মুম্বই: টানা দশ ম্যাচ জিতে ফাইনাল। আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের লক্ষাধিক দর্শকের মাঝে উপস্থিত ছিলেন খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী। মাঠে উপস্থিত দর্শকই শুধু নয়, পুরো দেশের তখন একটাই প্রত্যাশা। বিশ্ব জয় করুক ভারত। পরিস্থিতি তেমনই তো ছিল! টানা দশটা ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। লিগ পর্বে প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই বিশ্বকাপ শুরু করেছিলেন রোহিতরা। ফাইনালেও সামনে ছিল সেই অস্ট্রেলিয়াই। ব্যাটিংয়ে রোহিত, বিরাট, রাহুলরা বিধ্বংসী ফর্মে। বোলিংয়ে মহম্মদ সামি, জসপ্রীত বুমরার মতো পেসার। তারপরও স্বপ্নভঙ্গ। এক যুগ পর দেশের মাটিতে বিশ্বজয় হয়নি। ড্রেসিংরুমে সকলেই ভেঙে পড়েছিলেন। এমন সময় প্রবেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
বিশ্বকাপ ফাইনালের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল ভিডিয়ো। ভারতীয় ক্রিকেট দলের ড্রেসিংরুমে প্রধানমন্ত্রী। হতাশ ভারতীয় ক্রিকেটারদের সামলানোর চেষ্টায়। ভরসা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বুকে মাথা রাখেন মহম্মদ সামি। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে ২৪ উইকেট নিয়েছেন সামি। সব ম্যাচ খেললে সংখ্যাটা ৩০ ছাপিয়ে যেতে পারত। অধিনায়ক রোহিত শর্মা, সিনিয়র ব্যাটার বিরাট কোহলিদের মুখেও হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর পাশাপাশি সতীর্থদের অবস্থা ঠিক কী হয়েছিল? সে কথাই খোলসা রয়েছেন জাতীয় দলের সিনিয়র পেসার মহম্মদ সামি।
সামনেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট রয়েছে ভারতের। স্কোয়াডে রয়েছেন সামিও। তার আগে আজ তক-এ একটি সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপ ফাইনালের পরের ঘটনা ভাগ করে নেন সামি। বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম। ড্রেসিংরুমে সকলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেছিলাম। দু-মাসের পরিশ্রম শেষে এই ফল। আমাদের সব চেষ্টা, সাফল্যই যেন এক ধাক্কায় ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছিল। দিনটা আমাদের ছিল না। এরকম পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী ড্রেসিংরুমে ঢোকেন। পরিষ্কার বার্তা, মাথা উঁচু করো।’
ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছে পুরো ঘটনাই অপ্রত্যাশিত ছিল, খোলসা করেন সামি। বলেন, ‘আমাদের আগে থেকে জানানো হয়নি মোদীজি আসছেন। হঠাৎই তিনি ড্রেসিংরুমে প্রবেশ করেন। তার আগে আমরা নিজেদের মধ্যেও কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলাম না। এমনকি কেউ খাবারও খাইনি। কিন্তু তিনি ড্রেসিংরুমে ঢুকতেই পুরো পরিবেশটাই পাল্টে যায়। আমাদের কাছে অনেক বড় সারপ্রাইজ ছিল।’
সতীর্থদের কয়েকজন যে প্রধানমন্ত্রীকে ড্রেসিংরুমে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন, এমনটাই জানান সামি। বিশ্বকাপে সবচেয়ে সফল বোলার সামিকে বুকে টেনে নেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যান্য প্লেয়ারদের সঙ্গে হাত মেলান। সামি বলছেন, ‘আমরা সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। সত্যি বলতে, সেটাই সেই মুহূর্ত, যখন ড্রেসিংরুমে আমরাও নিজেদের মধ্যে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ফিরেছিলাম। সকলেই একটা বিষয় বলেছিলাম, এই হতাশা দূরে সরিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সেই হঠাৎ আসাটা আমাদের মানসিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছিল।’