মুম্বই : ওয়াংখেড়েতে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians) ‘মিশন প্লে অফ’ জিতেও পুরোপুরি সফল নয়। অরেঞ্জ আর্মি মুম্বইকে এ বারের আইপিএলে (IPL 2023) তাদের মরণ-বাঁচন ম্যাচে ২০১ রানের টার্গেট দিয়েছিল। ক্যামেরন গ্রিনের সেঞ্চুরি, ক্যাপ্টেন রোহিতের হাফসেঞ্চুরি দিয়ে সেই লক্ষ্য পূর্ণ করেছে পাঁচ বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন। হিটম্যানের MI পল্টন নিজেদের পরিকল্পনায় সফল। অরেঞ্জ আর্মির বিরুদ্ধে ৮ উইকেটে জিতে নিজেদের নেট রানরেট বাড়িয়ে নিয়েছে মুম্বই। রোহিতদের কাজ শেষ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এরপরও মুম্বইকে নজর রাখতে হবে আরসিবি বনাম গুজরাট ম্যাচে। কারণ নেট রানরেটে এগিয়ে রয়েছে আরসিবি। আর রবি-রাতের ম্যাচে হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটান্সকে যদি হারিয়ে দেয় বিরাট কোহলির দল তা হলে মুম্বইয়ের প্লে অফের স্বপ্নভঙ্গ হবে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে আরসিবি বনাম গুজরাট ম্যাচে টস এখনও হয়নি। বৃষ্টির বাধা কাটিয়ে ম্যাচ যদি গড়ায়ও, তা হলে রোহিতদের প্রার্থনা থাকবে বিরাটের দল যেন হারে। তা হলেই প্লে অফে পৌঁছতে পারবে মুম্বই। বিস্তারিত ম্যাচ রিপোর্ট TV9Bangla Sports এ।
অপেক্ষার আর মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা। আজ, রবিবার রাতেই ফয়সলা হবে এ বারের আইপিএলের প্লে অফের চতুর্থ দল হবে কারা। চলতি আইপিএলের প্লে অফে পৌঁছে যাওয়া ৩টি ম্যাচ হল গুজরাট টাইটান্স, চেন্নাই সুপার কিংস ও লখনউ সুপার জায়ান্টস। ওয়াংখেড়েতে রবি-বিকেলে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে যেভাবে পারফর্ম করল হায়দরাবাদের ওপেনিং জুটি, তেমন সারা মরসুমে আর দেখা যায়নি। আজ প্রথমবার হায়দরাবাদের হয়ে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন বিভ্রান্ত শর্মা। টিম ম্যানেজমেন্টের এই সিদ্ধান্ত যে ঠিক ছিল, তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। মায়াঙ্ক আগরওয়াল এই মরসুমে ব্যাট হাতে তেমন ছন্দে ছিলেন না। তবে ওয়াংখেড়েতে জ্বলে উঠল তাঁর ব্যাট। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে স্কোরবোর্ডে ৫৩ রান তোলে অরেঞ্জ আর্মির ওপেনাররা। এরপর বিভ্রান্ত ও মায়াঙ্ক পরপর হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ইনিংসের মাঝপথ অবধি উইকেট হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন পীযুষ চাওলা, জেসন বেহরেনডর্ফরা।
অবশেষে হায়দরাবাদের জমাট জুটি ভাঙেন আকাশ মাধওয়াল। ৪৭ বলে ৬৯ রান করে আউট হন বিভ্রান্ত শর্মা। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আইপিএলের ডেবিউ ম্যাচে খেললেন বিভ্রান্ত। ১৫ বছর পর ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলের ডেবিউ ম্যাচে সর্বাধিক রান করলেন বিভ্রান্ত শর্মা। তিনি ভেঙে দিয়েছেন ২০০৮ সালে রাজস্থানের জার্সিতে কেকেআরের বিরুদ্ধে স্বপ্নিল আসনোধকরের গড়া রেকর্ড। সেই ম্যাচে তিনি ৬০ রান করেছিলেন। আর আজ মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে বিভ্রান্ত হায়দরাবাদের জার্সিতে করলেন ৬৯ রান।
হায়দরাবাদের হয়ে প্রথম উইকেটে ৮৩ বলে ১৪০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন মায়াঙ্ক-বিভ্রান্ত। বিভ্রান্ত ফিরলে হেনরিখ ক্লাসেনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মায়াঙ্ক। দ্বিতীয় উইকেটে ওঠে ৩৪ রান। বিভ্রান্তের পর মায়াঙ্কের উইকেটও তুলে নেন আকাশ মাধওয়াল। ১৮তম ওভারে গ্লেন ফিলিপসকে ফেরান ক্রিস জর্ডান। এরপর ১৯তম ওভারে হেনরিখ ক্লাসেন ও হ্যারি ব্রুকের উইকেট তুলে নেন আকাশই। প্রথমে ব্যাটিং করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০০ রান তোলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ৪ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন আকাশ।
মুম্বইয়ের ‘মিশন প্লে অফ’-এর জন্য ২০১ রানের টার্গেট ছিল। মুম্বইয়ের ওপেনিং জুটিতে ওঠে ২০ রান। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে ঈশান কিষাণের উইকেট তুলে নেন ভুবনেশ্বর কুমার। বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় মুম্বই। মিডউইকেটে দারুণ ক্যাচ নেন হ্যারি ব্রুক। দ্বিতীয় উইকেটে ক্যামেরন গ্রিনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রোহিত। ৩১ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন রোহিত। পাশাপাশি মুম্বইয়ের জার্সিতে এ দিন ৫ হাজার রানের মাইলস্টোন পার করে ফেলেন রোহিত। হিটম্যান-গ্রিন জুটিই ম্যাচ শেষ করতে পারত। তবে ১৪তম ওভারে রোহিতের উইকেট তুলে নেন মায়াঙ্ক ডাগর। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রোহিতের হাফসেঞ্চুরি হতই না। দু’বার তাঁর ক্যাচ মিস করেন সনভীর সিং। প্রথমে ১৩ রানের মাথায় রোহিতের ক্যাচ মিস করেন সনভীর। এরপর তিনি যখন ৫১ রানে ছিলেন, সেই সময় ও ক্যাচ ফস্কান সনভীর। শেষ অবধি ৩৭ বলে ৫৬ রান করে মাঠ ছাড়েন রোহিত। ওই সময় ৪১ বলে মুম্বইয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫৩ রান।
রোহিত ফিরলে ক্রিজে আসেন সূর্যকুমার যাদব। তৃতীয় উইকেটে ৩০ বলে ৫৩* রানের পার্টনারশিপ গড়েন গ্রিন ও স্কাই। শেষ ৩ ওভারে মুম্বইয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ১২ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নিল মুম্বই। সিঙ্গল নিয়ে শতরান পূর্ণ করেন গ্রিন। শেষ অবধি গ্রিন ৪৭ বলে ১০০ নট আউট ও সূর্য ১৬ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। ১৪ ম্যাচে ৮টি জয় ৬টি হার মুম্বইয়ের। ৮ উইকেটে হায়দরাবাদকে হারিয়ে নেট রানরেটে -০.০৪০ উন্নতি করল মুম্বই। এ বার মুম্বই শিবিরের নজর RCB vs GT ম্যাচে।