কলকাতা: অবশেষে স্বপ্ন পূরণ। অপেক্ষার অবসান। দীর্ঘ ১২ বছরের ব্যবধানে সর্বভারতীয় ট্রফি জিতল ইস্টবেঙ্গল। কলিঙ্গ সুপার কাপে অনবদ্য ফর্মে ছিল লাল-হলুদ। গ্রুপ পর্বে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছিল কার্লেস কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল। সেমিফাইনালে জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে দাপুটে জয়। সবচেয়ে বড় স্বস্তি ছিল, দীর্ঘ দিন পর ক্লিনশিট রেখে জয়। ফাইনালে সামনে ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওডিশা এফসি। বেশ কিছু স্নায়ুর চাপের মুহূর্ত পেরিয়ে অবশেষে এক্সট্রা টাইমে ৩-২ ব্যবধানে জয় ইস্টবেঙ্গলের। ট্রফির আনন্দে আত্মহারা ইস্টবেঙ্গল শিবির। কলিঙ্গ সুপার কাপে ইস্টবেঙ্গল বনাম ওডিশা এফসি ফাইনাল ম্যাচের আপডেটের জন্য নজর রাখুন TV9Bangla Sports-এর এই লাইভ ব্লগে।
দীর্ঘ এক যুগ পর জাতীয় স্তরের ট্রফি জিতল ইস্টবেঙ্গল। এএফসি কাপের প্রিলিমিনারি রাউন্ডেও যোগ্য়তা অর্জন করল কার্লেস-ক্লেটনের ইস্টবেঙ্গল। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ। এক্সট্রা টাইমে জয়সূচক গোলটি করেন ক্য়াপ্টেন ক্লেটন সিলভা। বিস্তারিত পড়ুন: ক্যাপ্টেন ক্লেটনের ক্যারিশ্মায় পিছিয়ে পড়েও চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল
ওডিশা এফসি গোলকিপার মোয়া রালতে পাস করেছিলেন নরেন্দ্রকে। বল ধরে রাখতে পারেননি। তাঁর থেকে বল কেড়ে অনবদ্য গোল ক্লেটন সিলভার। জার্সি খোলার জন্য হলুদ কার্ড ক্লেটনকে।
দু-দলের কাছেই আরও ১৫ মিনিটের সুযোগ। স্কোর লাইনে বদল না হলে টাইব্রেকার। এই অবধি হয়তো পরিস্থিতি পৌঁছতোই না। শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরায় ওডিশা।
মাটে ঢুকে পড়েছেন এক সমর্থক। সেলফি নেওয়ার চেষ্টায়। কয়েক সেকেন্ড খেলায় বিরতি।
জাহুকে বন্দি করে রেখেছিলেন সৌভিক। নির্ধারিত সময়ে হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। অতিরিক্ত সময়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। মোর্তাদা ফলের পর সৌভিকের রেড কার্ড। দু-দলই এখন ১০ জনে পরিণত হয়েছে। কয়েক সেকেন্ড আগে ভুলটা না হলে এতক্ষণে ট্রফির সেলিব্রেশন শুরু হয়ে যেত ইস্টবেঙ্গলে।
অ্যাডেড টাইমের কয়েক সেকেন্ড বাকি ছিল। দিয়েগো মরিসিও বল নিয়ে এগোচ্ছিলেন। বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। উল্টে দিয়েগোকে ফাউল করেন ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক প্রভসুখন গিল। পেনাল্টি থেকে গোল জাহুর। ম্যাচ এক্সট্রা টাইমে।
এক যুগ পর ইস্টবেঙ্গলে কোনও সর্বভারতীয় ট্রফি আসতে চলেছে। এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু সময়। ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স জমাট থাকলে, ট্রফির অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে।
এয়ারে বল দখলের লড়াই। তবে কনুই হাই ছিল মোর্তাদার। সাউল ক্রেসপোর গলায় লাগে। রেফারি তাঁকে মার্চিং অর্ডার দেন। আগেই একটা হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। এই ফাউলে কার্ড না দেখিয়ে উপায় ছিল না রেফারির।
