ARG vs FRA FIFA WC FINAL Match Report: মরুদেশে মেসিই মসিহা! টাইব্রেকারে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

FIFA World Cup Match Report, ARGENTINA vs FRANCE : মেসিই হয়ে উঠলেন 'মসিহা'। অন্তহীন, রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল। টাইব্রেকারে গত বারের চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে তৃতীয় বিশ্বকাপ ট্রফি জয় আর্জেন্টিনার এবং অবশ্যই লিও মেসির স্বপ্নপূরণ।

ARG vs FRA FIFA WC FINAL Match Report: মরুদেশে মেসিই মসিহা! টাইব্রেকারে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা
Image Credit source: TWITTER

| Edited By: দীপঙ্কর ঘোষাল

Dec 19, 2022 | 12:37 AM

 

দীপঙ্কর ঘোষাল

তুমি কী মরিচিকা না ধ্রুবতারা…। এই লাইনেই বোধ হয় শেষ হয় না। মেসির হাতে ট্রফি। নির্ঘাত মনে পড়বে, ‘তোমায় ছুঁতে চাওয়ার মুহূর্তরা!’ মরুদেশে মরিচিকার পিছনেই ছুটছিলেন লিও মেসি। এই প্রথম নয়। পাঁচটা বিশ্বকাপ। এর আগেও একটা ফাইনাল খেলেছিলেন। ২০১৪ সালে ফাইনালে জার্মানির কাছে হার। কাপ ও ঠোঁটের দূরত্ব সে বার টের পেয়েছিলেন মেসি। কিছুতেই যেন ট্রফির সঙ্গে বন্ধুত্ব হচ্ছিল না। মরুদেশেও শুরুটা হয়েছিল মহা বিপর্যয়ে। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দিয়েছিল সৌদি আরব। কাতারের একটি সংবাদপত্রে হেডলাইন ছিল ‘মিস-হিয়া’। আর্জেন্টিনার কাছে সেটা শুধু হার নয়, ছিল সতর্কবার্তাও। ঘুরে দাঁড়ানো সহজ নয়। বিশেষ করে বিশ্বকাপের মঞ্চে এমন শুরুর পর প্রত্যাবর্তন! আবারও সেই লাইন লিখতে হয়- মেসি এ বার একা নন। তাঁর কেরিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। বাকিরা যেন নিজেদের কাছেই শপথ নিয়েছিলেন, অধিনায়কের জন্য বিশ্বকাপ জিততে হবে। তরুণরা যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন। আর সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক লিও মেসি। অবশেষে অপেক্ষার অবসান। মেসিই হয়ে উঠলেন ‘মসিহা’। অন্তহীন, রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল। টাইব্রেকারে গত বারের চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে তৃতীয় বিশ্বকাপ ট্রফি জয় আর্জেন্টিনার এবং অবশ্যই লিও মেসির স্বপ্নপূরণ। ম্যাচের বিস্তারিত রিপোর্ট TV9Bangla-য়।

আর্জেন্টিনা ৩ (মেসি ২৩’-পেনাল্টি, ডি মারিয়া ৩৬’, মেসি ১০৮’)

ফ্রান্স ৩ (এমবাপে ৮০’- পেনাল্টি, ৮২’, ১১৮’-পেনাল্টি)

টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জয়ী আর্জেন্টিনা

গত কয়েক দিন ধরে আলোচনায় মেসি-এমবাপে দ্বৈরথ। ক্লাবে সতীর্থ, দেশের হয়ে প্রতিপক্ষ। গত বারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। পরিসংখ্যানও আর্জেন্টিনার বিপক্ষেই ছিল। রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। সেই ক্ষতও অক্ষত ছিল। ম্যাচের আগে দুটি ফর্মেশন পরীক্ষা করেছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। ৫-৩-২ এবং ৪-৪-২। ফাইনালের মঞ্চে পাঁচ রক্ষণে দল সাজাবেন স্কালোনি! লাইন আপ ঘোষণায় বুঝিয়ে দিলেন, রক্ষণ নয়, আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলবেন। স্কালোনি বেছে নিলেন ৪-৪-২ ফর্মেশন। চোটের জন্য় মাঝে খেলতে পারেননি ডি মারিয়া। ফিট হয়ে উঠলেও তাঁকে সংরক্ষণ করছিলেন স্কালোনি। বড় ম্যাচে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। ফাইনালে সেই ডি মারিয়াই পার্থক্য় গড়ে দিলেন। এক দিকে মেসি, অন্য় দিকে মারিয়া। দু-দিক থেকে এই দু-জনের দৌড় থামাতে মরিয়া হয়ে উঠল ফরাসি রক্ষণ। ভুলও করলেন। বাঁ দিক থেকে অনবদ্য গতিতে উঠছিলেন মারিয়া। বক্সের মধ্যে তাঁকে অযথা ফাউল করেন ডেম্বেলে। পোলিশ রেফারি পেনাল্টি দিতে ভুল করেননি। শট নিলেন লিও মেসি। অধিনায়কের পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যাওয়া। আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। সুযোগও আসে। ৩৬ মিনিটে ডি’মারিয়ার গোলে ২-০ এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মেসি হয়ে ম্যাক অ্যালিস্টার। তাঁর পাস থেকেই ডি মারিয়ার গোল। ২-০ এগিয়ে যেতেই ডি মারিয়ার চোখে জল।

ফাইনাল এত সহজ হবে! হল না। ৬৪ মিনিটে ডি মারিয়াকে তুলে নিতেই ম্যাচে ফিরল ফ্রান্স। মাত্র ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধানে ম্যাচের রং বদলে দেন কিলিয়ান এমবাপে। ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ। ৯৭ সেকেন্ডের মধ্যেই দ্বিতীয় গোল এমবাপের। সমতা ফেরাতেই বিধ্বংসী হয়ে ওঠে ফ্রান্স। ম্যাচের নাটক তখনও বাকি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১০৮ মিনিটে অনবদ্য গোলে আর্জেন্টিনাকে ফের এগিয়ে দেন মেসি। কিন্তু মেসির অপেক্ষা যেন শেষ হইয়াও হইল না শেষ। ১১৮ মিনিটে ফের পেনাল্টি এবং গোল এমবাপের। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে ইংল্য়ান্ডের জিওফ হার্স্টের পর ফাইনালে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়লেন এমবাপে।

ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এমিলিয়ানো মার্টিনেজের বিশ্বস্ত হাত, আরও এক বার ভরসা দিল আর্জেন্টিনাকে। টাইব্রেকারে রুদ্ধশ্বাস জয়। মরুদেশে ফুল ফোটালেন মেসি। টুর্নামেন্টে ৭টি গোল, তিনটি অ্যাসিস্ট। প্রথম ফুটবলার হিসেবে ২০১৪-র পর ফের গোল্ডেন বল জিতলেন লিও মেসি।