মুম্বই : ভারতীয় ক্রিকেট এখন আর মেট্রো শহর কেন্দ্রিক নয়। অনেক তথাকথিত অচেনা, অজানা কিংবা ছোট শহর থেকেও অনবদ্য প্রতিভা উঠে আসছে। অতীতেও এমন অনেক ক্রিকেটার এসেছেন। আগের চেয়ে এই সংখ্য়াটা এখন তুলনামূলক বেশি। অনেক ক্ষেত্রেই এই ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সমস্য়া হয়ে দাঁড়ায় ভাষা। আন্তর্জাতিক স্তরে খেলার ক্ষেত্রে ইংরেজি জানাটা বাধ্যতামূলক না হলেও জরুরি। অনেক সময় এই জায়গায় সমস্য়ায় পড়েছেন তথাকথিত ছোট শহর থেকে উঠে আসা ক্রিকেটাররা। বিদেশি কোচ থাকলে অনেক সময়ই বোঝাপড়া একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্রেফ ইংরেজির জন্য। ভাষা কখনোই শিক্ষাগত যোগ্যতার পরিচয় নয়, তবে জনসংযোগের জন্য অবশ্যই জরুরি। ভারতীয় বোর্ডও এই বিষয়টি বহু আগেই বুঝেছে। অনেক ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, জাতীয় দলে ঢোকার সময় ইংরেজিটা খুব ভালো বলতে পারতেন না। কিন্তু কয়েকটা মাস বা বছর ঘুরতেই সংস্লিষ্ট ক্রিকেটারের জড়তা কেটেছে। কী এর রহস্য়? বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই সংযোগের এই অভাবটা চিহ্নিত করেছিল ভারতীয় বোর্ড। রাহুল দ্রাবিড় জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির দায়িত্ব নেওয়ার পর এই বাস্তবায়ন অনেক বেশি হয়েছে। বয়স ভিত্তিক স্তরেও যে ক্রিকেটাররা জাতীয় দলে সুযোগ পেতেন, তাদের ভবিষ্যতের জন্য তৈরির ক্ষেত্রে নানা বিষয়ে নজর দেওয়া হত। এখনও সেটা হয়ে থাকে। তার মধ্য়ে অন্যতম ইংরেজি ভাষায় দখল। ভারতীয় ক্রিকেট মানচিত্র এবং বিশ্ব ক্রিকেটে রাঁচি কখনোই পরিচিত ছিল না। এখন ক্রিকেটের নিরিখে রাঁচি প্রসঙ্গে কথা বলতে গেলেই প্রথম নাম উঠে আসবে দেশের সর্বকালের অন্য়তম সেরা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির কথা। যখন জাতীয় দলে সুযোগ পান, ভাঙাচোরা ইংরেজিতে কথা বলতেন ধোনি। শুরুর দিকে খুব পার্থক্য না গড়লেও অধিনায়ক হওয়ার পর ধোনি নিজেও হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন, জনসংযোগ বাড়াতে ইংরেজিটা আরও ভালো করতে হবে। পরবর্তীতে প্রেস কনফারেন্স কিংবা ধারাভাষ্য়কারদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ধোনির সেই পরিবর্তন ভালো ভাবেই ধরা পড়েছে। জাতীয় দলে আরও অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়েছে। উমেশ যাদব, মহম্মদ সামি কিংবা হার্দিক পান্ডিয়ার কথাই ধরা যাক। কিংবা লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল।
শুধুই কি এই জেনারেশন? একদমই নয়। ভারতের প্রথম বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কপিল দেবও কিন্তু ইংরেজিতে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন না, এখনও নন। দেশের বাইরে সাংবাদিক সম্মেলনে করতে অনেক বেশি সমস্য়ায় পড়তে হত। তবে ভারতীয় বোর্ডের এই ইতিবাচক দিক নতুন প্রজন্মের মুশকিল আসান করেছে। বর্তমান ভারতীয় দলে বেশিরভাগ ক্রিকেটারই শিক্ষাগত দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। তবে কে কোন শহর থেকে আসছে, সেটা বড় কথা নয়। তাঁর মধ্যে প্রতিভা এবং শেখার ইচ্ছে কিংবা তাগিদ থাকলে, খেলার দিক থেকে যেমন উন্নতি হবে, তেমনই ভাষা ও জনসংযোগের ক্ষেত্রেও। ভারতীয় বোর্ড সেই উদ্যোগই নিয়েছে ইংরেজি শেখানোর মাধ্যমে।