বোরহাকে ফাউল। পেনাল্টি দেন রেফারি। আগেরটার সঙ্গে কাটাকুটি! ওডিশা গোলকিপার মোয়া রালতে তৈরি। সাউল ক্রেসপোর গোল। স্পট কিক থেকে ভুল করেননি ক্রেসপো। পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়াল ইস্টবেঙ্গল। আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না সমর্থকরাও। ৬২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যায় ২-১।
নন্দকুমারকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন দেলগাডো। বল ছাড়াই এগচ্ছিলেন। তারপরও পেনাল্টি দিলেন না রেফারি ভেঙ্কটেশ। খালি চোখে যাই মনে হোক, রিপ্লেতে পরিষ্কার ধরা পড়েছে পেনাল্টি ছিল। যদিও রেফারি ধারেকাছেই ছিলেন না।
পরিবর্ত হিসেবে নেমেছেন নাওরেম মহেশ। জাতীয় দল থেকে ফিরেই ছাপ ফেললেন। তাও আবার ফাইনালের মঞ্চে। ম্যাচের ৫১ মিনিটে উইথ দ্য বল দারুণ দৌড় মহেশের। একদম সময় মতো বল ছাড়েন নন্দকুমারের জন্য। বড় ম্যাচের প্লেয়ার ভুল করেননি। গোলকিপারকে কাটিয়ে জালে বল জড়ান। সমতা ফিরতেই ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে প্রাণ ফিরল।
সিভেরিও এবং মন্দার রাও দেশাইয়ের পরিবর্তে নাওরেম মহেশ এবং চুংনুনগাকে নামালেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। সদ্য এএফসি এশিয়ান কাপে খেলে এসেছেন এই দুই অভিজ্ঞ প্লেয়ার।
প্রথমার্ধে বেশি সুযোগ তৈরি করেছে ইস্টবেঙ্গলই। বিশেষ করে সেটপিস থেকে। কিন্তু স্কোরলাইনে তার ছাপ পড়েনি। ওডিশা এফসি সীমিত সুযোগ পেলেও একটি দুর্দান্ত কাজে লাগিয়েছেন। এখান থেকে ফেরাটাই চ্যালেঞ্জ লাল-হলুদ শিবিরে। বিরতিতে কোচ কী বার্তা দেন, সেটাই ভরসা ইস্টবেঙ্গলের।
জাহুর লং পাস। রয় কৃষ্ণা নামান। বোরহা বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। ডানদিকে দিয়েগোর দিকে পাস করেন। ৩৯ মিনিটে দিয়েগো মরিসিওর গোলে এগিয়ে যায় ওডিশা এফসি। ডিফেন্সে সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতে বড় বিপদ ইস্টবেঙ্গল শিবিরে।
দিয়েগো যে গতিতে এগোচ্ছিলেন, তাঁকে আটকানো ছাড়া উপায় ছিল না হিজাজির। ফ্রি-কিক পায় ওডিশা এফসি। বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক। ইস্টবেঙ্গলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। মরিসিওর জোরালো শট। তবে দেওয়াল ভাঙতে পারলেন না দিয়েগো মরিসিও।
অযথা ক্লেটন সিলভাকে ফাউল রয় কৃষ্ণার। রেফারি কার্ড দিতে ভুল করেননি। ফ্রি-কিকে গোলার মতো শট বোরহার। গোলকিপার কোনওরকমে সামাল দেন। পর মুহূর্তেই আরও একটা সেভ মোয়ার। ফের কর্নার। বিপদ কাটেনি ওডিশার। চাপের মুহূর্ত থেকে বাঁচলো ওডিশা।
দীর্ঘ দিন পর একজন ভরসাযোগ্য সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার পেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। ফাইনালের মঞ্চেও নজর কাড়ছেন হিজাজি মাহের। সেট পিসে যেমন গোল করতে উঠছেন, তেমনই ডিফেন্সের দায়িত্ব ভুলছেন না।
ম্যান মার্কিংয়ে সফল ইস্টবেঙ্গল। ডিফেন্সের প্রয়োজনের সকলেই নেমে আসছেন। তেমনই আক্রমণে ওঠার সময়ও একতা। এখনও অবধি দু-দলের পারফরম্যান্সে পার্থক্য বের করা কঠিন।
দু-দলই দুর্দান্ত খেলছে। এগিয়ে যেতে পারতো ওডিশা এফসি। উইং ধরে উঠেছিলেন ইসাক। তাঁর পাস থেকে শট নেন দিয়েগো মরিসিও। অল্পের জন্য রক্ষা পেল ইস্টবেঙ্গল।
