
কলকাতা: তালিকা বেশ লম্বা। সচিন তেন্ডুলকর, অনিল কুম্বলে, মহম্মদ আজহারউদ্দিন! যাঁদের সঙ্গে এক সময় খেলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই তিনিই ইদানীং বড্ড ব্যস্ত থাকেন লন্ডনের অভিজাত অঞ্চলে। ডাকলেই হাজির হয়ে যান তিনি তুলি আর রং নিয়ে। পোট্রেট আঁকা এখন নেশা তাঁর। পেশাও বটে। আটের দশকের শেষ দিক থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিচিত নাম। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন টানা দশটা বছর। সেই জ্যাক রাসেল এখন পরিচিত চিত্রশিল্পী হিসেবে। ভারত এই মুহূর্তে ইংল্যান্ড সফরে ব্যস্ত। কিন্তু তাঁর ক্রিকেট নিয়ে বিন্দুমাত্র ব্যস্ততা নেই। আগ্রহও যে খুব আছে, তাও জোর দিয়ে বলা যাবে না। বরং তিনি ছবি আঁকার দুনিয়াতেই বেশ পরিচিত নাম এখন।
ফোন ধরেন না। হোয়্যাটস অ্যাপে নেই। দেখা করতে হলে ইমেল করতে হয়। অথবা লন্ডনের বিখ্যাত ক্রিস বিটলস গ্যালারিতে গেলে দেখা যায় তাঁকে। ক্রিকেট থেকে বহু দূরে ছবির দুনিয়াতেই পাকাপাকি ভাবে বসত রাসেলের। দেশের হয়ে ৫৪টা টেস্ট ও ৪০টা ওয়ান ডে যে কখনও খেলেছেন, রাসেলকে দেখে মনেই হবে না। বরং শিল্পীসুলভ মানসিকতাই বেরিয়ে আসে। ক্রিকেট জীবনেও পরিচিত ছিলেন অন্য রকম কিছুর জন্য। অদ্ভুত ব্যাটিং স্টান্স তাঁকে জনপ্রিয় করেছিল। কিপিং করার সময় পরতেন সানগ্লাস। ক্রিকেট থেকে পাকাপাকি অবসর নেওয়ার পিছনেও যেন সেই অন্যরকম কিছুর গল্প। ৬১ বছরের রাসেল শোনালেন তাঁর চিত্রশিল্পী হয়ে ওঠার গল্প।
পিটিআইকে দেওয়া ইন্টারভিউয়ে রাইডার স্ট্রিটের আর্ট গ্যালারিতে বসে রাসেল বলেছেন, ‘রোজ আমি ঐতিহাসিক কোনও চরিত্র আঁকার চেষ্টা করি। গতবছর এঁকেছি ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ডগলাস জার্ডিনের ছবি। এ বছর আমি রঞ্জিৎ সিংজির ছবি এঁকেছি। যদি ইতিহাস খুঁটিয়ে দেখেন, ওঁর কেরিয়ারে চোখ রাখেন, অসংখ্য ঘটনা দেখতে পাবেন। বর্ণময় চরিত্র। এই ছবিটাও আমার প্রদর্শনীর মুখ্য একটা বিষয়। ভারত-ইংল্যান্ডের টেস্ট সিরিজ চলছে। ওটা মাথায় রেখেই এই ছবিটা এঁকেছি।’
কীভাবে ছবি আঁকা শুরু করলেন? রাসেল বলেছেন, ‘১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছি। ২০০৪ সালে কাউন্টি থেকে। তারপর শুধু ছবিই এঁকেছি। ২০টা বছর যেন হুহু করে পেরিয়ে গেল। ছবি আঁকাই একমাত্র জিনিস, যা আমার রয়েছে। রোজ যে কারণে শুধু আঁকি,আঁকি আর আঁকি। ৩৫-৩৬ বছর ধরে এটা করে চলেছি।’
না, অর্থের জন্য ছবি আঁকেন না রাসেল। নেশার জন্যই হাতে তুলে নেন তুলি। রাসেল ছবির দুনিয়ায় এখন বেশ পরিচিত নাম। প্রায় ২৫ হাজার পাউন্ডের মতো ছবি বিক্রিও হয়েছে তাঁর। খেলে যে টাকা রোজগার করেছেন এক সময়, তার থেকে ছবি এঁকে অনেক বেশি রোজগার রাসেলের।