
মঞ্চ রেডি ছিল টিম ইন্ডিয়ার। আর ব্যক্তিগত দিক থেকে নিঃসন্দেহে কিং কোহলির। ওডিআই কেরিয়ারে পঞ্চাশতম সেঞ্চুরি। স্ট্যান্ডে হাত তালি দিচ্ছেন খোদ মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর। তাঁর রেকর্ডই তো ভেঙেছেন! সচিন যে সঠিক মানুষের হাতে ব্যাটন দিয়েছিলেন, বিরাট বারবার সেটা প্রমাণ করছেন। সেঞ্চুরির পর সচিনের প্রতি নতজানু হয়ে সম্মান। আহা। ক্রিকেট ঈশ্বরকে সেরা উপহার কিং কোহলির। ম্যাচের প্রথম অংশটা যদি বিরাট কোহলির হয়, দ্বিতীয়ার্ধটা নিঃসন্দেহে মহম্মদ সামির। সেমিফাইনালের মঞ্চে সাত উইকেট! চাপের মুখে এই বোলিংটা না হলে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ভারতের জয়ের ব্যবধানটা ৭০ রানের হত না। এ বারের বিশ্বকাপে মাত্র ৬ ম্যাচ খেলেছেন সামি। তাতেই ২৩ উইকেট। সাত সাফল্যের রহস্য কী? ম্যাচের সেরা সামি যা বললেন, বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
বোর্ডে ৩৯৭ রান। তারপরও একটা সময় ভারতকে চাপে দেখিয়েছে। মনে হচ্ছিল, নিউজিল্যান্ড অবিশ্বাস্য রান তাড়ায় সফল হবে না তো! ড্যারেল মিচেল ওয়াংখেড়ের সেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল হয়ে উঠবেন না তো! এমন নানা আশঙ্কার মাঝেই সামির সাত। ম্যাচের সেরা বলছেন, ‘আমরা অনেকেই বোলিংয়ে বৈচিত্র নিয়ে কথা বলি। তবে আমি এখনও বিশ্বাস করি, নতুন বলে ফুল-লেন্থ ডেলিভারিতেও উইকেট নেওয়া যায়। পরের দিকে মূল ফোকাস ছিল গতি কমিয়ে দেওয়ায়। ওরা যে বড় শট খেলতে চাইবে সেটাই তো স্বাভাবিক! এমন পরিস্থিতিতে, বলের গতি কম থাকলে উইকেট নেওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।’
বিশাল রান তাড়ায় বড় শট খেলা ছাড়া অপশনই বা কী! কিউয়ি ব্যাটাররা সেটাই চেষ্টা করেন। আর সামি সেই সুযোগই কাজে লাগান। সেমিফাইনালে ৫৭ রান দিয়ে ৭ উইকেট। একই সঙ্গে বিশ্বকাপের মঞ্চে মাত্র ১৭ ম্যাচেই উইকেটের হাফসেঞ্চুরিও পার করেন। সামি কিন্তু বলছেন, একটা সময় টিম চাপে ছিল! জয়ের নায়কের কথায়, ‘ব্যাটিংয়ের জন্য পিচ খুবই ভালো ছিল। বিকেলের দিকে প্রচুর রানও উঠেছে। আমাদের মধ্যে শিশিরের ভয়ও ছিল। পিচে কোনও ঘাস ছিল না। শিশির পড়লে বল স্কিড করত, ব্যাটারদের শট খেলতে আরও সুবিধা হত।’
লিগ পর্বে বাংলাদেশ ম্যাচে চোট পান হার্দিক পান্ডিয়া। প্রাথমিক ভাবে পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্রাম দেওয়া হয় হার্দিককে। ভারতের একাদশে জোড়া বদল হয়। শার্দূল ও হার্দিকের পরিবর্তে আনা হয় সূর্য এবং সামিকে। পরে পুরো টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যান হার্দিক। প্রত্যাবর্তনে প্রথম ম্যাচেই পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন সামি। এ বারের বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচ খেলে তিনটিতেই পাঁচ কিংবা তার বেশি উইকেট! সামি বলছেন, ‘সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। গত কয়েক মাসে সেই অর্থে সাদা-বলের ক্রিকেট খুব বেশি খেলিনি। ধরমশালায় নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফেরা। সেখান থেকেই প্রত্যাবর্তনের শুরু।’
একটা ভুলের জন্য ভিলেনও হতে পারতেন সামি। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচ ফসকেছিলেন। যদিও সেই ক্যাচ মিসে বড় ক্ষতি হতে দেননি সামিই। দ্রুতই উইলিয়ামসনকে ফেরান। গত দুই বিশ্বকাপে সেমিফাইনালেই বিদায় নিয়েছিল ভারত। এক যুগ পর ফের ফাইনাল। ঘরের মাঠে ফের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ। যা হারাতে চান না, পরিষ্কার করে দিলেন সামি।