প্রতি ম্যাচেই অনবদ্য খেলছেন সৌভিক চক্রবর্তী। এই ম্যাচে তাঁর টার্গেট আহমেদ জাহুহু। তাঁকে আটকে রেখেছেন সৌভিক। তবে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে চাপ বাড়ানোর চেষ্টায় রয় কৃষ্ণা। দুর্দান্ত একটি গ্রাউন্ডারও নেন। তবে টার্গেটে ছিল না।
ম্যাচের মাত্র ৪ মিনিটেই গোলের মুভ ইস্টবেঙ্গলের। নন্দকুমারের শট। অনুমান করেছিলেন ওডিশা গোলরক্ষক রালতে। সহজেই সেভ করেন।
ফাইনালে রেফারি ভেঙ্কটেশ। লাইন আপে দু-দলের প্লেয়াররা। দুই অধিনায়ক প্রস্তুত। কিক অফের অপেক্ষা। কলিঙ্গ স্টেডিয়াম পুরোপুরি হাউসফুল।
কার গলার জোর বেশি! ইস্টবেঙ্গল এবং ওডিশা এফসির সমর্থকরা গ্যালারিতে প্রিয় দলের সমর্থনে গর্জন শুরু করে দিয়েছেন। মাঠে প্রবেশ করছেন ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। দু-দলের প্লেয়ারদের সঙ্গে ফটোসেশনে ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী।
কলিঙ্গ সুপার কাপের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াতে পারেন রয় কৃষ্ণা। সঙ্গে রয়েছেন দিয়েগো মরিসিও। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ওডিশা এফসির প্রথম একাদশ দেখে নিন:
📢 TEAM NEWS 📢
Sergio Lobera announces an unchanged lineup for the #KalingaSuperCup 2️⃣0️⃣2️⃣4️⃣ Final.#OdishaFC #AmaTeamAmaGame #KalingaWarriors | #EBFCOFC pic.twitter.com/JnWsISTx6A
— Odisha FC (@OdishaFC) January 28, 2024
কার্ড সমস্যায় সেমিফাইনালে খেলতে পারেননি বোরহা। ফাইনালে শুরু থেকেই খেলবেন তিনি। সঙ্গে ফিরেছেন মন্দারও। ইস্টবেঙ্গলের প্রথম একাদশ দেখে নিন:
Here are your polas for tonight’s #KalingaSuperCup final! 🔴🟡
𝐓𝐄𝐀𝐌 𝐍𝐄𝐖𝐒 📰 Mandar & Borja return to the starting XI!
Watch the match live on JioCinema. 💻#JoyEastBengal #EastBengalFC #EBOFC @batery_ai pic.twitter.com/v3SVD8pmXT
— East Bengal FC (@eastbengal_fc) January 28, 2024
এ মরসুমের শুরুতেই ডুরান্ড কাপ ফাইনালে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল। দুর্দান্ত পারফর্ম করলেও ফাইনালে মোহনবাগানের কাছে হার। ট্রফির খরা চলছেই। কার্লেস কুয়াদ্রাতের সামনে দ্বিতীয় সুযোগ। কলিঙ্গ সুপার কাপ ফাইনাল নিয়ে কী বলেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত? বিস্তারিত পড়ুন: লাল-হলুদে ট্রফির স্বাদ দিতে চান কুয়াদ্রাত
লাল-হলুদ শিবিরে ট্রফির ম্যাচে নজরে ক্যাপ্টেন ক্লেটন। গত মরসুমেও ইস্টবেঙ্গলেই ছিলেন। ব্যক্তিগত সাফল্য পেলেও টিম সফল নয়। এ বার তাঁর কাছে সুযোগ ট্রফি দেওয়ার। বিস্তারিত পড়ুন: ট্রফি দিয়ে মশালে বারুদ ঢালতে চান ক্লেটন
কলিঙ্গ সুপার কাপ ফাইনালে ওডিশা এফসির বিরুদ্ধে নামার আগের দিনের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল শিবিরের মেজাজ কেমন ছিল? দেখুন সেই ছবি: ট্রফির হাতছানি, শেষ মুহূর্তে কেমন প্রস্তুতি ইস্টবেঙ্গলের! দেখুন ছবি…
কলিঙ্গ সুপার কাপ ফাইনালে আর কিছুক্ষণ পরই মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল ও ওডিশা এফসি। কার্লেস কুয়াদ্রাত বনাম সের্গিও লোবেরো, কার কৌশল সফল হবে! ম্যাচ প্রিভিউ পড়ুন বিস্তারিত: অপেক্ষা এবং উপেক্ষা! ট্রফি জিতে ‘পূর্ণতার’ প্রত্যাশায় ইস্টবেঙ্গল