
কলকাতা: স্বপ্নে আঘাত লাগলে কেমন অনুভূতি হয়? আপনি, আমি সকলেরই কমবেশি অভিজ্ঞতা আছে। যা আমরা ছেলেবেলা থেকে লালন করতে থাকি, যাকে নিয়ে বাঁচি, তাতে বাধা এলে কান্না হয়ে ঝরে পড়ে। স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় ভিজে যায় মাথার বালিশ। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে বড় ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলেন সূয়াশ শর্মা (Suyash Sharma)। আইপিএলে তাঁকে সেই মঞ্চ দিয়েছে। সুখের দিনে পুরনো দিনগুলি ভুলে যাননি সূয়াশ। তাঁর মনে পড়ে যাচ্ছে গতবছরের কথা। মাথায় ফেট্টি বাঁধা, কাঁধ ছাপানো এক ঢাল চুলের ছেলেটির মুখে সর্বদা হাসি। কেকেআর তারকা সূয়াশ শর্মার আইপিএল (IPL 2023) যাত্রাটা সুখের হলেও ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলারা জার্নিটা সহজ ছিল না। মুখের হাসি মিলিয়ে গিয়েছিল সেদিন। কেঁদেছিলেন সারা রাত ধরে। সেই সূয়াশের মুখে উঠে এল সংগ্রামের দিনগুলির কাহিনি। বিস্তারিত TV9 Bangla Sports-র এই প্রতিবেদনে।
দল হারছে, প্লে অফের দৌড় থেকে প্রায় ছিটকে গিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। এই ব্যর্থতার মাঝেও কেকেআরের হাত ধরে ক্রিকেট বিশ্ব চিনেছে আরও এক রহস্য স্পিনারকে। মাথায় ফেট্টি বাঁধা, লম্বা চুলের তরুণ ক্রিকেটারের সিভিতে আইপিএলের আগে কোনও একটিও প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, লিস্ট এ বা কোনও টি-২০ ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না। এক দলা মাটিকে নিজেদের মতো করে গড়ে নেওয়ার বাসনা নিয়ে আনকোরা স্পিনার সূয়াশ শর্মাকে নিলামে দলে নিয়েছিল কেকেআর। চলতি আইপিএলে কেকেআরের ভবিষ্যৎ যাই হোক, প্রথম মরসুমেই নজর কাড়তে সক্ষম তরুণ সূয়াশ। ৮ ম্যাচে ১০ উইকেট। আরসিবির বিরুদ্ধে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে মাঠে নেমেই চমকে দিয়েছিলেন। বিরাট কোহলি, ফাফ ডুপ্লেসিদের মতো তারকাদের বিরুদ্ধে স্বপ্নের অভিষেক।
আইপিএলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সূয়াশ বলেছেন, “গতবছর অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে ট্রায়াল দিয়েছিলাম। সিলেকশন হয়নি। আমি খুব ভালো পারফর্ম করেছিলাম। সেদিন রাত সাড়ে বারোটা থেকে ১ টার মধ্যে লিস্ট আসার কথা ছিল। আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভেঙে দেখলাম আমি লিস্টে নেই। সেদিন ভোর তিনটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত কেঁদেছি।” সূয়াশের কথায়, “আমি আর একবার বল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা তার অনুমতি দেয়নি। কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরেছিলাম সেদিন। এসেই মাথা মুড়িয়ে ফেলি। এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে এত ভালো পারফর্ম করার পরও আমার নির্বাচন হয়নি।”
এঁদো গলি থেকে ক্রিকেটের রাজপথে উত্তীর্ণ হওয়ার বড় মঞ্চ হল আইপিএল। আনকোরা, নাম না জানা বহু ক্রিকেটার এই মঞ্চকে ব্যবহার করে কেরিয়ার গড়েছেন। ১৯ বছরের সূয়াশের তো সবে শুরু। যাত্রাপথটা অনেক বড়। খামতিগুলোকে পূরণ করার, নিজেকে আরও ক্ষুরধার করে গড়ে তোলার।