পানাজি: গত মরসুমে মাত্র ১৫ গোল হজম করেছিল তারা। গত মরসুমে টানা দুটো ম্যাচ হারতেও হয়নি। এক বছর আগের সবুজ-মেরুনের সঙ্গে এ বারের এটিকে-মোহনবাগানের (ATK Mohun Bagan) অনেক ফারাক। ডিফেন্স লাইন নিয়েই বিস্তর চাপে পড়ে গিয়েছেন আন্তোনিও হাবাস। এতটাই যে, মাত্র চার ম্যাচে ৯ গোল খেয়েছে তাঁর টিম। শুরুর দুটো ম্যাচ জিতলেও পরের দুটো ম্যাচে হেরে রীতিমতো কোণঠাসা রয় কৃষ্ণা, হুগো বোমাসের টিম। লিগ টেবলের ছয়ে থাকা টিমকে আবার জয়ের আলোয় ফেরাতে মরিয়া হাবাস।
আজ চেন্নাইয়িন এফসির (Chennaiyin FC) বিরুদ্ধে দুটো চ্যালেঞ্জ বাগানের। এক, প্রীতম কোটাল, সুমিত রাঠি, শুভাশিস বসুদের ভরসা দিতে হবে রক্ষণে। দুই, গোলে ফেরাতে হবে কৃষ্ণা-বোমাস, জনি কাউকোদের। আর তাই টিমে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছেন হাবাস। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে তিনি বলেই দিয়েছেন, ‘প্রথম দুটো ম্যাচে সাত গোল করেছিলাম আমরা। কিন্তু এখন পাচ্ছে না টিম। যে কোনও ম্যাচে এবং টিমে ভারসাম্যই আসল। ওটা না থাকলে যে কোনও সেরা টিম দশ দিনের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ হয়ে যেতে পারে। যে ভাবেই হোক ভারসাম্যই ফেরাতে হবে।’
তিরির চোট কিছুটা হলেও রক্ষণ সামলাতে চাপে পড়ছেন স্প্যানিশ কোচ। ডিফেন্সে কী সমস্যা? সবুজ-মেরুন কোচের যুক্তি, ‘প্রথমার্ধ ঠিকঠাক খেলছি। পরের অর্ধে পারছি না। একটা জিনিস আমাদের বুঝতে হবে, গোল খেলে গোল শোধও করতে হয়।’
নিজের টিম নিয়ে যেমন চাপে, তেমনই চেন্নাইয়িন নিয়েও চিন্তায় আছেন তিনি। বজিদার বান্দোভিচের টিম ৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের চারে রয়েছে। তার থেকেই বড় তথ্য হল, এখনও একটাও ম্যাচ হারেনি তারা। চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে জিততে মরিয়া যেমন, তেমনই বিপক্ষকে গুরুত্বও দিচ্ছেন হাবাস। বলছেন, ‘চেন্নাই লড়াকু টিম। ভালো বিদেশি রয়েছে ওদের। শরীরী ফুটবল খেলে। আমাদের কাছে ম্যাচটা কঠিন হবে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তা ছাড়া চেন্নাই খুব বেশি গোলও খায়নি।’
ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ উড়িয়ে দেওয়ার পর থেকেই যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে বাগান। আজ, নিজেদের ফিরে পেতে মাঠে নামবেন কৃষ্ণারা। ভারসাম্য, আগ্রাসন আর টিমগেমই ভরসা হাবাসের। তবে, চেন্নাইয়িন কোচ বান্দোভিচ কিন্তু কোণঠাসা কৃষ্ণাদের যথেষ্ট ভয় পাচ্ছেন। তিনি বলেওছেন, ‘মোহনবাগান কিন্তু আইএসএলের অন্যতম সেরা টিম। গত বার ফাইনালে খেলেছে। ওদের হালকা নেওয়ার প্রশ্নই নেই। তা ছাড়া টিমের অধিকাংশ ফুটবলার অনেক বছর ধরে একসঙ্গে খেলছে। আমি সব প্রতিপক্ষকেই গুরুত্ব দিই। আমার তো মনে হয় আগের দুটো ম্যাচ ভুলে বাগান আমাদের বিরুদ্ধে আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠার চেষ্টা করবে। দুটো ম্যাচে হেরেছে বলে আমাদের বিরুদ্ধেও খারাপ খেলবে, তার কোনও মানে নেই।’
মোহনবাগানকে থামাতে হলে কষ্ণা-বোমাস জুটিকে আটকে দিতে যে হবে, খুব ভালো করেই জানেন বান্দোভিচ। বলছেনও, ‘পায়ে বল পড়লে ওরা খুব বিপজ্জনক। বোমাস-কৃষ্ণার বোঝাপড়াও ভালো। কৃষ্ণা যখন ওয়ান-টু-ওয়ান অ্যাটাকে যায়, তখন আরও ভয়ঙ্কর। বোমাস যেনন ফাইনাল পাস দেয়ে, তেমনই গোলের জন্যও ঝাঁপায়। ওদের বল পেতে দিলে চলবে না। রক্ষণকে তৈরি থাকতে হবে।’
চেন্নাইয়িন যখন কৃষ্ণা-বোমাসকে থামানোর অঙ্ক কষছে, তখন হাবাসের লক্ষ্য তিন পয়েন্ট। যদি আবার হয় হয়, হ্যাটট্রিক হয়ে যাবে। গত বারের আইএসএল রানার্সরা যা মোটেও চাইছেন না। হাবাস তাই গোল আর তিন পয়েন্ট, দুইয়ের খোঁজেই নামবেন দলবল নিয়ে।