India vs South Africa: পন্থের অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরিতেও টেস্ট জয়ের স্বপ্ন ক্রমশ ফিকে হচ্ছে ভারতের

যা পরিস্থিতি, কেপ টাউনে ভারতের টেস্ট ও সিরিজ জেতার সম্ভাবনা খুব কম। অন্তত পরিস্থিতি তাই বলছে। যদি না সামি-বুমরা জুটি বিস্ফোরক পারফর্ম করেন। টেস্ট ক্রিকেটের এটাই তো সবচেয়ে আশ্চর্যের দিক। কে যে কোন দিন ঋষভ পন্থ হয়ে উঠবেন, কে জানে!

India vs South Africa: পন্থের অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরিতেও টেস্ট জয়ের স্বপ্ন ক্রমশ ফিকে হচ্ছে ভারতের
India vs South Africa: পন্থের অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরিতেও টেস্ট জয়ের স্বপ্ন ক্রমশ ফিকে হচ্ছে ভারতের (ছবি-আইসিসি টুইটার)

| Edited By: সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্ত্তী

Jan 13, 2022 | 10:02 PM

ভারত ২২৩ ও ১৯৮

দক্ষিণ আফ্রিকা ২১০ ও ১০১-২

কেপ টাউন: যে বৃত্তের খোঁজে রামধনুর দেশে পাড়ি দিয়েছিল বিরাট কোহলি অ্যান্ড কোং, অত্যাশ্চর্য কিছু না ঘটলে অধরা থেকেই যাবে। বিশ্বের সব দেশে টেস্ট (Test) সিরিজ জেতা ভারত (India) এ বারও হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) সিরিজ জিততে পারবে না। ধারে-ভারে অনেক পিছিয়ে থাকা, একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার নিয়ে নামা ডিন এলগারের টিম ২১২ রানের লক্ষ্য সামনে রেখে যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে ঘরের মাঠে সিরিজ জয় সম্ভাবনা ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে। তৃতীয় দিনের শেষে প্রোটিয়ারা স্কোর বোর্ডে তুলে ফেলেছে ১০১-২। ক্যাপ্টেন এলগার ৩০ করে ফিরে গেলেও কিগান পিটারসেন ৪৮ করে রয়েছেন ক্রিজে। টেস্ট জিততে আর ১১১ চাই দক্ষিণ আফ্রিকার।

কেপ টাউনের তৃতীয় দিনটা অবশ্য ঋষভ পন্থের। ২৪ বছরের বাঁ হাতি ওপেনার দুরন্ত সেঞ্চুরি করে গেলেন। ১৩৯ বলে নট আউট ১০০ রানের ইনিংসটা অনেকদিন আলোচনায় থেকে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতীয় হিসেবে তো বটেই, এশিয়ান কিপার হিসেবে প্রথম সেঞ্চুরির রেকর্ড করে ফেললেন তিনি। বিরাট যখন আউট হয়েছিলেন, টিমের রান ১৫২-৫। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে ভারত, এমনটা দেখতেই তো অভ্যস্ত ক্রিকেট ভক্তরা। ‘অভিভাবকহীন’ হয়ে গিয়ে অকারণ মারতে গিয়ে উইকেট হারাবেন পন্থ, এটাই হয়! কিন্তু এই পন্থকে অনেক পরিণত দেখাল। ৭১ থেকে টিমকে টানলেন। নিজের টেস্ট কেরিয়ারে চার নম্বর সেঞ্চুরিটাও করে গেলেন। টেস্টে টেলএন্ডারদের নিয়ে ব্যাট করতে দেখার মতো বিরল দৃশ্য ফিরিয়ে আনলেন পন্থ। বারবার সমালোচনার মুখে পড়া তরুণ ক্রিকেটার যে ম্যাচ উইনার, তা আবার প্রমাণ করে দিয়ে গেলেন দুরন্ত একটা সেঞ্চুরি করে। পন্থ যদি না খেলতেন, তা হলে এলগারদের ২১২ রানের লক্ষ্যও দিতে পারত না ভারত।

২১২ রানের পুঁজি নিয়ে কি টেস্ট জেতা যায়? যায়, যদি বোলিং ইউনিট দুরন্ত পারফর্ম করে। বুমরা-সামিদের ভারতীয় পেস বোলিং বিদেশে অত্যন্ত সফল। কিন্তু ২১২ রানের পুঁজি হাতে থাকলে বিপক্ষের বেশ কয়েকটা উইকেট দ্রুত ফেলতে হয়। বুমরা-সামিরা সেটা পারেননি। অবশ্য ভারতীয় পেসারদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। ব্যাটসম্যানরা যদি রান না দিতে পারেন, তা হলে লড়বেন কি করে? কেপ টাউনের প্রথম ইনিংসে টিমকে টেনেছিলেন একা বিরাট। দ্বিতীয় ইনিংসে টানলেন একা ঋষভ পন্থ। বাকিরা প্রথম ইনিংসে যেমন, দ্বিতীয় ইনিংসেও রান পাননি। ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল প্রথম টেস্টে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। লোকেশ রাহুলের ব্যাটে সেঞ্চুরিয়নে ছিল সেঞ্চুরি। বিরাটও চেষ্টা করেছেন বিপদের সময় টিমকে টানার। কিন্তু চেতেশ্বর পূজারা আর অজিঙ্ক রাহানে ফের ব্যর্থ। জোহানেসবার্গে দু’জনের ব্যাটেই ছিল হাফসেঞ্চুরি। মনে করা হয়েছিল, এ বার হয়তো বড় রান দেখা যাবে তাঁদের ব্যাটে। কিন্তু কেপ টাউনে পা দিয়েই নিরাশ করলেন তাঁরা।

প্রশ্ন হচ্ছে, রাহানে-পূজারা কি কেরিয়ারের শেষ টেস্ট খেলে ফেললেন কেপ টাউনে? সূর্যকুমার যাদব, শ্রেয়স আইয়ার, হনুমা বিহারীরা অপেক্ষা করছেন ড্রেসিংরুমে। বিদেশে অতীতের পারফরম্যান্স দিয়ে যে বেশি দিন টিমে থাকা যাবে না, এই দুই সিনিয়র ভালো জানেন। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ রয়েছে ফেব্রুয়ারিতে। পূজারা, রাহানেকে বাদ দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে দেখে নেওয়ার সেরা সুযোগ। শ্রেয়স এমনিতেই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে সুযোগের অপেক্ষায়। রোহিত ফিরবেন টিমে। শুভমন গিলও হয়তো ফিরবেন। রাহানে-পূজারাকে ঘরোয়া ক্রিকেটে আবার প্রমাণ করে ফিরতে হবে টিমে।

যা পরিস্থিতি, কেপ টাউনে ভারতের টেস্ট ও সিরিজ জেতার সম্ভাবনা খুব কম। অন্তত পরিস্থিতি তাই বলছে। যদি না সামি-বুমরা জুটি বিস্ফোরক পারফর্ম করেন। টেস্ট ক্রিকেটের এটাই তো সবচেয়ে আশ্চর্যের দিক। কে যে কোন দিন ঋষভ পন্থ হয়ে উঠবেন, কে জানে!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ১৯৮ (পন্থ নট আউট ১০০, বিরাট ২৯, জেনসেন ৪-৩৬, রাবাডা ৩-৫৩, লুঙ্গি ৩-২১)। দক্ষিণ আফ্রিকা ১০২-২ (পিটারসেন নট আউট ৪৮, এলগার ৩০, সামি ১-২২, বুমরা ১-২৯)।