চিত সব পুণ্য বিসর্জন দিয়ে আসে। শাস্ত্রমতে সে কারণেই বেশ্যালয়ের মাটি হয়ে ওঠে পবিত্র। আর তাই সেই পবিত্র মাটি দিয়েই গড়া হয় উমাকে।

এই বিষয়ে অন্য মতও রয়েছে। শাস্ত্র মতে অসুরদলনী দুর্গা আদ্যাশক্তি মহামায়ার আরেক রূপ। মহামায়া ৯ রূপে পূজিত হন এই বিশ্বে। এই ৯ রূপ হল নর্তকী, কাপালিকা, ধোপানী, নাপিতানী, ব্রাহ্মণী, শূদ্রাণী, গোয়ালিনী, মালিনী ও পতিতা। খেয়াল করে দেখলেই বোঝা যায় এই ৯ রূপ সমাজের নানা জাত, বর্ণের প্রতীক। উচ্চ বর্ণ থেকে নিম্ন বর্ণ সবই রয়েছে এই ৯ রূপে। এঁদের মধ্যে মায়ের নবম রূপ ‘পতিতা’, যৌনপল্লীর মহিলাদেরই প্রতীক। সেই থেকেও এই প্রথার শুরু বলে মনে করেন অনেকে।

কেউ কেউ মনে করেন পুরাণের প্রভাব র‍য়েছে এই প্রথার শুরুর পিছনে। পুরাণ মতে ঋষি বিশ্বামিত্র একবার ইন্দ্রত্ব লাভের জন্য কঠোর তপস্যায় মগ্ন ছিলেন। দেবরাজ ইন্দ্র সেই তপস্যার ভঙ্গের বহু চেষ্টা করেও ধ্যান ভাঙতে পারেননি। শেষে স্বর্গের অপ্সরা মেনকাকে ঋষি বিশ্বামিত্রের ধ্যান ভঙ্গ করতে মর্তে পাঠান দেবরাজ। পুরাণের এই কাহিনীরও তাৎপর্য রয়েছে বলে মত অনেকেরই।

আসলে সমগ্র নারী শক্তির প্রতিনিধি দেবী দুর্গা। জাতি, বর্ণ, শ্রেণী নির্বিশেষে সনাতনী শক্তির প্রতীক তিনি। যিনি সমাজের অসুর দমন করেন তিনিই দেবী দুর্গা। তাই অনেকের মতে সকল স্তরের নারী শক্তিকে সম্মান জানাতেই এই প্রথার শুরু হয়েছিল।