
কলকাতা: আর কোনও ক্ষীণ আশা কিংবা সম্ভাবনা নেই। ফল বেরিয়ে গিয়েছে। ফাইনালের ৪৮ ঘণ্টা আগে বাংলা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি বলেছিলেন, ‘একপেশে ম্য়াচ হবে’। তাঁর এটুকু কথা মিলে গেল। একপেশে ম্য়াচই হল। তবে এরপর যেটা যোগ করেছিলেন তা হল না। দাপট দেখানো দূর অস্ত, কোনওরকমে ইনিংসে হার এড়াল বাংলা। তিন বছর আগে রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল সৌরাষ্ট্র-বাংলা। রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বাংলাকে। ঘরের মাঠে প্রত্যাশার পাহাড়। অধিনায়কের আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য়। সব মিলিয়ে আশায় বেঁচেছিল বাংলা। সেই ১৯৮৯-৯০ মরসুমে শেষ বার রঞ্জি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সে বারও ঘরের মাঠে ফাইনাল ছিল। ৩৩ বছরের অপূর্ণ আশা, অপূর্ণই থেকে গেল। বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
কাপ এবং ঠোঁটের দূরত্ব নতুন নয় বাংলার। এর আগেও প্রত্যাশার বেলুন ফুলিয়েছে বাংলা। অনবদ্য় পারফরম্য়ান্সে নকআউটে পৌঁছেছে। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েক বার সেমিফাইনাল এবং ফাইনালেও পৌঁছেছে। কিন্তু ট্রফিটা তুলতে পারেনি। এ বারও মঞ্চ প্রস্তুত ছিল। গ্রিন টপ বানিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁদে ফেলার পরিকল্পনা। কিন্তু সেটাই যেন বুমেরাং হয়ে দাঁড়াল। বাংলার প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছিল মাত্র ১৭৪ রানেই। অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল বাংলার ব্য়াটিং। কিছুটা লড়াই করেছিলেন শাহবাজ আহমেদ ও অভিষেক পোড়েল। ফাইনালে লড়াই করার জন্য় এই রান যথেষ্ঠ নয়। এই পিচে ব্য়াটিং করার জন্য কতটা ধৈর্যের প্রয়োজন, সৌরাষ্ট্র ব্যাটাররা দেখিয়ে দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ৪০৪ রান করেছে তারা। বাংলার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ ২৪১ রানেই।
চ্য়াম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে এই নিয়ে পঞ্চম ফাইনাল খেলল বাংলা। অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হল। ঘরের মাঠে ফাইনালে ৯ উইকেটে হার বাংলার। ইনিংস হার এড়ানো সম্ভব হল বাংলার শেষ উইকেট জুটিতে। মুকেশ কুমার এবং ঈশান পোড়েল ৩৬ রান যোগ করেন। দিনের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। মনোজ-শাহবাজ জুটিতে ভরসা ছিল। এই জুটি প্রথম সেশনটা কাটিয়ে দিলে…। অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির কল, শাহবাজ উল্টোপ্রান্তে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিলেন। মনোজ শেষ মুহূর্তে মানা করলেও ততক্ষণে অনেকটা দেরী হয়ে গিয়েছিল। শাহবাজ রান আউট হতেই ইনিংস হারের ভ্রুকুটি বাংলা শিবিরে। কিছুক্ষণের মধ্যে আউট অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারিও। ইনিংস জয় ধরে নিয়ে সৌরাষ্ট্র রিজার্ভ বেঞ্চ মাঠে দৌড়নোর জন্য় প্রস্তুত ছিল। ক্য়ামেরা তাক করা ছিল সে দিকেই। মুকেশ কুমার এবং ঈশান পোড়েল জুটি অপেক্ষা বাড়ায় তাদের। এই জুটির ঝোড়ো ব্য়াটিংয়ে ১১ রানের লিড নেয় বাংলা। জুটিতে ৩৬ রান যোগ করে মুকেশ-ঈশান। সৌরাষ্ট্রর লক্ষ্য় দাঁড়ায় ১২ রান।
কিছুক্ষণের জন্য় হলেও বাংলাকে বিনোদন দিয়েছিল ঈশান পোড়েল-মুকেশ কুমার জুটি। ইনিংস হার এড়ানোটাও অনেক বড় জয়! দ্বিতীয় ইনিংসে খাতা খোলার আগেই সৌরাষ্ট্র ওপেনার জয় গোহিলকে ফেরান আকাশ দীপ। ১১ রানের পুঁজি নিয়ে বাংলার লড়াই ৩ ওভার।