বেঙ্গালুরু : রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) সেমিফাইনালেই বিদায় বাংলার (Bengal)। প্রথম ইনিংসে মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) ৩৪১ এর বড় স্কোর গড়ে। জবাবে ব্যাটিংয়ে বিপর্যয়। মাত্র ৫৪ রানে ৫ উইকেট হারানো। সেখান থেকে অনবদ্য ব্যটিংয়ে বাংলাকে আশার আলো দেখান মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary) ও শাহবাজ আহমেদ (Shahbaz Ahmed)। দুজনেই শতরান করেন। যদিও রানের ব্যবধান মেটেনি। প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ লিড নেয় মধ্যপ্রদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে রজত পাতিদার এবং অধিনায়ক আদিত্য শ্রীবাস্তবের অর্ধশতরানে বাংলার রাস্তা কঠিন করে মধ্যপ্রদেশ। শেষদিকে বাংলার স্পিনাররা দ্রুত মধ্যপ্রদেশ ইনিংস গুটিয়ে দিলেও চতুর্থ ইনিংসে বাংলার লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৫০। দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলা ব্যাটিংয়ে ভরাডুবি। অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন। বাংলা ইনিংসে আর কোনও উল্লেখযোগ্য রান নেই। শেষ অবধি ১৭৫ রানেই বাংলা ইনিংসের ইতি। পাঁচ উইকেট নেন কুমার কার্তিকেয়। ১৭৪ রানের বড় ব্যবধানে হারে, বিদায় বাংলার।
কোয়ার্টার ফাইনালে অনবদ্য একটা জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল বাংলা। গ্রুপ পর্বেও ধারাবাহকতা দেখিয়েছিল বাংলা। সব গ্রুপের মধ্যে সেরা হয়ে নকআউট নিশ্চিত করেছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যাটিংয়ে বিশ্বরেকর্ড করে বাংলা। প্রথম ইনিংসে ৯ ব্যাটসম্যান ব্যাট করে এবং প্রত্যেকেই অর্ধশতাধিক রান করেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যা বিশ্বরেকর্ড। ম্যাম ড্র হয়। দ্বিতীয় ইনিংসেও অনবদ্য ব্যাটিং করেছিল বাংলা। সেখান থেকে প্রত্যাশাও বেড়েছিল। ২০১৯-২০ মরসুমে ফাইনাল খেলেছিল বাংলা।
মধ্যপ্রদেশ শক্তিশালী দল হলেও অভিজ্ঞতা এবং পারফরম্যান্সে বাংলাও পিছিয়ে ছিল না। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সই হোক বা পরিকল্পনা, সবদিক থেকেই ডুবলো বাংলা। প্রথম ইনিংসের পারফরম্যান্সই পিছিয়ে দেয় বাংলাকে। প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলা। প্রতিরোধ গড়তে ব্যর্থ বাংলার টপ অর্ডার। মাঝের ওভারে অভিজ্ঞ মনোজ তিওয়ারি এবং শাহবাজ আহমেদ ক্রিজে পড়ে থেকে প্রাথমিক ধাক্কা সামলান। ক্রমশ ইনিংস বড় হয়। প্রথম শ্রেণির কেরিয়ারে ২৯ তম শতরানে বাংলাকে ভরসা দেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন শাহবাজ। প্রথম শ্রেণির কেরিয়ারে প্রথম শতরান তাঁর ব্যাটে। শতরানের পর মনোজ ফিরতেই বাংলা ইনিংসে ফের ধস। প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানে পিছিয়ে থাকাটাই বাংলাকে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। দ্বিতীয় ইনিংসেও টপ অর্ডারের হতাশ পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি। শেষদিন জয়ের জন্য আরও ২৫৪ রানের প্রয়োজন ছিল বাংলার। রাতে বৃষ্টি হওয়ায় অনেকটা দেরিতে খেলা শুরু হয়। দিনের প্রথম ওভারেই অনুষ্টুপ মজুমদার ফেরেন। আগের দিন কোচ অরুণ লালের কথায় যে আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গিয়েছিল, মাঠের পারফরম্যান্সে তার ছাপ পাওয়া গেল না। জনি বেয়ারস্টো, বেন স্টোকস হয়ে উঠতে পারলেন না বাংলার ব্যাটাররা। এখন অপেক্ষা নতুন মরসুমের। রঞ্জি জয়ের অপেক্ষা, অপেক্ষাই থেকে গেল।