ভারত-অস্ট্রেলিয়া পাঁচ ম্যাচের সিরিজ। জয় দিয়ে শুরু করেছিল ভারত। দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সমতা ফিরিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ব্রিসবেন থেকে নতুন লড়াই শুরু। টস জিতে রোহিত শর্মা ফিল্ডিং নিতেই আলোচনা শুরু। ব্রিসবেনে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা কঠিন। পিচে ফাটল ধরে। ফলে অসমান বাউন্সে সমস্যায় পড়তে বাধ্য ব্যাটাররা। তেমনই স্পিনাররাও সুবিধা পেয়ে থাকেন। রোহিত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু শুরুর দিকের বোলিং ভালো হয়নি। লেন্থ ঠিক রাখতে পারছিলেন না বুমরা-সিরাজ। প্রথম পরিবর্ত হিসেবে আক্রমণে আকাশ দীপ। তাঁর বোলিংয়ে বাকি দু-জনের কাছেও যেন পরিষ্কার হয়, এই পিচে কোন লেন্থে বোলিং করলে সাফল্য মিলতে পারে। যদিও প্রথম দিন মাত্র ১৩.২ ওভার খেলা হয়েছে। ভারত কোনও উইকেট নিতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়া তুলেছে মাত্র ২৮ রান। ব্রিসবেন টেস্টে বারবার উঠে এল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় প্রসঙ্গ। এর কারণ দুটো।
রোহিতও কি সৌরভের মতো সিদ্ধান্ত নিলেন? টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার পরই এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছিল। ২০০৩-০৪ অস্ট্রেলিয়া সফর। ক্যাপ্টেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় ক্যাপ্টেনকে চাপে রাখার চেষ্টা হবে, এটাই স্বাভাবিক। ভারতের প্রত্যেক ক্যাপ্টেনই এই স্বাদ পেয়েছেন। রোহিতও প্রবল চাপে। ব্যাটে রান নেই। গত ম্যাচে হার। ২০০৩-০৪ সফরে ব্রিসবেনে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও টস জিতেছিলেন। তিনিও অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু দলকে উদ্ধারও করেছিলেন সৌরভই।
রোহিত শর্মা একে বারেই ছন্দে নেই। গত ১২ টেস্ট ইনিংসে মাত্র ২ বার ২০-র কোটা পেরিয়েছেন রোহিত। মাত্র একটি হাফসেঞ্চুরি। অ্যাডিলেডে দু-ইনিংসে করেছিলেন যথাক্রমে ৩ ও ৬ রান। এখানে প্রেরণা হতে পারেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ক্যাপ্টেনকে সে বারও টার্গেট করেছিল অস্ট্রেলিয়া। চিন মিউজিক শোনানোর বার্তা দিয়েছিল। বিশেষ করে ২০০১ সালে ভারত সফরে আসা অজি দলের সদস্যরা। ২০০১ সালে ইডেন টেস্টের তিক্ত অভিজ্ঞতা, অজি শিবিরকে বেশিই তাতিয়ে রেখেছিল।
কেরিয়ারের শেষ টেস্ট সিরিজ খেলতে নামা স্টিভ ওয়া প্রথম ম্যাচেই সৌরভ এবং ভারতীয় টিমকে চাপে রাখতে চেয়েছিলেন। আর ব্রিসবেন ছিল তাদের দুর্গ। কিন্তু স্টিভ ওয়ার সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে ৩২৩ রানেই অলআউট করে ভারত। জাহির ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। অজিত আগরকর তিন উইকেট। জবাবে মাত্র ৬২ রানে তিন উইকেট হারায় ভারত। আকাশ চোপড়া এবং ভিভিস লক্ষ্মণের সঙ্গে দুর্দান্ত জুটি গড়েন ক্যাপ্টেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। চিন মিউজিক শোনেননি, নিজের ব্যাটিংয়ে জবাব দিয়েছিলেন। ১৪৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন সৌরভ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেটিই ছিল তাঁর প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। ম্যাচটি অবশ্য ড্র হয়েছিল।
রোহিতও টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছেন। ব্যাট করবেন মিডল অর্ডারে। ম্যাচের এখনও অনেক বাকি। প্রথম দিন একটা সেশনও খেলা হয়নি। প্রথমত অস্ট্রেলিয়াকে দ্রুত অলআউট করতে হবে। এরপর ব্যাটিং। দল বিপদে পড়লে সৌরভের মতো একটা ইনিংস খেলতে পারবেন তো রোহিত?