
রাঁচি: রবিরাতে মহেন্দ্র সিং ধোনির শহরে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে (ODI) সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিল মেন ইন ব্লু। সেই লক্ষ্য পূরণ করল টিম ইন্ডিয়া। প্রথমে সিরাজ-শাহবাজদের বোলিং, তার পর টিম ইন্ডিয়ার দারুণ রান তাড়া, সব মিলিয়ে রবিবার রাঁচিতে রাজ করল মেন ইন ব্লু। শ্রেয়স আইয়ারের সেঞ্চুরি, ঈশান কিষাণের দাপটে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা (India vs South Africa) সিরিজ এখন দাঁড়িয়ে ১-১।
ভারত ২৮২-৩ (৪৫.৫ ওভার)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২৭৮-৭ (৫০ ওভার)
২৭৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শিখর ধাওয়ান ও শুভমন গিলের ওপেনিং জুটিতে ওঠে ২৮ রান। পরপর দুই ম্যাচে রান পেলেন না ভারত অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ান ডে-তে মাত্র ৪ রান করেছিলেন গব্বর। আজ রাঁচিতে ২০ বল খেলে মাত্র ১৩ রান করে ফিরলেন। ৯ ওভারের মাথায় শুভমন গিলের উইকেট তুলে নেন রাবাডা। গিল করেন ২৮ রান। এরপর তৃতীয় উইকেটে সহ-অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ও ঈশান কিষাণ জমাট জুটি বাঁধেন। শ্রেয়স-ঈশানের ১৬১ রানের পার্টনারশিপ ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। দুরন্ত ফর্মে থাকা ঈশান সেঞ্চুরির সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। শেষ বেলায় শতরান থেকে ৭ রান বাকি থাকাকালীন উইকেট দিয়ে বসেন ঈশান। ৯৩ রানের দুরন্ত ইনিংস গড়ার পথে ৪টি চার ও ৭টি ছয় এসেছে ঈশানের ব্যাটে।
ঈশান কিষাণ ঘরের মাঠে ওয়ান ডে কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়ে গেলে আজকের ম্য়াচটা জমে যেত। একদিক থেকে শ্রেয়সের চাপ কমিয়ে আসছিলেন। তিনি ড্রেসিংরুমে ফিরলে সঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন শ্রেয়স। সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়ে, সিরিজে সমতা ফিরিয়ে মাঠ ছাড়লেন ধাওয়ানের ডেপুটি। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ওয়ান ডে ক্রিকেটে আজ দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করলেন শ্রেয়স। ১১৩ রানের অপরাজিত ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন শ্রেয়স। শেষ অবধি তাঁর সঙ্গে ক্রিজে ছিলেন সঞ্জু। তিনি ৩০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন তেম্বা বাভুমার পরিবর্তে প্রোটিয়া দলকে নেতৃত্ব দেওয়া কেশব মহারাজ। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই কুইন্টন ডি’ককের উইকেট এনে দিয়ে শুরুটা ভালো করেছিলেন মহম্মদ সিরাজ। ১০ ওভারের মাথায় জানেমন মালানের উইকেট তুলে নেন বাংলার শাহবাজ আহমেদ। আন্তর্জাতিক ওয়ান ডে অভিষেক ম্যাচে এটিই শাহবাজের প্রথম উইকেট। শুরুতে ডি’ককদের ওপর যে চাপটা ভারত তৈরি করেছিল, তা আর ধরে রাখতে পারেনি। যার ফলে তৃতীয় উইকেটে রিজা হেন্ড্রিক্স ও এইডেন মার্করাম দারুণ পার্টনারশিপ গড়েন। এই বিধ্বংসী জুটিকেও শেষ অবধি ভাঙেন ভারতীয় পেসার সিরাজ। এরপর পরপর দুই ওভারে হেনরিখ ক্লাসেন ও মারকাটারি মার্করামের উইকেট তুলে নেন কুলদীপ যাদব এবং ওয়াশিংটন সুন্দর। এই দু’জন ফেরার পর ম্যাচে ফেরে ভারত। ১০ ওভারে ৩৮ রান খরচ করে ৩টি উইকেট তুলে নিয়েছেন সিরাজ। ৩৭তম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০ রানে পৌঁছে গিয়েছিল। সেখান থেকে পরের ১৩ ওভারে ৭৮ রানের বেশি তুলতে পারল না প্রোটিয়ারা। শেষ ওভারে বল হাতে অনবদ্য সিরাজ। একটি উইকেট তুলে নেওয়ার পাশাপাশি তিন রান দেন সিরাজ। টি-২০ ক্রিকেটে ভারতের ডেথ ওভারে বোলিং নিয়ে চিন্তা থাকলেও, ওয়ান ডে ক্রিকেটে ডেথ ওভারে ভালো বল করেছেন সিরাজরা। এবং ডেথ ওভারে ক্রমাগত প্রোটিয়াদের ওপর চাপ ধরে রাখায় ৩০০-র গণ্ডিতে পৌঁছতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বাধিক রান করেছেন এইডেন মার্করাম (৭৯)। দ্বিতীয় সর্বাধিক রান এসেছে (৭৪) রিজা হেন্ড্রিক্সের ব্যাটে। ভারতের হয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন মহম্মদ সিরাজ। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহবাজ আহমেদ, ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলদীপ যাদব ও শার্দূল ঠাকুর। ৭ ওভার বোলিং করেও কোনও উইকেট পাননি আবেশ খান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: দক্ষিণ আফ্রিকা ২৭৮-৭ (এইডেন মার্করাম ৭৯, রিজা হেন্ড্রিক্স ৭৪, মহম্মদ সিরাজ ৩-৩৮, শার্দূল ঠাকুর ১-৩৬)
ভারত ২৮২-৩ (শ্রেয়স আইয়ার ১১৩*, ঈশান কিষাণ ৯৩, সঞ্জু স্যামসন ৩০*, ওয়েন পার্নেল ১-৪৪, বিয়ন ফরচুন ১-৫২)।