কলকাতা: সেই ১৯৮৯-৯০ মরসুমে রঞ্জি ট্রফি (Ranji Trophy) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলা (Bengal)। এরপর থেকে বেশকিছু ফাইনাল খেললেও ট্রফি আসেনি। এবার সেমিফাইনালে (Semi Final) বিদায়। হারের পাঁচ কারণ বাংলার রঞ্জি জয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Sambaran Banerjee) মুখে।
ব্যাটিং : কোয়ার্টার ফাইনালে বিশ্বরেকর্ড করেছে। ঐ ম্যাচের পর, মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে এই ব্যাটিং! বাংলা ৫৪-৫ হয়ে যাওয়ার পরই খেলা থেকে সরে গেছে। এটাই প্রথম কারণ।
একাদশ বাছাই: টিম বাছাইয়ে একটু গণ্ডগোল করে ফেলেছে। মধ্যপ্রদেশ কিন্তু একটা অফস্পিনার আরেকটা বাঁ হাতি স্পিনার খেলিয়েছে। যার জন্য ওদের বোলিংয়ে একটা বৈচিত্র ছিল। বাংলা দু’জন বাঁ হাতি স্পিনার খেলাতে গিয়ে টেকনিকাল ভুল করেছে। আমার মনে হয় অফস্পিনার-ব্যাটসম্যান, ঋত্বিক চ্যাটার্জিকে খেলালে ভালো হত। ঋত্বিক চ্যাটার্জিকে স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হয়েছে ও সাদা বলের খেলোয়াড়। সেটা আমি বিশ্বাস করি না। প্রদীপ্ত প্রামাণিককেও আমি ভালো করে চিনি। ওকে আমরা মিস ইউজ করেছি। ওর যখন আসল সময়, প্রজ্ঞান ওঝার জন্য ও খেলতে পারেনি। সেটা আমাদেরই ব্যর্থতা বলব। আরও কেন বলছি, অফস্পিনার নেওয়া উচিত ছিল, ওদের বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান হিমাংশু মন্ত্রী ১৬৫ রানের ইনিংস খেল গেল, আরও বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান ছিল। অফস্পিনার অবশ্যই খেলানো উচিত ছিল। আর ঋত্বিক অনেক ভালো ব্যাটসম্যান। সায়নশেখর মণ্ডলের বোলিং খুব সাধারণ মানের লেগেছে। আমি কোচ হলে ঋত্বিককে খেলাতাম। ব্যাটিং গভীরতা বাড়াতে গিয়ে বাংলা গণ্ডগোলটা করল। ৯ নম্বর অবধি, পিপি ব্যাট করে দেবে সেটা তো হয় না।
ওপেনিং জুটি : ভালো হত ওপেনার কৌশিক ঘোষকে খেলালে। অভিষেক রামন অত্যন্ত প্রেসার নিয়ে ফেলেছে। খুবই সাধারণ বলে আউট হয়েছে। প্রথম ইনিংসে তবু ধরলাম ফুটমার্কে পড়ে বল টার্ন করেছে। কিন্তু সেকেন্ড ইনিংসে একটা সাধারণ ডেলিভারিতে ব্যাটটা আগে বের করে দিয়েছে। ফর্মে থাকা কৌশিক ঘোষ খেললে হয়তো ভালো হত।
শট বাছাই : উইকেটে কোনও জুজু ছিল না। ওরা কিন্তু আমাদের তুলনায় অনেক ডিসিপ্লিন বোলিং করেছে। বিশেষ করে কার্তিকেয়। একটা শর্ট বল করেনি। ও পয়েন্ট ফিল্ডার ছাড়া বল করেছে। স্কোয়ার কাট খেলতেই দেয়নি। এটাই ক্লাস বোলিং। মধ্যপ্রদেশের পেস আক্রমণই হোক বা পুরো বোলিং, এমনকিছু আহামরি ছিল না। সেখানে মূল জায়গায় বাংলার পেসাররা সেরকম বোলিং করতে পারেনি। কিছুটা ভালো বোলিং করেছে মুকেশ। আর স্পিনার একমাত্র শাহবাজ ভালো করেছে। এই ম্যাচের যদি সেরা পারফর্মার বাছতে বলা হয়, আমি বলব শাহবাজ। মনোজ এবং শাহবাজ প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত খেলেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার জঘন্য ব্যাটিং, অনেকেই অতি জঘন্য শট বাছাই করেছে।
মূল সমস্যা মানসিক : সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলার সময় মানসিকভাবে শক্তিশালী থাকতে হবে। আমরা যে দিল্লির বিরুদ্ধে জিতেছিলাম, ওদের দলে তখন জাতীয় দলের ৬ জন ক্রিকেটার। কেঁপে গেলে চলবে না। এই দলের শরীরীভাষা দেখে মনে হল, প্রচুর চাপ নিয়ে ফেলেছে। মধ্যপ্রদেশ দলে কিন্তু কোনও স্টার ছিল না। ভেঙ্কটেশ আইয়ার, আবেশ খান জাতীয় দলে। ঈশ্বর পাণ্ডে, কুলদীপ সেনও ছিল না। ওরা কিন্তু কান্নাকাটি করেনি।