U19 World Cup 2022 Final: ফের বিশ্বসেরা ছোটদের ভারত, রাজ-রবিদের দুরন্ত পারফর্ম্যান্স

যুব বিশ্বকাপে সেরার সেরা ভারত। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে (U19 World Cup) পঞ্চম বার চ্যাম্পিয়ন হল ভারত (India)।

U19 World Cup 2022 Final: ফের বিশ্বসেরা ছোটদের ভারত, রাজ-রবিদের দুরন্ত পারফর্ম্যান্স
U19 World Cup 2022 Final: ফের বিশ্বসেরা ছোটদের ভারত, রাজ-রবিদের দুরন্ত পারফর্ম্যান্স
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 06, 2022 | 1:49 AM

ইংল্যান্ড ১৮৯ (৪৪.৫ ওভার)

ভারত ১৯৫-৬ (৪৭.৪ ওভার)

(৪ উইকেটে জয়ী ভারত)

সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্ত্তী

স্বাধীন ভারতের অলিম্পিক থেকে প্রথম হকির পদক এসেছিল ১৯৪৮ সালে। লন্ডন অলিম্পিকের আয়োজক গ্রেট ব্রিটেনকে হারানো সোনাজয়ী ভারতীয় হকি টিমকে এখনও হয়তো অনেকের মনে আছে। ওই ম্যাচে গোল করা টার্লোচন সিংকে ৭৪ বছর পর আবার খোঁজাখুজি শুরু করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। খোঁজ শুরু হয়েছে ২০০০ সালের অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের (U19 World Cup) ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের কোচকেও। মহম্মদ কাইফের নেতৃত্বে সে বার প্রথম যুব বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। ওই বিশ্বকাপের সেরা হয়েছিলেন যুবরাজ সিং। তাঁর কোচ ছিলেন সুখবিন্দর বাওয়া।

টার্লোচন বা সুখবিন্দরের সঙ্গে এই যুব বিশ্বকাপের যোগ কোথায়? প্রথম জনের নাতি ৫ উইকেট নিলেন, আর দ্বিতীয় জনের ছেলে ব্যাট হাতে ৩৫ করে গেলেন। ঘটনা হল, ৫ উইকেট নেওয়া বা ৩৫ করা এই ক্রিকেটার একজনই, রাজ অঙ্গদ বাওয়া (Raj Bawa)। অলিম্পিকে সোনাজয়ী দাদুর মতোই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠলেন। বিশ্বকাপ ফাইনালে এমন দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখে কমেন্ট্রি বক্সে উচ্ছ্বসিত বিশেষজ্ঞরা।

শুধুর রাজের রাজত্ব নয়। বাংলার রবি কুমারও (Ravi Kumar) ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার। বাঁ হাতি পেস বোলার শুরুতেই ধাক্কা দেন ইংল্যান্ডকে। শেষ পর্যন্ত তাঁর ঝুলিতে চার উইকেট। উত্তরপ্রদেশের আলিগড় ঠিকানা হলেও রবি কুমারকে সব অর্থেই এই বাংলার ছেলেই বলা যায়। সিআরপিএফে চাকরি করা রাজেন্দ্র সিং তখন বদলি হয়ে কলকাতায় এসেছেন। সেই সময় এই শহরে জন্মেছিলেন রবি। বহু বছর পর কলকাতাতেই আবার ক্লাব ক্রিকেট খেলতে আসা। অনেকটা মহম্মদ সামির মতো। বালিগঞ্জ ইউনাইটেডে খেলা রবিও ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক। ৯ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

যশ ধুলের টিমের আঁটোসাঁটো বোলিংয়ের জন্যই ১৮৯ রানে শেষ ইংল্যান্ড। শুরুতে জর্জ থমাস (২৭), শেষে জেমস সালেস (৩৪) কিছুটা লড়াই না করলে ১৯০ টার্গেট দিতে পারত না ইংল্যান্ড। অবশ্য মোটামুটি স্কোর খাড়া করার পিছনে রয়েছেন জেমস রিউ। তাঁর উল্টোদিকে যখন পরপর উইকেট পড়ছে, তখন ১১৬ বলে ৯৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে গেলেন জেমস। রবি তাঁকে না ফেরালে ইংল্যান্ড আরও বড় রান তুলতে পারত।

ভারতের যা ব্যাটিং লাইন আপ, ১৯০ বিরাট কিছু লক্ষ্য ছিল না। কিন্তু অংকৃষ রঘুবংশী (০), হর্নূর সিং (২১) এবং ক্যাপ্টেন যশ ধুল (১৭) যদি তাড়াহুড়ো না করতেন, তা হলে ২-৩ উইকেট হারিয়ে ভারতের ফাইনালটা জিতে নেওয়া উচিত ছিল। শেখ রশিদ অবশ্য হাফসেঞ্চুরি করেন। তাতে প্রাথমিক চাপটা কাটিয়ে ফেলতে পেরেছিল ভারতের ছোটরা। এই রকম ম্যাচ জেতার জন্য দরকার পড়ে একটা জুটি। যে জুটি ৭৫-১০০ করে টিমকে জয়ের রাস্তা দেখাবে। সেই কাজটাই করলেন নিশান্ত সিন্ধু আর রাজ অঙ্গদ বাওয়া। রাজ ৩৫ করে আউট হয়ে গেলেও সিন্ধুকে নড়ানো যায়নি। ৫০ রানে নট-আউট থেকে ভারতকে জেতালেন সিন্ধু। ভারত ১৪ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটে জিতে নিল।

বড়দের ক্রিকেট দেখলে, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিউজিল্যান্ডের দাপট। ওয়ান ডে বিশ্বকাপ মানে অস্ট্রেলিয়ার প্রাধান্য। আর টি-২০-তে ক্যারিবিয়ান ঝড় সামলানো কঠিন। ছোটদের ক্রিকেটে কিন্তু শুধু ভারত আর ভারত। সব মিলিয়ে ৫ বার যুব বিশ্বকাপ জিতে ফেলল ভারতীয় দল। সেই ২০০০ সাল থেকে ধরলে, যুব বিশ্বকাপ ভারতের সিনিয়র টিমের সাপ্লাই লাইন হয়ে উঠেছে। কাইফ-যুবরাজদের পর শিখর-বিরাট-পৃথ্বী সেই ধারা মেনে আগামী দিনে বড়দের টিমে হয়তো ঢুকে পড়বেন যশ-সিন্ধু-রবিরা। দ্রাবিড়-রোহিতের টিম ম্যানেজমেন্ট এখন অলরাউন্ডারের খোঁজে। নতুন মুখ হিসেবে সেই তালিকায় হয়তো ঢুকে পড়তে চলেছেন রাজ।