
সাও পাওলো: এক-একটা প্রজন্ম এক-একজনকে ঘিরে স্বপ্ন সাজানোর চেষ্টা করে। ছয়ের দশকে যেমন পেলেকে ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে উঠেছিল। সারা বিশ্ব জুড়ে অনেকেই ব্রাজিল ভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। দিয়েগো মারাদোনার (Diego Maradona) সময় এ ভাবেই উত্থান হয় আর্জেন্টিনার। নীল-সাদায় আচ্ছন্ন হওয়া শুরু। পরবর্তী সময়ে ফ্রান্সের জিনেদিন জিদান, ব্রাজিলের বড় রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহোকে নিয়ে উত্তাল হয়েছে বিশ্ব ফুটবল। পরবর্তী প্রজন্ম আবার ফুটবলমুখী হয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, লিওনেল মেসি, নেইমারের জন্য। এক প্রজন্ম বরাবর পরবর্তী প্রজন্মের প্রশংসায় বরাবর পঞ্চমুখ হয়েছে। যেমন পেলে। বহু প্রতীক্ষার পর কাতারে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মেসি (Lionel Messi)। এলএম টেনের ওই সাফল্যে জড়িয়ে ফেলেছেন নিজেকে। মারাদোনার সঙ্গে বরাবর তুলনা হয় তাঁর। পেলেকে যেমন ফুটবল সম্রাট বলা হয়, মারাদোনা ফুটবলের রাজপুত্র। সেই মারাদোনা যদি বেঁচে থাকতেন, আজ তৃপ্তি পেতেন, মেসিকে বিশ্বকাপ জিততে দেখে এমনই মন্তব্য করেছেন পেলে (Pele)। তিনি কী বললেন মেসিকে নিয়ে? তুলে ধরল TV9 Bangla।
ব্রাজিলিয়ানরা নাকি আর্জেন্টিনার সাফল্যের শরিক হতে চান না। অন্তত মনে মনে খানিকটা হলেও দূরেই থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু পেলেরা ব্যতিক্রম যে! দুরারোগ্য রোগ ক্যান্সারে ভুগছেন তিনি। বিশ্বকাপের সময়ই রটে গিয়েছিল, কিংবদন্তি ফুটবলার ভীষণই অসুস্থ। চিকিৎসায় সাড়া মিলছে না। কিন্তু লড়াকু ফুটবলারকে হারানো যায়নি। কাতার বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিলের ছিটকে যাওয়ার পর দুঃখিত পেলে মন্তব্য করেছেন। ঠিক তেমনই তিনি আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের বিশ্বকাপ ফাইনালও দেখেছেন। উপভোগ করেছেন। মেসিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রশংসা করেছেন।
কী বললেন পেলে? ফুটবল সম্রাটের কথায়, ‘ফুটবল বরাবরই একটা গল্প শোনায়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। সেই একই পথে একটা গল্প শুনিয়ে গেল। মেসি অবশেষে বিশ্বকাপ পেল। এবং এই কাপটা ওর পাওয়া উচিত ছিল। অভিনন্দন আর্জেন্টিনা। দিয়েগো মারাদোনা যেখানেই থাকুক না কেন, ও এখন নিশ্চয় হাসছে।’
অসুস্থ শরীর নিয়েও যে ফুটবলে ডুবে থাকেন পেলে, সন্দেহ নেই। যে কারণে নিজের ইন্সটাগ্রামে লিখেছেন, ‘আমার বন্ধু এমবাপে বিশ্বকাপে ফাইনালে চারটে গোল করল। ওর মতো প্রতিভার খেলা দেখার অভিজ্ঞতাই আলাদা। ও যে ফুটবলের পরবর্তী আকর্ষণ হতে চলেছে, সন্দেহ নেই। একই সঙ্গে মরক্কোর মতো টিমকেও অভিনন্দন না জানালে চলবে না। দুরন্ত পারফর্ম করেছে ওরা। আফ্রিকার কোনও দেশের উঠে আসা দেখতে ভালো লেগেছে।’
পেলের শুভেচ্ছাবার্তা মেসির কাছ পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবেই পৌঁছেছে। মেসি বারবরই পেলে সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল। বিশ্বকাপ প্রাপ্তির সঙ্গে পেলের প্রশংসা তাঁর মুকুটে নতুন হয়ে উঠল।