বছর শেষে শোকের ছায়া ২২ গজে, প্রয়াত ময়দান কাঁপানো স্পিনার দীপঙ্কর সরকার
Dipankar Sarkar: প্রয়াত ময়দান কাঁপানো প্রাক্তন ক্রিকেটার দীপঙ্কর সরকার। আজ ৩০ ডিসেম্বর সকালে তাঁর দক্ষিণ কলকাতার বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দীপঙ্কর সরকার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। দীপঙ্কর সরকার আসলে ছিলেন লেগস্পিনার। তা হলেও, তিনি যখন স্ট্রেটার করতেন, তখন অফস্পিন করতেন। দীপঙ্কর সরকারের সারপ্রাইজই ছিল জোরে বল।

কলকাতা: না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন ময়দানে দাপিয়ে খেলা প্রাক্তন ক্রিকেটার দীপঙ্কর সরকার (Dipankar Sarkar)। আজ ৩০ ডিসেম্বর সকালে তাঁর দক্ষিণ কলকাতার বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দীপঙ্কর সরকার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। দীপঙ্কর সরকার আসলে ছিলেন লেগস্পিনার। তা হলেও, তিনি যখন স্ট্রেটার করতেন, তখন অফস্পিন করতেন। দীপঙ্কর সরকারের সারপ্রাইজই ছিল জোরে বল। আচমকা তিনি স্ট্রেটার দিয়ে প্রতিপক্ষ শিবিরের ব্যাটিং লাইন আপে কাঁপুনি ধরাতেন। তাঁর স্ট্রেটার সামলাতে সেই সময় হিমশিম খেতেন ঘরোয়া ক্রিকেটের তাবড় তাবড় ব্যাটাররা। ওই সময় সিনিয়র হিসেবে একাধিক জুনিয়রকে গাইড করেছেন দীপঙ্কর সরকার। সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ক্রিকেটারও সামনে থেকে তাঁকে দেখে অনেক কিছু শিখেছিলেন।
কলকাতা ময়দানে স্পিনার হিসেবে ছাপ ফেলেছিলেন দীপঙ্কর সরকার। দীর্ঘদিন ময়দানে ক্রিকেট খেলতেন। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের হয়ে ষাটের দশকের মধ্যভাগে এবং সত্তরের প্রথমভাগে তিনি দাপটের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছিলেন। ১৯৬৪-৬৫ থেকে ১৯৬৭-৬৮ সাল অবধি বাংলা এবং রেলওয়েজের হয়েও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেছেন তিনি। ২৮টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে দীপঙ্কর সরকার নিয়েছেন ৯৩টি উইকেট। এবং ব্যাট হাতে তাঁর এই ২৮ ম্যাচে অবদান ২৫৮ রান। দীপঙ্কর সরকারের কেরিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার ৭-৬৬। এ ছাড়াও তাঁর যে ইনিংস নিয়ে আলোচনা চলে তা হল, দিল্লিতে ইস্ট জোনের হয়ে নর্থ জোনের বিরুদ্ধে এক দলীপ ট্রফির ম্যাচ। সেখানে তিনি নর্থ জোনের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে হাফডজন উইকেট তুলে নেন দীপঙ্কর সরকার। দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ২টি উইকেট। সেই ম্যাচ ইস্ট জোন শেষ অবধি জিততে পারেনি। কিন্তু দীপঙ্কর সরকারের বোলিং নিয়ে রীতিমতো আলোচনা হয়েছিল।
দীপঙ্কর সরকারের প্রয়াণের খবর জানার পর স্মৃতির পাতা উল্টে বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “দীপঙ্করদা খুব ভালো লেগ স্পিন করত। আর মাঝে মাঝে হঠাৎ অফ স্পিনও করত। ওই সময় বেশ তাবড় তাবড় ব্যাটাররাও তা সামলাতে পারত না। ভারতের স্কুল টিমের হয়ে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফরে দীপঙ্করদা অনবদ্য পারফর্ম করেছিল। পরবর্তীতে কালীঘাট ও ইস্টবেঙ্গলে দাপটের সঙ্গে দীপঙ্করদা ক্রিকেট খেলেছিল। বাংলা এবং রেলওয়েজের হয়ে বেশ কয়েকবার রঞ্জি ট্রফিতেও খেলেছিল দীপঙ্করদা। বোলিং তো বটেই, দলের প্রয়োজনে ৌকার্যকরী ব্যাটারেদর দায়িত্বও পালন করতেন দীপঙ্করদা। আমার থেকে সিনিয়র ছিলেন, কিন্তু আমার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর সঙ্গে বেশ কিছু ম্যাচ খেলার। এক এক করে বহু বিখ্যাত বাঙালি ক্রিকেটার চলে যাচ্ছেন, বাংলার ক্রিকেটের ময়দানও খালি হয়ে যাচ্ছে। তাঁর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। দীপঙ্করদা যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করি।”





