রাঁচি: রাঁচি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে রামগড় নামক একটি ছোট্ট জনপদে বাস। বাড়িতে মোট ছয় ভাইবোন ও বাবা-মা। অনাদর, অবহেলা না থাকলেও চূড়ান্ত অস্বচ্ছলতায় বড় হওয়া শান্তি কুমারীর (Shanti Kumari) ছোট থেকেই খেলাধুলোর প্রতি ঝোঁক। প্রথমে ফুটবল…সেখান থেকে ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষণ। বড় ক্রিকেটার হয়ে নাম যশের পাশাপাশি অর্থেরও বিশাল প্রয়োজন শান্তির। ঝাড়খণ্ডের রামগড়ের ২৩ বছরের মিডিয়াম পেসারের এই প্রয়োজন মেটাতে পারে মেয়েদের আইপিএল। ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাস গড়ার দিনে সামিল হতে পারে শান্তির নাম। পুরুষদের আইপিএলে মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) চাহিদা ও সাফল্য নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। তাঁরই রাজ্যের মেয়ে উইমেন্স প্রিমিয়র লিগে (WPL) নিলামে ঝড় তোলার জন্য তৈরি। ২৫ লাখ টাকার বেস প্রাইসে নিলামের জন্য শর্টলিস্টেড হয়েছেন তিনি।
ক্রিকেট মানে শুধুমাত্র পুরুষ ক্রিকেট, সেই ধারণা একজন পাল্টে গিয়েছে। ক্রিকেট জগতের ভোল পাল্টে দিতে আসছে উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ। রক্ষণশীল চিন্তাভাবনাকে ভেঙে, নারীশক্তির দীপ্ত তেজে ঝাড়খণ্ডের শান্তি কুমারী হতে চলেছেন ঝাড়খণ্ডের পরবর্তী ক্রিকেট তারকা। পেশায় কৃষক বাবা জ্বলেশ্বর করমালি, মা সুন্দরী দেবী, ছয় ভাইবোনের সংসারে বড় হয়েছেন শান্তি। বাড়ির আর্থিক দুরবস্থা সত্ত্বেও বাবা চাষবাস করে মেয়ের সব চাহিদা পূরণ করেছেন। তবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি শান্তি। উচ্চ মাধ্য়মিক পাশ করেই ক্রিকেটে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন। খেলেছেন ঝাড়খণ্ডের রাজ্য দলের হয়ে।
মহেন্দ্র সিং ধোনির মতোই ফুটবল খেলা দিয়ে শুরুটা করেছিলেন শান্তি। তারপর ২০১৪ সালে প্রথম ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। মূলত পেস বোলিং করেন। ব্যাটিংটাও করতে পারেন। মহিলা ক্রিকেট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকা সত্ত্বেও ক্রিকেটের এই ঝাঁ চকচকে মঞ্চে উঠে আসবেন একথা ভাবেননি শান্তি। কিন্তু যখন জানতে পারলেন, তখন থেকেই জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু হয়। প্রায় এক বছরের প্রস্তুতির পর ঝাড়খণ্ডের হয়ে খেলা শুরু করেন। নিজের এই সাফল্যের জন্য নিজের কোচদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি শান্তি কুমারী। ধোনির একসময়ের কোচ চঞ্চল ভট্টাচার্য, আশিস স্যার ও প্রমুখের অবদানের কথা উঠে এসেছে শান্তির মুখে।