মুম্বই: কয়েক মাস পরেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। দু’বারের চ্যাম্পিয়নদের আবার আলোয় ফেরানোর দায়িত্ব ছিল যাঁর কাঁধে, সেই তিনিই হঠাৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিলেন। ক্যারিবিয়ান টিমের সাদা বলের ক্রিকেটের ক্যাপ্টেন কায়রন পোলার্ড (Kieron Pollard) অবসর ঘোষণা করে দিলেন। ইন্সটাগ্রামে ভিডিও পোস্ট করে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। ওয়ান তো বটেই, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ (West Indies) টিমের স্তম্ভ ছিলেন তিনি। নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাটে-বলেও ধারাবাহিক ভাবে পারফর্ম করেছেন। কিন্তু গত বছরের কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপ থেকেই সে ভাবে ফর্মে ছিলেন না পোলার্ড। এমনকি, এ বারের আইপিএলেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। বোঝাই যাচ্ছিল, বয়স হয়ে যাচ্ছে। সেই কারণেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। ক্রিস গেইল, ডোয়েন ব্র্যাভোর পর পোলার্ড আর এক তারকা ক্রিকেটার, যিনি আর জাতীয় টিমের হয়ে খেলবেন না।
পোলার্ড বলেছেন, ‘অনেক চিন্তা ভাবনার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিলাম। আরও অনেক তরুণ ক্রিকেটার যেমন আমারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখে, আমি তেমন দেখেছি। ১০ বছর বয়স থেকে দেখা সেই স্বপ্ন পূরণও হয়েছে। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ান ডে টিমে ১৫ বছর খেলেছি। এর জন্য আমার গর্বের শেষ নেই।’
পোলার্ড ১২৩টা ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে। খেলেছেন ১০১টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ৩৫ বছরের অলরাউন্ডার সাদা বলের ক্রিকেটে দারুণ সফলও। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট বলা হয় তাঁকে। বিশ্বের সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেছেন। আইপিএলে খেলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। রোহিত শর্মার মুম্বইয়ের উত্থানের পিছনে বরাবর বড় ভূমিকা নিয়েছেন পোলার্ড। ৬ কিংবা ৭ নম্বরে নেমে দ্রুত রান তোলার পাশাপাশি বল হাতে প্রয়োজনীয় উইকেট দেওয়ায় সিদ্ধহস্ত। এ বারও মুম্বইয়ের হয়েই খেলছেন। তবে টিমকে টানতে পারছেন না। সব মিলিয়ে ৫৮৭টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ১৫ বছরের কেরিয়ারে। ১১৫০৯ রান করেছেন। সর্বোচ্চ ১০৪। একটা সেঞ্চুরি সহ ৫৬টা হাফসেঞ্চুরি করেছেন। নিয়েছেন ৩০৫ উইকেট।
পোলার্ড বলেছেন, ‘২০০৭ সালে আমার অভিষেক ম্যাচ এখনও মনে আছে। ওই ম্যাচে ক্যাপ্টেন ছিল আমার ছেলেবেলার হিরো ব্রায়ান লারা। মেরুন রংয়ের জার্সি পরে গ্রেট ক্রিকেটারদের পাশে খেলাটা যে কত বড় গর্বের, আজ বুঝতে পারছি। বোলিং, ব্যাটিং কিংবা ফিল্ডিং করি, সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করেছি সব সময়।’
গেইল, ব্র্যাভোদের পর পোলার্ডও অবসর নেওয়ায় একটা যুগের শেষ হয়ে গেল ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে।