Shafali Verma: বোন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, দাদার ক্রিকেট কেরিয়ারের কী হল!

India Women's Cricket: সঞ্জীব ভার্মার ইমিটেশন জুয়েলারির দোকান রয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি সেই কাজে সাহায্য করেন সাহিল। সুযোগ দু-জনেই পেয়েছিলেন। বোন ইতিহাস গড়েছেন। মেয়েদের ক্রিকেটে প্রথম বার কোনও আইসিসি ট্রফি জিতেছে ভারত।

Shafali Verma: বোন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, দাদার ক্রিকেট কেরিয়ারের কী হল!
Image Credit source: OWN Photograph
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 05, 2023 | 9:45 AM

কলকাতা : সে দিন যদি দাদার জ্বর না থাকতো! শেফালি ভার্মার কেরিয়ার কোন খাতে বইত? এটকু পড়ে বোঝা হয়তো সম্ভব নয়। আরও একটু বিস্তারে বলা যাক। সদ্য বিশ্বচ্য়াম্পিয়ন হয়েছে অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতের মেয়েদের ক্রিকেট দল। নেতৃত্ব দিয়েছেন শেফালি ভার্মা। তাঁর ক্রিকেটার হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছে অনেক কাহিনি। লাহলিতে সচিন তেন্ডুলকরের ম্যাচ দেখা থেকে ক্রিকেট প্রেম গভীর হওয়া। তার আগে থেকে দাদা, বাবার সঙ্গে এমনিই প্লাস্টিকের ব্য়াট-বলে ক্রিকেট চলত শেফালির। তাঁর দাদা সাহিল ভার্মা ততদিনে অ্যাকাডেমিতে ক্রিকেট শিখছেন। দেশের আর দশটা উঠতি ক্রিকেটারের মতো সাহিলেরও স্বপ্ন ছিল বড় মঞ্চে এগিয়ে যাওয়ার। তারপর কী হল? বিস্তারিত TV9Bangla-য়।

শেফালির বয়স তখন ৮ বছর। সাহিলের একটি ম্যাচ ছিল পানিপথে। অনূর্ধ্ব ১২ টুর্নামেন্ট। ম্য়াচের আগের দিন থেকেই প্রচণ্ড জ্বর সাহিলের। অগত্য়া তাঁর জায়গায় ম্যাচ খেলতে যান ছোট্ট শেফালি। হ্যাঁ, ছেলেদের ম্যাচেই খেলেছিলেন। ম্য়াচের সেরার পুরস্কার জিতে ফিরেছিলেন। ধীরে ধীরে ক্রিকেটে এগোতে থাকেন শেফালি। অনূর্ধ্ব ১৬, অনূর্ধ্ব ১৯ রাজ্য দলে সুযোগ মেলে। খুব কম বয়সেই অনূর্ধ্ব ১৯ রাজ্য দলের হয়ে অনবদ্য পারফর্ম করেন। তাঁর ধারাবাহিকতা নজরে পড়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। মেয়েদের মিনি আইপিএল অর্থাৎ চ্যালেঞ্জার্সে মিতালি রাজের দলে সুযোগ পান শেফালি। মিতালি রাজ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর জাতীয় দলেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিয়মিত যান শেফালি। ধারাবাহিকতার পুরস্কার মেলে খুব তাড়াতাড়িই। ওয়ান ডে এবং টেস্টও খেলার সুযোগ পান। সিনিয়র দলের হয়ে ২০২০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং গত বছর বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসেও ভারতীয় ব্য়াটিংয়ের অন্য়তম ভরসা ছিলেন শেফালি। উদ্বোধনী মেয়েদের অনূর্ধ্ব ১৯ টি-টোয়েন্টি শেফালির নেতৃত্বেই দল পাঠায় ভারতীয় বোর্ড। চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরেছে। অথচ তাঁর আগে কেরিয়ার শুরু করা দাদা সাহিলের কেরিয়ার এগোয়নি।

SHAFALI_CHILDHOOD

সেদিন সাহিলের জ্বর না থাকলে কিংবা শেফালি সেই ম্যাচে না খেললে, পরিস্থিতি কি অন্য়রকম হতে পারতো! সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া কঠিন। কিন্তু সাহিল ক্রিকেট ছেড়ে দিয়েছেন। শেফালির বাবা সঞ্জীব ভার্মা টিভি নাইন বাংলাকে বলেন, ‘সাহিল এখন ক্রিকেট থেকে দূরে। কারণ, ওকে যখন ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করি, তখনই বলে দিয়েছিলাম, ১৯ বছর অবধি তোমার। এর মধ্যে ক্রিকেটে ভালো কিছু করতে পারলে এটাতেই এগোবে। আর না হলে,আমি যা বলব তাই হবে। মেয়ে পারলো, সাহিল খুব বেশি কিছু করতে পারেনি। সে ভাবে সুযোগও পায়নি। সাহিলের এখন ২০ বছর বয়স। ওকে বলে দিয়েছি- দেখো, খুব বেশি সুযোগ তুমি পাওনি ক্রিকেটে। বেকার এটার জন্য় পড়ে থেকো না। এ বার বিকল্প ভাবো। ও এখন বি.এ ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে। আমার কাজেও সাহায্য করছে।’

সঞ্জীব ভার্মার ইমিটেশন জুয়েলারির দোকান রয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি সেই কাজে সাহায্য করেন সাহিল। সুযোগ দু-জনেই পেয়েছিলেন। বোন ইতিহাস গড়েছেন। মেয়েদের ক্রিকেটে প্রথম বার কোনও আইসিসি ট্রফি জিতেছে ভারত। শেফালির নেতৃত্বেই এমনটা হয়েছে। সাহিল এই বিষয়টাকে কীভাবে দেখছে? সঞ্জীব ভার্মা জানালেন, ‘সাহিল বাস্তবটাকে মেনে নিয়েছে। দেখুন, না তো ও কোনও টিমে সুযোগ পেয়েছে, অনূর্ধ্ব ১৯ হরিয়ানার দলেও সুযোগ পায়নি। জীবনের বাকি সময়টা তো এ ভাবে নষ্ট করা যাবে না। ওকে সেটাই বুঝিয়েছি। ওকে বলেছি, অন্য় কিছু ভাবো। পড়াশোনা কর, সরকারি চাকরি হোক বা ব্যবসা যাই করো, ক্রিকেটের বাইরে ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু ভাবো। ও মানসিকভাবে খুবই শক্ত। ও নিজেও জানে, যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনও ভাবে এগোতে পারেনি। মেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে, এখন দেখুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও হয়েছে।’

SHAFALI_BROTHER

বিশ্বকাপ জিতে দেশেও ফিরেছিলেন শেফালি। আমেদাবাদে ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া চ্য়াম্পিয়ন দলকে। যদিও বাড়ি আসার সুযোগ পাননি শেফালি। পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। এ বার সিনিয়র দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবেন শেফালি। দাদা সাহিলের লক্ষ্য কী? সঞ্জীব ভার্মা জানালেন, এখন ২-৩ বছরের পরিকল্পনা। সরকারি-বেসরকারি চাকরি, ব্যবসা, কিছু একটা করবে।