
আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে প্রতিবছর দুর্গাপুজো পালিত হয়। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত ধুমধাম করে পালিত হয় বাঙালির সেরা ও জনপ্রিয় পুজো। শুরু হয়ে গিয়েছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ পুজো, দুর্গাপুজো। আজ মহাসপ্তমী। ভোর সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে সপ্তমী পুজোর বীধি-রীতি। নবপত্রিকা স্নান দিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজো। এই নবপত্রিকাকে অনেকে গণেশের কলাবউ হিসেবে মনে করে থাকেন। আবার ভেবে থাকেন নবপত্রিকা মানে নয়টি পাতা। এর মধ্যে কোনওটিই ঠিক নয়।
নয়টি উদ্ভিদের কাণ্ড বা মূল দিয়ে কলাগাছে বেঁধে দেওয়া হয়। এই নবপত্রিকার সঙ্গে বাঁধা হয় শ্বেত অপরাজিতা ফুলের গাছকেও। এই বন্ধনের সঙ্গেও রয়েছে দেবী মহামায়ার নিবিড় যোগ। দুর্গার ও মহাদেবের খুব পছন্দের ফুল হল অপরাজিতা ও জবা ফুল। সাধারণত দুই ধরণের অপরাজিতা ফুল দেখা যায়। একটি হল নীল , অপরটি হল সাদা। নীল রঙের অপরাজিতা ফুল মহাদেবের খুব প্রিয়। তাই একে নীলকণ্ঠও বলা হয়। অন্যদিকে দেবী দুর্গার সাদা বা শ্বেত অপরাজিতা খুব প্রিয়। দশমীর দিন অপরাজিতা নামে একটি আলাদা ও বিশেষ পুজো পর্ব রয়েছে। শুধু ফুল নয়, অপরাজিতা ফুলের লতাও পুজোর একটি অঙ্গ। এই লতা নবপত্রিকাকে শক্ত করে বেঁধে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অনেক পুজোয় অপরাজিতা ফুলের লতা ছাড়াও হলুদ রঙের সুতো ব্যবহার করে থাকেন। সেই হলুদ সুতোও নবপত্রিকাতে বেঁধে দেওয়া হয়। হলুদ রঙ হল হিন্দু ধর্মের অত্যন্ত পবিত্র ও মঙ্গতলকামনার প্রতীক। তাই শুভ কাজে হলুদের ব্যবহার দেখা যায়।
অপরাজিতা পুজো হল দুর্গা পুজোর একটি বড় অংশ। দেবী মহামায়ার অপর নামই হল অপরাজিতা। এই দেবী চতুর্ভুজা, গায়ের রঙ নীল, ত্রিনয়নী ও চন্দ্রকলা। দশমীর দিন বিসর্জনের পর পুজো মণ্ডপের ঈশানকোণে অষ্টদল পদ্ম অঙ্কন করে মহামায়ার পুজো সমাপ্ত করা হয়। এই অপরাজিতা পুজো ছাড়া দেবী দুর্গার পুজো করা অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়।