AFC Asian Cup, AUS vs IND Match Report: গুরপ্রীতের ভুলে ইতিহাস হল না সুনীলদের, অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২ গোল হজম ভারতের
Australia vs India, AFC Asian Cup Match Report: দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলিয়া কিন্তু একই রকম আগ্রাসী ফুটবল খেলে গিয়েছে। বেশ কিছু গোল আসতে পারত। তা হয়নি ভারতীয় ডিফেন্সের দুরন্ত পারফরম্যান্সের জন্য। ম্যাচের ৭২ মিনিটে দুই পরিবর্ত প্লেয়ারের সৌজন্যে দ্বিতীয় গোল অস্ট্রেলিয়ার। রাইলি ম্যাকগ্রির মাইনাস, আনমার্কড জর্ডন বসের হালকা টাচে গোল। ২-০ এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
অভিষেক সেনগুপ্ত
লিও মেসিদের মঞ্চেই ইতিহাস তৈরি করে ফেলতে পারত সুনীল ছেত্রীর ভারত। অন্তত প্রথমার্ধ দেখে তাই মনে হচ্ছিল। কিন্তু একটা ছোট্ট ভুলে বন্ধ হয়ে গেল ইতিহাসের দরজা। সবে দ্বিতীয়ার্ধের ওপারে পা রেখেছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ। আল রায়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে শুধু শোনা যাচ্ছে প্রবাসী ভারতীয়দের চিৎকার। যে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০১১ সালের এশিয়ান কাপে ০-৪ গোলে হেরেছিল ভারত, তাদের বিরুদ্ধে ইগর স্টিমাচের টিম দুরন্ত পারফর্ম করছিলেন। মনে হচ্ছিল, ড্র করতে পারলে ভারতের নৈতিক জয় হিসেবেই দেখা যেতে পারে। ফিফা ব়্যাঙ্কিংয়ে ২৫ নম্বরে অস্ট্রেলিয়া। ভারত ১০২এ। কিন্তু চারগুণ এগিয়ে থাকা টিমের বিরুদ্ধেও দুরন্ত ফুটবলই উপহার দিচ্ছিলেন সন্দেশ ঝিঙ্গান, নিখিল পূজারীরা। ঠিক তখনই ভুল করে বসলেন গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
একটা পড়ে পাওয়া সুযোগ অনেক সময় ম্যাচের রঙ বদলে দেয়। কয়েক কদম এগিয়ে থাকা টিম যখন বিপক্ষের ডিফেন্সে বোতলবন্দি থাকে, তখন তারাও থাকে একটা ভুলের অপেক্ষায়। তার আগে ১৬টা গোলমুখী শট নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলাররা। ভারতীয় ডিফেন্ডাররা কাজে লাগাতে দেননি। ৫০ মিনিটে ওই একবারই ভুল করলেন গুরপ্রীত। ডান দিক থেকে মার্টিন বয়েলের তোলা ক্রস আলতো ফিস্ট করেন। কিন্তু সেই লুজ় বল পেয়ে যান জ্যাকসন আরভিন। ১-০ করতে দেরি করেননি অভিজ্ঞ ফুটবলার।
দ্বিতীয়ার্ধে যতই ২ গোল হজম করতে হোক, প্রথমার্ধে ভারতীয় টিম কিন্তু প্রশংসা করার মতো ফুটবল খেলেছে। এক দিক থেকে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার এই ম্যাচ ঐতিহাসিকও বটে। এই প্রথম এএফসি এশিয়ান কাপের কোনও ম্যাচে রেফারিং করলেন এক মহিলা রেফারি। জাপানের ইওশিমি ইয়ামাশিতা বাঁশি হাতে সুনীলদের ম্যাচে নামা নিশ্চিত ভাবেই বড় ঘটনা এশিয়ান ফুটবলে। সেই ম্যাচকে স্মরণীয় রাখতে পারত স্টিমাচের টিম। শুরুর ৪৫ মিনিট তেমন ফুটবলই খেলছিলেন ভারতীয়রা। বাকাস, গুডউইন, মেটকাফরা জায়গাই পাচ্ছিলেন না ভারতের বক্সে ঢোকার। ওই সময় একাই পাহাড় হয়ে ডিফেন্স সামলেছিলেন সন্দেশ ঝিঙ্গান। ১২ বছর আগে এশিয়ান কাপের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখে পড়েছিল ভারত। ০-৪ হেরেছিল ভারত। প্রথমার্ধেই স্কোরলাইন ছিল ৩-০। ১২ বছর পর ভারতীয় টিম কতটা বদলেছে, তা প্রমাণ করে দিচ্ছে প্রথমার্ধের গোলশূন্য ফলাফল। প্রথমার্ধে ভারত ছেড়ে কথা বলেনি। এমনকি ঝড়ঝাপটা সামলে গোলও করে ফেলতে পারত।
১৬ মিনিটে গোল করার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন সুনীল ছেত্রী। ডান দিক থেকে নিখিল পুজারীর তোলা ক্রস অস্ট্রেলিয়া বক্সে দাঁড়ানো সুনীল পেয়ে যান। ড্রপ হেডে গোল করতে চেয়েছিলেন। ফ্লাইং হেডও দিয়েছিলেন। কিন্তু সামান্য বাইরে দিয়ে যায় তাঁর দুরন্ত প্রচেষ্টা। ৩৯ বছরের স্ট্রাইকার আজও যে কোনও তরুণ ফুটবলারের থেকে কয়েক আলোকবর্ষ এগিয়ে থাকবেন। ভারতের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বললে ভুল হবে না। এসসি ইলেভেন এই গোল করতে পারলে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব আর একবার মেনে নিত এশিয়ান ফুটবল।
অস্ট্রেলিয়া-২ : ভারত-০
(জ্যাকসন ৫০, জর্ডন ৭৩)
দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলিয়া কিন্তু একই রকম আগ্রাসী ফুটবল খেলে গিয়েছে। বেশ কিছু গোল আসতে পারত। তা হয়নি ভারতীয় ডিফেন্সের দুরন্ত পারফরম্যান্সের জন্য। ম্যাচের ৭২ মিনিটে দুই পরিবর্ত প্লেয়ারের সৌজন্যে দ্বিতীয় গোল অস্ট্রেলিয়ার। রাইলি ম্যাকগ্রির মাইনাস, আনমার্কড জর্ডন বসের হালকা টাচে গোল। ২-০ এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
এই ম্যাচে ভারতের প্রাপ্তি অনেক। ভারতীয় ডিফেন্স তো বটেই, পুরো টিম চমৎকার খেলেছে। লড়াকু ফুটবলের মধ্যে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আলাদা করে নজর কাড়লেন লালরিনজুয়ালা ছাংতে। গতি, স্কিল দিয়ে মুগ্ধ করলেন তিনি।
ভারত: গুরপ্রীত, নিখিল, রাহুল, সন্দেশ, শুভাশিস, মনবীর, সুরেশ, দীপক, লেলেংমাউইয়া, লালরিনজুয়ালা, সুনীল।