
প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে তাঁর বোলিং পারফরম্যান্স চোখ ধাঁধানো। বাংলার পেসার আকাশ দীপ ব্যক্তিগত জীবনে নানা লড়াই করে উঠে এসেছেন। অবশেষে জাতীয় দলেও সুযোগ মেলে। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তাঁর। নিয়মিত হয়ে উঠতে পেরেছিলেন তা নয়। স্কোয়াডে থাকলে একাদশে জায়গা নিশ্চিত ছিল না। তবে ইংল্য়ান্ডের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে যতটা সুযোগ পেয়েছেন, কাজে লাগিয়েছেন। চোটের কারণে ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে পাওয়া যায়নি তাঁকে। ওভালে বল হাতে নিয়েছেন এক উইকেট। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে কামাল করলেন। ৭০ বলে কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি।
ভারতের ২২৪ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৪৭ করেছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে লোকেশ রাহুলের উইকেট হারিয়ে সাময়িক চাপে পড়েছিল ভারত। তবে যশস্বী জয়সওয়ালের বিধ্বংসী ব্যাটিং। সাই সুদর্শনের সঙ্গে দুর্দান্ত একটা জুটি গড়েন। কিন্তু দিনের খেলার শেষ দিকে সাই সুদর্শন আউট। নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে পাঠানো হয় আকাশ দীপকে। দিনের খেলা অবধি যাতে স্পেশালিস্ট ব্যাটার অর্থাৎ ক্যাপ্টেন শুভমন গিলকে না নামতে হয়, সে কারণেই পাঠানো। তবে তিনি ওভালে দর্শকদের, ভারতীয় ড্রেসিংরুমে এত আনন্দ দেবেন, সেটা হয়তো কেউ প্রত্য়াশাও করেননি।
ম্যাচের তৃতীয় দিন ক্যাপ্টেন শুভমন গিলও রেডি ব্যাটিংয়ের জন্য়। নাইট ওয়াচম্যানের উপর ভরসা কতটাই বা থাকে। কিন্তু আকাশ দীপ ক্যাপ্টেনের অপেক্ষা বাড়ালেন। যশস্বীর সঙ্গে দুর্দান্ত একটা জুটি গড়লেন। সেটা শুধু ডিফেন্স করে নয়। একের পর এক দুর্দান্ত শট। ব্রিসবেনে ৩১ রানের একটা ইনিংস খেলেছিলেন। টেস্টে সেটিই ছিল তাঁর সর্বাধিক স্কোর। প্রথম শ্রেনির কেরিয়ারে একটি হাফসেঞ্চুরিও ছিল। সেটি ছিল ৫৩ রানের ইনিংস। এদিন বাউন্ডারি মেরে ৭০ বলে কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি পেরোন। হেলমেট খোলেননি। ক্রিজে থাকতে চেয়েছিলেন। সেটাও করে দেখান। অবশেষে ৬৬ রানে বডিলাইন শর্ট পিচ ডেলিভারিতে আউট আকাশ দীপ।
দীপের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ হতেই তিনি যেমন সেলিব্রেশনে মেতেছিলেন, ড্রেসিংরুম থেকে সকলেই প্রায় বেরিয়ে আসেন। শুভমন গিল সহ বাকি সতীর্থরা দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছিলেন। কোচ গৌতম গম্ভীরের মুখে হাসি। দুর্দান্ত একটা ইনিংস। কোনও স্পেশালিস্ট ব্য়াটারের ট্রিপল সেঞ্চুরির সঙ্গেও তুলনা করা যায় এই ইনিংসকে।