সিডনি : বহু ব্যবহারে ক্লিশে একটা লাইন..। এ ভাবেও ফিরে আসা যায়। তবুও দীনেশ কার্তিকের ক্ষেত্রে এমনটাই বলতে হয়। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে ওয়ান ডে বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলে আর জায়গা হচ্ছিল না দীনেশ কার্তিকের। তাঁর নামের পাশে বসেছিল ‘প্রাক্তন’। ধারাভাষ্যও দেন। কে জানত, সেই দীনেশ কার্তিক অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup 2022) ফের দেশের হয়ে খেলবেন! দীনেশ কার্তিকের (Dinesh Karthik) বাবা কৃষ্ণ কুমারও একে মিরাকল হিসেবেই দেখছেন। বিশ্বকাপে ছেলের রূপকথা দেখতে সিডনি (Sydney) পাড়ি দিয়েছেন কার্তিকের বাবা-মা। দীনেশ কার্তিককে নিয়ে মিরাকলের বোধ হয় এটুকুই শেষ নয়। তাঁর বাবার মুখে এল আরও অনেক কাহিনী। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানালেন কৃষ্ণ কুমার। তার কিছু অংশ তুলে ধরল TV9Bangla।
দীনেশ কার্তিকের বাবা কৃষ্ণ কুমার থাকতেন কুয়েতে। ছেলে ক্রিকেটার হোক এমনটাই চাইতেন। তবে কুয়েতে সেটা সম্ভব ছিল না। তাই কার্তিককে চেন্নাইতে মাসির বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু ক্রিকেটের শুরু কীভাবে হবে! নিজে যখন চেন্নাই আসতেন, মাঠে এমনিই থ্রোডাউন দিতেন। যদি কোনও কোচের চোখে পড়ে…। যদি তাঁকে কোনও অ্যাকাডেমিতে দেওয়া যায়…। এত যদি-কিন্তুর মাঝেই স্থানীয় এক কোচ সুরেশ কুমারের নজরে পড়েন দীনেশ। তারপর অনেক ওঠা নামা। ৩৭ বছর বয়সেও ছেলে বিশ্বকাপ খেলছে এটাই যেন মিরাকল কৃষ্ণ কুমারের কাছে। বলছেন, ‘বিশ্বকাপেই ও দেশের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলবে কিনা জানা নেই। আমার কাছে- ৩৭ বছরেও ওকে বিশ্বকাপ খেলতে দেখাটাই মিরাকল। আগামী বছর দেশের মাটিতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপেও যদি খেলতে দেখি, তা আমাদের কাছে বাড়তি পাওনা হবে। আমি বাস্তববাদী। এটুকু বুঝতে পারছি, এই বিশ্বকাপের পর কী হবে। সে কারণেই ওর খেলা দেখতে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছি।’
দীনেশ কার্তিকের ছোট ভাই বীনেশ সিডনিতে এমবিএ করছেন। ফলে এ বার যেন বিশ্বকাপের সৌজন্যে পরিবারের পুনর্মিলনও হচ্ছে সিডনিতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দীনেশের খেলা মাঠে গিয়ে দেখার সুযোগ হয়নি। অবশ্য সেই ম্যাচে হতাশই হতেন। কৃষ্ণ কুমার কুমার বলেন, ‘ওর মা প্রার্থনা করছিল। জেতার খবর পাওয়ার পরই আমি টিভি অন করি। এরকম হাই প্রেসার ম্যাচ দেখা খুব কঠিন। বিশেষত, যেখানে আমাদের ছেলে খেলছে। এ কারণে অনেক ম্যাচই আমরা দেখি না।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় দীনেশ কার্তিকের একটি মন্তব্য ঝড় তুলেছে। তাঁকে ‘বাঁচানোর’ জন্য রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কার্তিক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে পঞ্চম বলে আউট হন কার্তিক। অশ্বিনের ব্যাটে জয়ের রান আসে। ম্যাচটা হারলে সমালোচনার মুখে পড়তেন কার্তিক। হয়তো সে কারণেই অশ্বিনকে এই ধন্যাবাদ জানানো। দীনেশ কার্তিকের বাবা কৃষ্ণ কুমারকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে, হেসে বলেন, ‘ও আমাদের কাছেও এর কারণ প্রকাশ করেনি।’