
কলকাতা: মানসিক স্বাস্থ্য। এখন অনেক বেশি আলোচনায় আসে। সমস্যাটা প্রথম নয়। বিশেষ করে ক্রীড়াবিদদের জীবনে। নিজের প্রত্যাশা, সঙ্গে লাখো মানুষের। ফর্মের সঙ্গে লড়াই। যতক্ষণ ধারাবাহিকতা বজায় থাকে, সব ভালো। ফর্ম খারাপ হলেই পথ হারায়। সেটা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, সারা টেলর, নাওমি ওসাকা, বেন স্টোকস হোন বা আমাদের শ্রেয়স আইয়ার। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে লড়াই করতে হয় সকলকেই। বিরাট কোহলি সরাসরি এই কারণে ব্রেক না নিলেও বারবার তাঁর মুখেও মানসিক স্বাস্থ্যর কথা উঠে এসেছে। প্রায় তিন বছর সেঞ্চুরি না পাওয়ায় যে ভাবে সমালোচনা চলছিল, তাতে খেলার ইচ্ছেটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন কিং কোহলি। শ্রেয়স আইয়ারের ঠিক কী হয়েছিল? বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
সে যদিও অনেক আগের কথা। শ্রেয়সের বয়স তখন সবে ১৬। একজন উঠতি ক্রিকেটারের কাছে ভবিষ্যতের ভাবনা আরও অনেক বেশি। দীর্ঘ দিন পারফর্ম করতে না পারায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন শ্রেয়স। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছেন শ্রেয়স আইয়ারের বাবা সন্তোষ আইয়ার। ২০১০-২০১১ মরসুম। জুনিয়র ক্রিকেটে খেলছিলেন শ্রেয়স। কিন্তু রান আসছিল না। মানসিক ভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলেন বর্তমানে ভারতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ঘরের মাঠে ওয়ান ডে বিশ্বকাপেও দারুণ পারফর্ম করেছেন। শ্রেয়সের বাবা তুলে ধরেছেন সেই সময়কার কথা। যার জেরে শ্রেয়সকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞর কাছে কাউন্সেলিংয়ের জন্য নিয়ে যেতে হয়েছিল।
ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের একটি শোয়ে সন্তোষ আইয়ার বলেছেন, ‘একজন কোচ আমাকে জানায়, শ্রেয়স ফোকাস হারাচ্ছে। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও কোনও একটা সমস্যায় নিজেকে মেলে ধরতে পারছে না। হতে পারে ও কোনও সম্পর্কে জড়িয়েছে কিংবা এমন কোনও সঙ্গতে জড়িয়ে পড়েছে, যার জন্য নিজের লক্ষ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।’
কোনও কোচের কাছ থেকে ছেলের সম্পর্কে এমন কথা শুনলে বেশির ভাগ বাবা হয়তো ছেলে বকাঝকা কিংবা মারধর করতেন। সন্তোষ আইয়ার সেই পথে হাঁটেননি। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক এবং বাবা হিসেবে ছেলেকে নিয়ে ক্রীড়া মনোবিদের কাছে। ছেলে যাতে মানসিক ভাবে কোনও সমস্যায় জড়িয়ে থাকে, সেখান থেকে বেরনোর উপায় খোঁজার চেষ্টা করেন সন্তোষ আইয়ার। শ্রেয়স যেন হারানো ফোকাস ফিরে পান। কারণও খুঁজে পাওয়া যায়। ব্য়াট হাতে বড় ইনিংস খেলতে না পারায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন শ্রেয়স। মনোবিদও কাউন্সেলিংয়ের পর সেটাই জানিয়েছিলেন শ্রেয়সের বাবাকে।
ক্রীড়া মনোবিদের কাছে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দারুণ ভাবে কাজে লেগেছিল। দ্রুতই খারাপ ফর্ম থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন শ্রেয়স। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আজ থেকে শুরু হচ্ছে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা বক্সিং ডে টেস্ট। নজর থাকবে শ্রেয়সের ওপরও।