
কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়: এই তো এক বছর আগের কথা। তখনও জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। টেস্টে তখনও পর্যন্ত বঙ্গ উইকেটকিপারের উপর ভরসা রাখতেই হত টিম ম্যানেজমেন্টকে। ঋষভ পন্থ জায়গা দখল করে নিলেও, টেস্টে দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে তখনও ছিলেন শিলিগুড়ির পাপালি। আচমকাই ঋদ্ধির ক্রিকেটজীবনে নেমে আসে ‘অন্ধকার’। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দল থেকে বাদ দেওয়া হয় ঋদ্ধিকে। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও সুযোগ পাননি পাপালি। অথচ ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘাড়ে ব্যথা নিয়েও দুরন্ত ৬১ রান করেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতের (Team India) হারা ম্যাচ বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন বঙ্গ কিপার। এরপর হঠাৎই জাতীয় দলে তিনি ব্রাত্য। এখন তিনি টিম ইন্ডিয়ার ভাবনা থেকে কয়েক আলোকবর্ষ দূরে সরে গিয়েছেন। বলা ভালো, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোচ দ্রাবিড়ের ভাবনা থেকে মুছে গিয়েছেন ঋদ্ধিমান। তবে বঙ্গ কিপারের দায়বদ্ধতা এখনও আগের মতোই। যে ‘দায়বদ্ধতা’ নিয়ে সিএবির এক কর্তা প্রশ্ন তোলায় অভিমানে বাংলা ছেড়েছিলেন ঋদ্ধি। বহাল তবিয়তেই সিএবিতে আছেন সেই কর্তা। নেওয়া হয়নি কোনও পদক্ষেপও। বিস্তারিত রইল TV9Bangla– র এই প্রতিবেদনে।
শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে বাদ পড়ার পরই তৎকালীন বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। সে দিন কালীঘাট ক্লাবের তাঁবুতে অনুশীলন শেষে একরাশ অভিমান ঝরে পড়েছিল পাপালির গলায়। ঋদ্ধি বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সময় দাদি (সৌরভ) আমাকে বলেছিল, যতদিন আমি আছি তোকে কিছু ভাবতে হবে না। দাদি যখন এমন আশ্বাস দিয়েছিল, পরের সিরিজে বাদ পড়লে অবাক তো হতেই হবে।’ একই সঙ্গে ঋদ্ধি বলেছিলেন, কোচ দ্রাবিড় তাঁকে বিকল্প কিছু ভাবতে বলেছেন। ঋদ্ধির সেই বিস্ফোরক মন্তব্যে ভারতীয় ক্রিকেট তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল। একরকম অন্যায় ভাবেই বাদ দেওয়া হয়েছিল পাপালিকে। দেশের হয়ে ৪০টি টেস্ট খেলা ঋদ্ধিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সিএবির এক কর্তাও। অভিমানে বাংলা ছেড়ে এখন ত্রিপুরায় খেলেন বঙ্গ কিপার।
আইপিএলে গুজরাট টাইটান্স দলের প্রথম পছন্দ অবশ্য ঋদ্ধিমানই। গত বছর আইপিএল জয়ের স্বাদ পেয়েছন। এ বারও গুজরাটের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। মঙ্গলবার আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের সামনে গুজরাট টাইটান্স। সব কিছু ছাপিয়ে ম্যাচের ক্যাচলাইন- সৌরভের দিল্লি বনাম ঋদ্ধির গুজরাট। এক বছর আগের ঘটনায় সৌরভ-ঋদ্ধি সম্পর্কের অদৃশ্য দ্বৈরথ অবশ্যই শুরু হয়েছে।
দিল্লি ক্যাপিটালসের ক্রিকেট ডিরেক্টর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মাঠে না থাকলেও, মাঠের বাইরে সৌরভের মস্তিষ্ক অবশ্যই রয়েছে এই দলের সঙ্গে। আর মাঠে নেমে ব্যাট হাতে জবাব দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ঋদ্ধিমান সাহার সামনে। বঙ্গ ক্রিকেটে পাপালির সঙ্গে যার দ্বৈরথ ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছিল, সেই অভিষেক পোড়েলকে দেখা যেতে পারে মঙ্গলবারের ম্যাচে। পন্থের বদলি হিসেবে দিল্লি শিবিরে সুযোগ পেয়েছন অভিষেক। প্রথম ম্যাচে সরফরাজ খান একেবারে ব্যর্থ। মঙ্গলবার দিল্লির জার্সিতে অভিষেক হতেই পারে চন্দননগরের ছেলের। সেক্ষেত্রে সৌরভ বনাম ঋদ্ধিমানের পাশাপাশি অভিষেক-ঋদ্ধিমান ডুয়েলও হয়ে উঠতে পারে ম্যাচের আকর্ষণ।