
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রিন্স অফ কলকাতা, দাদা, মহারাজ। ক্রিকেট মাঠে হোক বা ক্রিকেটের বাইরে। তাঁর ‘দাদাগিরি’ সর্বত্র। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনায় জর্জরিত ভারতীয় ক্রিকেটকে নতুন আলো দেখিয়েছিল সৌরভের টিম ইন্ডিয়া। একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটারকে নিয়ে গড়েছিলেন স্বপ্নের দল। দীর্ঘ ২৮ বছরের ব্যবধানে ২০১১ সালে অবশেষে দ্বিতীয় বার ওয়ান ডে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। কিন্তু এই সাফল্যের বীজ বুঁনেছিলেন সৌরভই। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে সৌরভের নেতৃত্বেই ফাইনাল খেলেছিল ভারত। সে বার চ্যাম্পিয়ন হয়নি। তবে একঝাঁক চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার দিয়েছিল। ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মদিনে TV9Bangla Sports-এর বিশেষ প্রতিবেদন।
অধিনায়ক সৌরভের সাফল্য ট্রফি দিয়ে বিচার করা সম্ভব নয়। ভারতীয় ক্রিকেটে লড়াইয়ের যে সৌরভ ছড়িয়েছিলেন, তা আজও বর্তমান। ক্রিকেট আগ্রাসন নিয়ে এখন অনেক কথাই হয়। আসল আগ্রাসন যেন দেখিয়েছিলেন সৌরভ। তাঁর নেতৃত্বে কিছু মুহূর্তের উদাহরণ দেওয়া যাক। যা ভারতীয় ক্রিকেটে নবজাগরন এনেছিল।
ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি- ২০০২ সালের ত্রিদেশীয় ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়। ফাইনালে ৩২৬ রানের বিশাল লক্ষ্য। ভারতীয় ক্রিকেটের অতি বড় সমর্থকও প্রত্যাশা করেননি এই ম্যাচ জেতা সম্ভব। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বীরেন্দ্র সেওয়াগের শতরানের ওপেনিং জুটি। যদিও এরপরই বিপর্যয়। দ্রুত ভারতের স্কোর ১৪৬-৫ হয়ে যায়। ভারতীয় শিবির আশা হারায়নি। দুই তরুণ তুর্কী যুবরাজ সিং এবং মহম্মদ কাইফ অনবদ্য পারফর্ম করেন। যুবরাজ সিং ৪২তম ওভারে আউট হন। তখনও ৫৯ রান প্রয়োজন ভারতের। লোয়ার অর্ডারকে সঙ্গে নিয়ে ভারতকে জয়ের সীমানা পার করান মহম্মদ কাইফ। সৌরভের নেতৃত্বে লড়াইয়ের অন্যতম উদাহরণ তৈরি হয় এই ফাইনাল থেকেই।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি- ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ের বছরই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যুগ্মবিজয়ী ভারত। সৌরভের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলই অ্যাডভান্টেজ ছিল। বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফাইনাল গড়ায় রিজার্ভ ডে-তে। যদিও প্রবল বৃষ্টিতে ম্যাচ সম্পূর্ণ করা যায়নি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ট্রফি ভাগাভাগি হয়।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের টেস্ট রেকর্ড হতাশার। ১৯৯৯ সালেও অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজে ০-৩ ব্যবধানে হারে ভারত। তবে ২০০৩ সালে সৌরভের নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া ১-১ ড্র করে। সে সময় ভারতীয় ক্রিকেটে এই ড্র ছিল অনেক বড় জয়ের সমান। ব্রিজবেনে ১৪১ রানের অনবদ্য ইনিংসে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অন্যতম সেরা ইনিংস ধরা হয় সৌরভের এই পারফরম্যান্সকে।
সৌরভের নেতৃত্বে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট এবং ওডিআই সিরিজ জয়। ২০০৪ সালে পাকিস্তান সফরে ২-১ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ এবং ৩-২ ব্যবধানে ওডিআই সিরিজ জেতে ভারত। এই সফরে শুধু সিরিজ নয়, দিলও জিতেছিল ভারত।
ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। তরুণ দল দিয়ে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছে ভারত। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খুব কাছ থেকে ফিরতে হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই বিশ্বকাপে নজর কেড়েছিল বীরেন্দ্র সেওয়াগ, জাহির খান, আশিস নেহরার মতো তরুণ ক্রিকেটাররা। ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন এরাও।