পানাজি: অপেক্ষার আর মাত্র একটা দিন। শনিবার, ১৮ মার্চ এ বারের ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ফাইনাল। শনিরাতের মহারণে মুখোমুখি হবে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) ও বেঙ্গালুরু এফসি (Bengaluru FC)। ফাইনালের দিন দুয়েক আগে সমর্থকদের মধ্যে প্রিয় দলকে নিয়ে তর্ক লেগেই রয়েছে। এ বারের ফাইনালে মোহনবাগান শিবিরের জন্য বড় চমক হতে পারে বেঙ্গালুরুর তিন মূর্তি। কারণ, তাঁরা আইএসএলের (ISL) গত মরসুমে সবুজ-মেরুন জার্সিতে খেলেছেন। ফলে দীর্ঘদিন এই তিন মূর্তি স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দোর কোচিংয়ে খেলেছেন। তাই বাগান কোচের বিভিন্ন রণকৌশলও তাঁদের জানা। এই তিন মূর্তি কারা? বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla-র এই প্রতিবেদনে।
একটা সময় বাগানের প্রাণভোমরা ছিলেন ফিজির তারকা রয় কৃষ্ণ। তিনি বর্তমানে রয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। সঙ্গে রয়েছেন সন্দেশ ঝিঙ্গান ও প্রবীর দাস। এই তিন মূর্তিই আইএসএল ফাইনালে চাপে ফেলতে পারে বাগান শিবিরকে। কারণ, ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু গত মরসুমে ফেরান্দোর কোচিংয়ে খেলেছেন সন্দেশরা তাই তাঁর ভাবনা, কৌশল সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল বেঙ্গালুরুর ত্রিমূর্তি। তাই শনিবার ফাইনালে প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন এই তিনজন।
রয় কৃষ্ণা (সেন্টার ফরোয়ার্ড) – আইএসএলে গত মরসুমে তিনি পাঁচটি গোল করেন ও চারটি করান। প্লে অফেও দু’টি গোল ছিল তাঁর। সব মিলিয়ে লিগে সাতটি গোল ও চারটি অ্যাসিস্ট ছিল তাঁর। দু’টি সেমিফাইনালেই একটি করে গোল করেন তিনি। এ ছাড়া লিগে কেরালা ব্লাস্টার্স, ইস্টবেঙ্গল, বেঙ্গালুরু এফসি, এফসি গোয়া এবং চেন্নাইন এফসি-র বিরুদ্ধে গোল করেছিলেন তিনি। চলতি আইএসএলে লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে চেন্নাইন এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথম গোল করার পর টানা দশটি ম্যাচে গোল ছিল না তাঁর। ১৪ অক্টোবরের পরে লিগে তিনি দ্বিতীয় গোলটি করেন ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ১৪ জানুয়ারি। তারপর থেকে ছ’টি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই গোল পেয়েছেন রয় এবং মাঝে যে ম্যাচে গোল পাননি, সেই ম্যাচে অ্যাসিস্টও করেছিলেন তিনি। তবে প্লে অফে এখন পর্যন্ত কোনও গোল পাননি তিনি। ফাইনালে ফিজির তারকা কোনও গোল করতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।
প্রবীর দাস, (রাইট ব্যাক, রাইট উইঙ্গার) – প্রবীর দাস চলতি লিগে বেঙ্গালুরুর হয়ে মোট ১৬টি ম্যাচে মাঠে নেমেছেন। তিনটি ম্যাচে তিনি বেঞ্চে ছিলেন। একটিতে স্কোয়াডে ছিলেন না। এরপর মাঝের তিনটি ম্যাচে তিনি রাইট ব্যাক হিসেবে খেলেন, বাকি সব ম্যাচেই ডানদিকের উইং দিয়ে আক্রমণে ওঠার দায়িত্বই দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। নক আউট পর্বে সব ম্যাচে পুরো সময়ের জন্য মাঠে ছিলেন তিনি। চলতি মরসুমে সব মিলিয়ে প্রায় ১৯ ঘণ্টা মাঠে ছিলেন প্রবীর। কিন্তু গত মরশুমে ৭৯৩ মিনিটের বেশি মাঠে থাকার সুযোগ পাননি তিনি। সে বার লিগ পর্বে ১৯টি ম্যাচে তিনি দলে থাকলেও, দু’টি ম্যাচে বেঞ্চেই বসে থাকতে হয় তাঁকে। তিনি সবুজ-মেরুন জার্সিতে প্রথম একাদশে ছিলেন মাত্র পাঁচটি ম্যাচে। ১২টি ম্যাচে পরিবর্ত হিসেবে নেমেছিলেন। তাঁর প্রতি সুবিচার করেনি বাগান শিবিরের কোচ। এ বার দেখার প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ফাইনালে প্রবীর জ্বলে উঠতে পারেন কিনা।
সন্দেশ ঝিঙ্গান (সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার) – ১৩ মাস মাঠের বাইরে থাকার পর ২০২০-২১ মরশুমের আগে এটিকে মোহনবাগানের চুক্তিতে সই করেন সন্দেশ ঝিঙ্গান। তিনি দলের নেতৃত্বের দায়িত্বেও ছিলেন। ওই মরশুমে এটিকে মোহনবাগান আইএসএল ফাইনালে পৌঁছেছিল। তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই পঞ্জাবি ডিফেন্ডারের। পরবর্তীতে তাঁকে ছেড়ে দেয় বাগান শিবির। সন্দেশ ঝিঙ্গান এ বার বেঙ্গালুরু এফসি হয়ে ৪২টি ট্যাকল করেছেন। ৩৭টি ইন্টারসেপশন করেছেন তিনি। ১৫৫টি ক্লিয়ারেন্স ও ৩৩টি ব্লকও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। এ বার দেখার আইএসএলের মেগা ফাইনালে সন্দেশ পুরনো দলের বিরুদ্ধে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারেন কিনা।