সুপ্রিয় ঘোষ
ফুটবল বিশ্বকাপ (FIFA World Cup) শুরু হয় আজ থেকে প্রায় ৯২ বছর আগে, ১৯৩০ সালে। সে বছর বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসেছিল লাতিন আমেরিকান দেশ উরুগুয়েতে (Uruguay)। ফাইনালে আর এক লাতিন আমেরিকান দেশ আর্জেন্টিনাকে (Argentina) ৪-২ গোলে হারিয়ে ট্রফি নিজেদের দেশ থেকে বেরোতে দেয়নি ‘লা সেলেস্তে’রা (La Celeste)। আর এই বছর কাতারে(Qatar) বসতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম সংস্করণ। এই বছর অনুষ্ঠিত হতে চলা বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতার। ফলে প্রথম দেশ হিসাবে অবশ্যই এই বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে এশিয়া মহাদেশের এই দেশ। এবং জোয়েল ক্যাম্পবেলের গোলের সুবাদে ৩২তম দেশ হিসাবে এই বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা পাকা করেছে কোস্টারিকা (Costa Rica)।
কিন্তু এমন এবারের বিশ্বকাপে এমন কিছু প্রথমবার ঘটতে চলেছে বা বলা ভাল ঘটে গিয়েছে যা অবশ্যই গর্বিত করবে আপনাকে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এশিয়া (Asia) মহাদেশে বসতে চলেছে ফুটবলের এই মহাযজ্ঞের আসর। এর আগে ২০০২ সালে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এবারে এশিয়া(AFC) থেকে মোট ৬টি দেশ বিশ্বকাপে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে, যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথম। এর আগে কোনও বিশ্বকাপে এমন ঘটনা ঘটেনি। এশিয়ার মানুষ হিসাবে যা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
এশিয়া মহাদেশ থেকে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পায় মোট ৪টি দেশ। এবারে সেই ৪টি স্লটে যোগ্যতা অর্জন করেছে ইরান, সৌদি আরব, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। আর আয়োজক দেশ হিসাবে অটোমেটিক চয়েস কাতার। আর ১৩ জুন হওয়া আন্তঃমহাদেশীয় প্লে অফে লাতিন আমেরিকান দেশ পেরুকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। ফলে এশিয়া মহাদেশ থেকে ষষ্ঠ দেশ হিসাবে ২১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলা কাতার বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করে গ্রাহাম আর্নল্ডের অস্ট্রেলিয়া।
১৯৩৮ সালে ফিফা বিশ্বকাপের তৃতীয় সংস্করণে প্রথম এশিয় দেশ হিসাবে খেলার সুযোগ পেয়েছিল তৎকালীন ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ, বর্তমান ইন্দোনেশিয়া। তখনও স্বাধীনতা পায়নি তারা। ২০০২ সালে আয়োজক হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম এশিয় দেশ হিসাবে সেমিফাইনাল খেলেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। এর পর কেটে গিয়েছে আরও অনেকগুলি বিশ্বকাপ কিন্তু আর কোনও এশিয় দেশ সেই রেকর্ড ভাঙতে পারেনি। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার ৪টি এশিয় দেশ বিশ্বকাপ খেলে। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রথমবারের জন্য সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ৫। কিন্তু এই প্রথমবার এশিয়া মহাদেশ থেকে মোট ৬টি দেশ খেলতে নামবে বিশ্বকাপে।
এতদিন বিশ্বকাপে লাতিন আমেরিকা বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের হয়ে গলা ফাটিয়ে আসা বাংলা বা ভারতের মানুষ এবার হয়তো কোনও এশিয় দেশের হয়ে গলা ফাটাবেন। এবার হয়তো কোনও একটি এশিয় দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সেমিফাইনাল খেলার রেকর্ড ভেঙে উঠে যাবে ফাইনালে। কে বলতে পারে, এবারে বিশ্বকাপ হয়তো এল আমাদের মহাদেশেই। এখনও ৫ মাস বাকি থাকলেও খেলা শুরুর উত্তেজনায় ফুটছে গোটা ফুটবল বিশ্ব।