কলকাতা: রাজ্য টেবল টেনিস পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন। পুরুষ এবং মহিলা বিভাগে খেতাব জিতলেন অঙ্কুর ভট্টাচার্য এবং মৌমিতা দত্ত। প্রয়াত দ্রোনাচার্য কোচ জয়ন্ত পুশিলালের স্মৃতিতে এবারের রাজ্য প্রতিযোগিতা। প্রায় ১৭০০ খেলোয়াড় এ বারের রাজ্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। উত্তর কলকাতা টেবল টেনিস সংস্থার আয়োজনে বড়বাজার যুবক সংঘে বেঙ্গল স্টেট টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের ষষ্ঠ রাজ্য টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হল। অনির্বান ঘোষকে পিছনে ফেলে প্রথমবার সিনিয়র পর্যায়ে রাজ্য খেতাব জিতলেন অঙ্কুর ভট্টাচার্য।
জ্বর নিয়ে খেলতে নেমে দুটো গেম খেলার পর অসুস্থ বোধ করেন অনির্বান। বাধ্য হয়েই ওয়াকওভার দিয়ে দেন। এ বছর রাজ্য টিটিতে দ্বিমুকুট অঙ্কুরের। হাওড়াকে দলগত ভাবে সাফল্য উপহার দেওয়ার পর অনুর্ধ্ব ১৯ এবং পুরুষ বিভাগের খেতাব জিতলেন অঙ্কুর। জাতীয় এবং আর্ন্তজাতিক প্রতিযোগিতায় নিয়মিত সাফল্য পাচ্ছেন তিনি। এ বার রাজ্য টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার সিনিয়র বিভাগের খেতাব জিতলেন। অঙ্কুর বললেন, ‘সর্বভারতীয় পর্যায়ে যে টুর্নামেন্টগুলো আছে, তা সর্বস্ব দিয়ে খেলব। আমার পাখির চোখ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে চাই নিয়মিত।’ ইতালিতে খেলতে যাওয়ার কথা থাকলেও ভিসা সমস্যায় যেতে পারেননি। সেই আক্ষেপ যেন দ্বিমুকুট জিতে মেটালেন প্রাক্তন টিটি প্লেয়ার অংশুমান ভট্টাচার্যের ছেলে অঙ্কুর।
রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপের আসরে বয়স ভিত্তিক প্রতিযোগিতার সব ক’টি বিভাগে আগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মৌমিতা দত্ত। সিনিয়র পর্যায়ের রাজ্য খেতাবটা অধরা ছিল। চার বছর পরে রাজ্য টিটিতে অংশ নিয়ে সেই আক্ষেপ মেটালেন মৌমিতা। তাঁর কথায়,’চার বছর আগে শেষবার রাজ্য টিটিতে নেমেছি। এবার প্রায় বিনা প্রস্তুতিতে খেলতে নেমেছিলাম। চ্যাম্পিয়ন হব, ভাবিনি। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়ে অবশ্যই খুশি। পরাজিত হলেও আলোলিকা ভালো খেলেছে।’ ফাইনালে বেঙ্গল টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমীর আলোলিকা সেনকে ৪-০ব্যবধানে পরাজিত করেন মৌমিতা।
অনুর্ধ্ব ১৯ মেয়েদের বিভাগে খেতাব উত্তর ২৪পরগনার দিৎসা রায়ের। তিনি ফাইনালে পূর্ব কলকাতার আরুষী নন্দীকে ৪-০ ব্যবধানে পরাজিত করেন। অনুর্ধ্ব ১৭ বালকদের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কলকাতার পুনীত বিশ্বাস। ফাইনালে তিনি হাওড়ার প্রত্যুষ মণ্ডলকে ৩-১ ব্যবধানে পরাজিত করেন। মেয়েদের এই বিভাগের খেতাব অভিষা কর্মকারের। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার অভিষা ৩-১ ব্যবধানে উত্তর চব্বিশ পরগনার শুভাঙ্কৃতা দত্তকে পরাজিত করেন। সদ্য চোট সারিয়ে কোর্টে ফিরেছেন। শুভাঙ্কৃতা ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপে।
অনুর্ধ্ব ১৫ ছেলে এবং মেয়েদের বিভাগে খেতাব শ্রেষ্ঠ চক্রবর্তী ও আরোহী রায়ের। উত্তর চব্বিশ পরগনার শ্রেষ্ঠ এবং আরোহী ফাইনালে পরাজিত করেছেন হুগলির ঈশান কুমার রাই ও উত্তর কলকাতার প্রজ্ঞানস্বা পাত্রকে। অনুর্ধ ১৩ বালক বিভাগে খেতাব উত্তর কলকাতার সৌসূর্য্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফাইনালে ৩-২ ব্যবধানে হেরে যান ঈশান চট্টোপাধ্যায়। এই বিভাগে বালিকাদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কলকাতার সাতুর্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ৩-১ ব্যবধানে পূর্ব কলকাতার সারিকা শাহিদকে পরাজিত করেন। অনুর্ধ্ব ১১ বিভাগে বালকদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন আরিভ দত্ত। রানার্স শুভম অধিকারী। উত্তর ২৪পরগনার দুই প্যাডলারের ফাইনাল ম্যাচের ফল ৩-০। বালিকাদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন উত্তর কলকাতার অক্ষ্মিতা মাহাতো। তিনি শিলিগুড়ির রিপর্না সাহাকে ৩-১ব্যবধানে পরাজিত করেন। সফল প্যাডলারদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিএসটিটিএ প্রেসিডেন্ট স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, যুগ্মসচিব শর্মি সেনগুপ্ত। এবং প্রাক্তন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ও বর্তমানে ভারতীয় জাতীয় দলের মেয়েদের কোচ সৌরভ চক্রবর্তী।