সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্তী
বাঁ হাতির আউট সুইং কতটা ঘাতক হতে পারে? অফস্টাম্পে পড়ে গোঁত্তা খেয়ে ভিতরে যখন আসে, সামলাতে হিমশিম খান সেরা ব্যাটাররা। ওয়াসিম আক্রমকে এই কারণে সুইংয়ের সুলতান বলা হত। তাঁর মসনদে এখন নতুন নবাব শাহিন শাহ আফ্রিদি (Shaheen Shah Afridi)। দুটো পর পর ইনসুইং বল। আসলে ব্যাটারকে বিভ্রান্ত করা। তিন নম্বরটা তীব্র গতিতে আছড়ে পড়ল। তাতে যে আউট সুইং মেশানো আছে, রোহিত শর্মার বুঝতে সময় লেগেছিল। ততক্ষণ লাল বাতি জ্বালিয়ে দিয়েছে বেল। ডানহাত মুঠো করে আগ্রাসন দেখাচ্ছেন আফ্রিদি। পুরো টিম লাফাচ্ছে উল্লাসে। বছর দুয়েক আগে আমিরশাহি টি-টোয়েন্টিতে এমনই ডেলিভারিতে ফিরেছিলেন রোহিত। ক্যান্ডিতেও এশিয়া কাপে (Asia Cup 2023) ঘটল তাই। শুধু কি রোহিত, বিরাট কোহলিও তাঁর পকেটে! এই শাহিন এমন ঘাতক বোলার কেন? এই প্রজন্মের সেরা বাঁ হাতি পেসার? আক্রমের যোগ্য উত্তরসূরি? TV9Bangla Sports খোঁজ দিল।
ভারতীয় টিমের স্তম্ভ রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি। দলে যে পরিবর্তনই আসুক না কেন, বিরাট-রোহিত নির্ভরতা কমেনি। শুরুতেই রাজা-মন্ত্রীকে ড্রেসিংরুমে ফেরাও— এই মন্ত্রই আওড়াচ্ছিল পাক টিম। অস্ত্রে বেশ ভালো শান দিয়ে এসেছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। এশিয়া কাপে ভারতের যাত্রা শুরু হল নড়বড়ে। ভারত-পাক ম্যাচের শুরুটা মোটেও টিম ইন্ডিয়ার সমর্থকদের মনের মতো হল না। যে দলে শাহিন আফ্রিদির মতো তুরুপের তাস থাকে, তারা যে কোনও সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও রাখে। ক্যান্ডিতে শুধু রোহিত ও বিরাটকে পর পর ফিরিয়ে টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং নাড়িয়ে দিলেন পাক টিমের অন্যতম অস্ত্র শাহিন শাহ আফ্রিদি। এশিয়া কাপে ভারত-পাক ম্যাচ দেখতে দেখতে অনেকের মনে পড়ার কথা ২০২১ টি-২০ বিশ্বকাপের। ভারতের সেরা অস্ত্র কী ভাবে ভোঁতা করতে হয়, তা তখনও অজানা ছিল না শাহিনের। এখনও না…
টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে আগুনে ফর্মে দেখা গেল শাহিন আফ্রিদিকে। ভারত-পাক ম্যাচে বৃষ্টির কারণে বারবার বাধা পড়েছে। বৃষ্টি বিরতি মানেই ছন্দপতন। বৃষ্টির পর শাহিন যেন আরও বেশি এনার্জি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। আর বাজিমাতও করলেন। দুই ওভারের মধ্যে রোহিত ও বিরাটকে বোল্ড করেছেন শাহিন। এই প্রথম বার এক ইনিংসে বিরাট ও রোহিতকে বোল্ড করলেন।
ক্যান্ডিতে শাহিন যেন ঘটালেন ২০২১ টি-২০ বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি। ২০২১ এর ২৪ অক্টোবরের ম্যাচে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির পাশাপাশি শাহিনের ঝুলিতে এসেছিল লোকেশ রাহুলের উইকেটও। এরপর অবশ্য ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর এশিয়া কাপের ম্যাচে মেলবোর্নে ভারতের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন শাহিন। তাতে অবশ্য তিনি কোনও উইকেট পাননি। এরপর চোটের কারণে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরেও কাটিয়েছিলেন শাহিন। কিন্তু শাহিন যে কৌশলে বিরাট-রোহিতদের ফাঁসানো রপ্ত করে নিয়েছেন, তা স্থান-কাল টুর্নামেন্ট বদলে গেলেও স্পষ্ট।