কলকাতা : সাফল্য কে না চায়! অসংখ্য কঠিন সিঁড়ি টপকে কেউ কেউ সাফল্যের শিখরে উঠতে পারে। সেই সংখ্যা এত নগন্য বলেই সাফল্যের মঞ্চে পা রাখা মানুষজন জানেন, কতটা ঘাম-রক্ত ঝরালে তবে সফল বন্ধনীতে ঢোকা যায়। কেউ কেউ সাফল্যের এই রসায়ন খুব অল্প বয়সেই বুঝে যান। কোন পথে হাঁটলে সফল হওয়া যাবে, তা বুঝতে পেরে সেই পথই বেছে নেন তাঁরা। যশস্বী জয়সওয়ালের (Yashasvi Jaiswal) ক্ষেত্রেও এই কথা প্রযোজ্য। মাত্র ১৩ বলে আইপিএলের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি করেছেন। টুর্নামেন্টে করে ফেলেছেন ৫০০র বেশি রান। সদ্য ২০ পেরনো এই ছেলের তাণ্ডব দেখে থমকে গিয়েছেন সবাই। দীর্ঘ ঝড়ঝাপটা, অন্ধকারময় পথ পেরিয়ে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। অনেকেই যশস্বী জয়সওয়ালকে দ্রুত জাতীয় টিমে দেখতে চাইছেন। বিরাট কোহলির মতো আইকন পর্যন্ত তাঁর ইনিংস দেখে মুগ্ধ। এই যশস্বীর উত্থান হল কী ভাবে? কোচের কয়েকটা কথাই বদলে দিয়েছে তাঁর ভাবনা, দেখার চোখ, পরিশ্রমের মাত্রা, সাফল্য ছোঁয়ার তাগিদ। ছাত্রকে কি এমন বলেছিলেন কোচ জ্বালা সিং? বিস্তারিত TV9Bangla Sports এ।
তখন কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন যশস্বী। উত্তর প্রদেশের ছেলে ক্রিকেটার হওয়ার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বইয়ে। সে সময় শিবাজী পার্কের ক্লাব তাঁবুতে রাত কাটত যশস্বীর। ক্লাবের মালি প্রায়ই বের করে দিতেন তাঁকে। তবু হারিয়ে যাননি। কিশোর বয়স থেকেই একটা জিনিস বুঝে গিয়েছিলেন, ভাগ্য বদলাতে হলে লড়াই করতে হবে। জ্বালা সিং তখন থেকেই তাঁর কোচ। একটা ম্যাচে প্রতিভাবান ব্যাটারকে হাফসেঞ্চুরি করতে দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন কোচ জ্বালা। যশস্বীকে মেসেজ করে বলেছিলেন, ‘যদি অন্যদের থেকে আলাদা হতে হয়, তা হলে দারুণ কিছু করতে হবে।’ কোচের এই কথা শোনার পর আর পিছন ফিরে তাকাননি যশস্বী। ঠিক করে নিয়েছিলেন, কী চান তিনি। ফোকাসড রেখেছিলেন নিজেকে। এখন সেই ফসল তুলছেন যশস্বী। কেকেআরের বিরুদ্ধে আইপিএলে তাঁর নট আউট ৯৮ রানের দুরন্ত ইনিংস দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন ক্রিকেট ভক্তরা।
সেই ছাত্রকে দেখে কোচ জ্বালা সিং এখন কী বলছেন? তাঁর কথায়, ‘আইপিএলে তারকাদের মাঝে যে ভাবে ও খেলছে, এই স্বপ্নটাই তো দেখেছি এতদিন। এখন সেটা বাস্তব হয়ে গিয়েছে।’ সেই জ্বালাই বলছেন, ‘মার্চ মাসে ইরানি ট্রফির একটা ম্যাচের পর ওকে মেসেজ করেছিলাম, যদি অন্যদের থেকে আলাদা হতে হয়, লোকে হাততালি দিল কিনা, সেটা নিয়ে ভেব না। তোমাকে দারুণ কিছু করতে হবে। ডাবল সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি সহ সাড়ে ৩০০র উপর রান করেছিল। আইপিএলের আগে থেকেই ও তৈরি করেছিল নিজেকে। এখন সেটাই কাজে লাগাচ্ছে।’
যশস্বীকে বিশ্ব টেস্ট ফাইনালের টিমে নেওয়া উচিত, এই মর্মে জোরালো সওয়াল তুলে দিয়েছেন ক্রিকেট মহলের অনেকেই। মাইকেল ভনের মতো প্রাক্তন বলেই দিয়েছেন, ‘যশস্বী আগামী দিনের তারকা। আমি হলে ওকে বিশ্ব টেস্ট ফাইনালের টিমে রাখতাম।’