Titas Sadhu: ঘরে ফিরেও ফুরসৎ নেই, তিতাসকে ঘিরে উচ্ছ্বাসে ভেসে আট থেকে আশি
ICC U19 WC: এখন থেকেই অনেকে তিতাসকে পরবর্তী 'ঝুলন গোস্বামী' হিসেবে দেখছেন। তিতাসের পরিষ্কার জবাব, 'তাঁর সঙ্গে তুলনায় আসাটাই আমার কাছে বিশাল ব্য়াপার। তবে ওনার মতো হতে গেলে আমাকে অনেক দূর যেতে হবে।'
কলকাতা : কয়েকটা দিন আগের কথা। মেয়েদের উদ্বোধনী অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ চ্য়াম্পিয়ন হয়েছে ভারত। মেয়েদের ক্রিকেটে প্রথম আইসিসি ট্রফি। একদিন মঙ্গল বার রাতে দেশে ফিরেছেন বিশ্বজয়ীরা। তবে ঘরে ফেরা হয়নি। বুধবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে সংবর্ধনার ব্য়বস্থা করা হয়। আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ভারত-নিউজিল্য়ান্ড তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শুরুর আগে সংবর্ধিত করা হয় বিশ্বজয়ী দলকে। ছিলেন ৮৩-এর বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য় তথা বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনি, মাস্টারব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর। অবশেষে এ দিন ঘরে ফিরলেন বাংলার বিশ্বজয়ী কন্য়ারা। রিচা ঘোষ অবশ্য আসেননি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় যাচ্ছেন সিনিয়র দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে। বিশ্বজয়ী দলের বাকি দুই সদস্য চুঁচুড়ার তিতাস সাধু এবং হাওড়ার হৃষিতা বসু ঘরে ফিরলেন। বিশ্বজয় করে ফিরল ঘরের মেয়ে,চুঁচুড়ায় উচ্ছাস উন্মাদনা তিতাসকে ঘিরে। বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
দমদম বিমানবন্দরে প্রবেশের পর থেকেই বেশ ধকল যাচ্ছে তিতাসের। বিশ্বজয়ীদের সঙ্গে কথা বলা, একটা ছবি তোলার সুযোগ কেই বা ছাড়তে চায়। ঘরে ফিরেও ফুরসৎ নেই তিতাসের। দমদমে নেমেই তিতাস যান রাজারহাটে। কোচ প্রিয়ঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন এবং ফাইনালে জেতা ম্যাচের সেরার পুরস্কার তুলে দেন কোচের হাতে। এর পর চুঁচুড়ার বাড়িতে পৌঁছে যান তিতাস। বড় রাস্তায় গাড়ি থেকে নেমে সরু গলিতে কয়েক মিটারের দূরত্বে বাড়ি। এর মধ্যেই ঘিরে ধরেছেন কচিকাঁচারা। তিতাস দিদির সঙ্গে ছবি তোলার আবদার। তিতাসও তাদের নিরাশ করেননি। ঠাকুমা তৃপ্তি সাধুর আর্শিবাদ এবং আলিঙ্গনের পরই বাড়ি ঢুকে পড়েন বিশ্বজয়ী পেসার।
সন্ধেটাও কাটল ব্যস্ততায়। দীর্ঘ দিন পর মায়ের হাতের রান্না খাওয়ার সুযোগ হয়েছে, চিকেন-ভাতে লাঞ্চ সেরে সন্ধ্যায় বাবার সঙ্গে স্থানীয় ক্লাবে বেরোন তিতাস। মাঠে যাবার পথে একটি চায়ের দোকানেও ঢোকেন। কাঁচের বয়াম থেকে তুলে নেন ‘লম্বু’ বিস্কুট। দক্ষিণ আফ্রিকায় এই প্রিয় বিস্কুট মেলেনি। হাতের কাছে পেয়ে অবহেলা করেনই বা কী করে! বিস্কুট হাতেই মাঠে প্রবেশ বিশ্বকাপ জয়ী দলের পেসার তিতাসের। রাজেন্দ্র স্মৃতি সংঘের এই মাঠেই তাঁর বেরে ওঠা। যাদের সঙ্গে সারা বছর প্র্যাকটিস করেন, চেনা মাঠে এক রাশ স্বস্তি নিয়ে ফিরলেন। সকলেই তাঁকে গার্ড অব অনার দেন। খুদে ক্রিকেটারদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাদের অভিভাবকেরাও। বিশ্বজয়ী ক্রিকেটারের সঙ্গে ছবি তোলার অহরহ আবদার আসে, হাসিমুখেই তা মেটান তিতাস।
তিতাসের বাবা রনদীপ সাধু বলেন, ‘বিমান বন্দর থেকে কোচের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। প্রাইজগুলো দেখিয়েছে। আমার কাছে ওটাই সেরা মুহূর্ত। সামনে বোর্ডের ইন্টার জোনাল টুর্নামেন্ট রয়েছে। দলে সুযোগ পেতে পারে, ইন্টারভিউ চলছে। কদিন বাড়িতে থাকবে জানি না।’ আর গর্বিত মেয়ে তিতাস বলছেন, ‘বাবার মুখে হাসিটা দেখে গর্বের ব্য়াপার।’ পরবর্তী লক্ষ্য! ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো পারফরম্য়ান্স, আইপিএলে সুযোগ এবং তারপর সিনিয়র দল। রাস্তা কতটা দীর্ঘ জানা নেই তিতাসের। তাঁর একটাই মন্ত্র এবং ‘তিতাস’ হতে চাওয়া বাকিদের জন্যও বার্তা, পরিশ্রম করে যেতে হবে।
এখন থেকেই অনেকে তিতাসকে পরবর্তী ‘ঝুলন গোস্বামী’ হিসেবে দেখছেন। তিতাসের পরিষ্কার জবাব, ‘তাঁর সঙ্গে তুলনায় আসাটাই আমার কাছে বিশাল ব্য়াপার। তবে ওনার মতো হতে গেলে আমাকে অনেক দূর যেতে হবে।’