
কলকাতা: ফালাফালা হয়ে কেটে গিয়েছে ঠোঁট। নাকের তলা থেকে থুতনি পর্যন্ত লাগাতে হয়েছে ব্যান্ডেজ। এমন চোটের পর যে কেউ ড্রেসিংরুমেই কাটিয়ে দেবেন, তাই তো প্রত্যাশিত। কিন্তু বাবা ইন্দ্রজিৎরা (Baba Indrajith) অন্য ধাতুতে তৈরি। হরিয়ানার বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে গিয়ে ৫৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছে তামিলনাড়ু। বিজয় হাজারে ট্রফির (Vijay Hazare Trophy) সেমিফাইনালে তখনই দেখা গেল অবাক করা কাণ্ড। ব্যাট করতে আসছেন মুখে ব্যান্ডেজ লাগানো এক ক্রিকেটার। প্রথমে তাঁকে চিনতেই পারেননি হরিয়ানার ক্রিকেটাররা। ভালো করে দেখে বুঝতে পারেন, ইতি বাবা ইন্দ্রজিৎ। ইনিংস বিরতরি সময় পড়ে গিয়ে মারাত্মক চোট পান মুখে। তার পরও যে তিনি ব্যাট করতে মাঠে যাবেন, কেউই ভাবেননি। ভেবেছিলেন ইন্দ্রজিৎ। এমন মানসিক জোর খুব কমই দেখা যায়। ইন্দ্রজিতে মুগ্ধ ক্রিকেট মহল।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হ্যামস্ট্রিংয়ে মারাত্মক চোট নিয়েও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট বাঁচিয়েছিলেন হনুমা বিহারী। সেই তিনিই আবার ইন্দোরে রঞ্জি ক্রিকেটে বাঁ হাতে ব্যাট করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে। ডান হাতের কবজি ভেঙে যাওয়ার কারণে। ক্রিকেট মাঠে এমন অনেক আশ্চর্য গল্পের শীর্ষে থাকবেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ওয়ান ডে বিশ্বকাপে কাফ মাসলের চোটের জন্য হাঁটতে পারছিলেন না ভালো করে। এক পায়ে ব্যাট করেছিলেন। তাতেও আফগানদের বিরুদ্ধে ডাবল সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়াকে জেতান। সেই তালিকায় ঢুকে পড়লেন বাবা ইন্দ্রজিৎও।
২৯ বছরের ব্যাটারের এ বার দুরন্ত ফর্মে আছেন। টিমের যে তাঁকে প্রয়োজন, তা জানতেন। তাই ব্যান্ডেজ নিয়েও নেমে পড়েন। শুরুতে অবশ্য একটু মুশকিলেই পড়েছিলেন। কয়েকটা বল খেলার পর টিমের ডাক্তারকে ডাকতে হয়। মাঠেই আবার ড্রেসিং করা হয় তাঁর। তারপর খেলতে শুরু করেন। এ বার ইন্দ্রজিৎকে থামানো যায়নি। ৭১ বলে ৬৪ রান করে যান। অঙ্কিত কুমার দুরন্ত ক্যাচ না ধরলে নিশ্চিত চার আসত। ৬৩ রানে তামিলনাড়ু হেরে গেলেও বাবা ইন্দ্রজিতের এই ইনিংস মনে থেকে যাবে ক্রিকেট মহলের।