
কলকাতা: এক সময় আমরোহা থেকে ভাগ্যান্বেষণে এসেছিলেন মহম্মদ সামি নামের এক ছেলে। হাইকোর্ট, গ্রিয়ার, পুলিশ মাঠের রানআপে ছুটতেন। সময় লাগেনি ইডেনে পা রাখতে। স্বপ্নের উড়ান এখান থেকে সোজা নিয়ে গিয়েছে লর্ডস কিংবা মেলবোর্ন। ক্রাইস্টচার্চ অথবা জোহানেসবার্গে। স্কিপ্ট বড় চেনা। পরিশ্রম, তাগিদ, স্বপ্নও। সাহসও। সামির মতোই ময়দান আর ইডেনের ঘাস-মাটি থেকে উঠে এসেছেন আর এক পেস বোলার। যিনি এজবাস্টনে জিতিয়েছেন ভারতকে। ইংল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় টেস্টে শুভমন গিলের নতুন ভারত ১-১ করেছে সিরিজ।
সামির পর আকাশ দীপের উত্থান বলে দিচ্ছে, সাফল্য় আসে। এভাবেই আসে। কিন্তু প্রশ্নও যে রেখে যাচ্ছে! উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে সামি, আকাশরা সাফল্য পান। নিখাদ বাঙালি পান না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর হতে পারেন চেতলার এক ১৮ বছরের ছেলে। সদ্য সাবালক এই ছেলের কথা অনেকেই জানেন না। জানা নেই যে, আকাশ দীপের মতোই ইংল্যান্ড সফরে রয়েছেন যুধাজিৎ গুহও। অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় দলের হয়ে সদ্য ৫ টেস্টের ওয়ান ডে সিরিজ শেষ হয়েছে। তাতে কেমন পারফর্ম করলেন বাংলার যুধাজিৎ?
ভারত শেষ ওয়ান ডে ম্যাচে হেরেছে। সিরিজ ৩-২ জিতলেও পঞ্চম ওয়ান ডে-তে বৈভব সূর্যবংশীরা পারফর্ম করতে পারেননি। কিন্তু যুধাজিৎ ব্যাটে বলে দারুণ পারফর্ম করেছে। স্কোরবোর্ড বড়ই যান্ত্রিক। কাঠখোট্টা তথ্য পেশ করা ছাড়া আর কিছু করে না। কিন্তু ওই স্কোরবোর্ডে চোখ বোলালে দেখা যাবে, ভারত ২০০ পার করেছিল। এক সময় ১৩৫-৭এ ধুকছিল ছোটদের ভারত। কিন্তু অম্বরীশের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় নিয়ে যান। ৩৪ বলে ১০ রান করেছেন যুধাজিৎ। একটা দিক আঁকড়ে থেকে লড়াই করেছেন বাংলার ছেলে। বল হাতেও সফল। না, উইকেট মেলেনি। কিন্তু বিপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক ছক নিয়ে নেমেছিল। দেখে-শুনে খেলে দিয়েছিল যুধাজিৎকে। ৭ ওভারে ২৪ রান দিয়েছেন। ইকোনমি ৩.৪২। বাকি কেউই ধারেকাছে নেই যুধাজিতের।
৫ ম্য়াচের ওয়ান ডে সিরিজে খেলেছেন চারটেতে। উইকেট হয়তো খুব বেশি পাননি। কিন্তু নতুন বলে যেমন বোলিং শুরু করেছেন, পুরনো বলে আবার ডেথে বোলিং করেছেন। এই সফর যুধাজিতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১৯ থেকে পরবর্তী পর্বে পা রাখার জন্য এমন যুব সফর পরিণত করে তুলবে তাঁকে। ইংল্যান্ডের পরিবেশ, পিচ আরও খানিকটা এগিয়ে দেবে যুধাজিৎকে। বিলেতে সিরিজ জয় ভারতের ছোটদের, ব্যাটে-বলে লড়াই করলেন বাংলার উঠতি পেস বোলার যুধাজিৎ।