দীপঙ্কর ঘোষাল : বাংলা বরাবরই দক্ষ কিপার তৈরি করে। ঋদ্ধিমান সাহা তার অন্যতম প্রমাণ। তাঁর কিছু ক্যাচ এখনও চোখের সামনে ভাসবে। তবে মঙ্গলবারের রাতটা বাংলার আর এক কিপার অভিষেক পোড়েলের। দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচ শেষ হল থ্রিলারে। হয়তো শেষ বল অবধি ম্যাচ পৌঁছতোই না! মুম্বইয়ের সামনে লক্ষ্য ছিল ১৭৩ রান। ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিষাণ যোগ করেন ৪৪ বলে ৭১ রান। দ্বিতীয় উইকেটে তিল ভার্মাকে নিয়ে ৫০ বলে রোহিতের জুটি ৬৮ রানের। মুম্বই শিবিরে জোড়া ধাক্কা দেন মুকেশ কুমার। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামানো হয়েছিল তাঁকে। শুরুতে প্রচুর রান আসে তাঁর ওভারে। তবে ১৬তম ওভারে পরপর তিলক ভার্মা, সূর্যকুমার যাদবের উইকেট নেন মুকেশ। তাতেও স্বস্তিতে ছিল না দিল্লি ক্যাপিটালস। কেন না, অর্ধশতরান করে ক্রিজে রয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। সবচেয়ে দামি উইকেট নিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। বোলারের চেয়েও উইকেটটি বলা ভালো কিপারের। অভিষেক পোড়েলের উইকেট। বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
মুম্বই ইনিংসের ১৭ম ওভার। বোলিংয়ে মুস্তাফিজুর। ওভার দ্য উইকেট বোলিং করছিলেন বাংলাদেশের এই বাঁ হাতি পেসার। লক্ষ্য ছিল ওয়াইড ইয়র্কার। এমনই একটা ডেলিভারি তাড়া করেছিলেন রোহিত শর্মা। ওয়াইড ইয়র্কার, রোহিতের ব্যাটের মাথা ছুঁয়ে কার্যত সেকেন্ড স্লিপে। ডান দিকে উড়ে এক হাতে ক্যাচ নেন অভিষেক পোড়েল। ব্যাটে বল লেগেছে কিনা, ক্যাচ ঠিক হয়েছে কিনা, তৃতীয় আম্পায়ার চেক করে আউটের সিদ্ধান্ত দেন। অভিষেক পোড়েলের এই ক্যাচেই ফের ম্যাচে ফিরেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। যদিও ফিল্ডিংই ডোবাল। শেষ ওভারে ৫ রানের লক্ষ্য নিয়েও হিমসিম অবস্থা ছিল মুম্বইয়ের। ওভারের প্রথম বলেই ক্যাচ মিস। শেষ বলে লক্ষ্য ছিল ২ রান। মিড অফের দিকে বল ঠেলে ২ রান নিতে দৌঁড়োন টিম ডেভিড। দিল্লি অধিনায়ক থ্রো করেন কিপার অভিষেক পোড়েলের দিকে। যদিও থ্রো ঠিক হয়নি, মাথার উচ্চতায় বল ধরেন অভিষেক। নয়তো ম্যাচ সুপার ওভারেও গড়াতে পারত।
অভিষেকের ক্যাচটিই ম্যাচের সেরা ক্যাচের পুরস্কার পেয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বারের আইপিএলে এখনও অবধি সেরা ক্যাচ বললেও অত্যুক্তি হয় না। ধারাভাষ্যকারদের প্রত্যেকেই প্রশংসায় ভরিয়ে দেন। অথচ আইপিএলের মানচিত্রেই ছিলেন না বাংলার এই তরুণ কিপার। ঋষভ পন্থ গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর চোট পাওয়ায় তাঁকে ট্রায়ালে ডাকে দিল্লি ক্যাপিটালস। শেষ মুহূর্তে স্কোয়াডে সুযোগ পান পন্থের জায়গায়। যদিও প্রথম চয়েস কিপার ছিলেন না। প্রথম ম্যাচে সরফরাজ খানকে কিপার হিসেবে খেলিয়েছিল দিল্লি। মেক শিফ্ট কিপার দিয়ে যে ঋষভ পন্থের অভাব ৩০ শতাংশও ঢাকা যাবে না, ভালো ভাবেই টের পেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। দ্বিতীয় ম্যাচ থেকেই অভিষেককে খেলানো হয়। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে এই ক্যাচটা শুধু আইপিএল নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেও অভিষেকের পরিচিতি তৈরি করবে।