PELE: চলে গেলেন সম্রাট, পেলের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বিশ্ব!

Pele Dies: বিশ্বকাপের খেলাও দেখছেন। এমনকি, বিশ্বকাপ জেতার পর আর্জেন্টিনা ও লিওনেল মেসিকে অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন। সেই পেলে মারা গেলেন। ব্রাজিলের স্থানীয় সময় বিকেল ৩.২৭ নাগাদ কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারের মৃত্যুর খবর সরকারি ভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হল। ফুটবল সম্রাটের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সারা বিশ্বে।

PELE: চলে গেলেন সম্রাট, পেলের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বিশ্ব!
Image Credit source: OWN Photograph

| Edited By: অভিষেক সেনগুপ্ত

Dec 30, 2022 | 2:00 AM

সাও পাওলো: গত একমাস হাসপাতালেই ছিলেন তিনি। ভুগছিলেন দুরারোগ্য রোগ ক্যান্সারে। প্রতি মাসেই নিয়মমাফিক কেমো নেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হত। কাতার বিশ্বকাপের সময়ও সেই নিয়মমাফিক চিকিৎসার কারণেই ভর্তি হতে হয়েছিল কিংবদন্তি ফুটবলারকে। বিশ্বকাপ চলাকালীনই শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরও ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু সব আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে খোদ তিনিই বার্তা দিয়েছিলেন বিশ্ববাসীকে, অগণিত ভক্তের প্রার্থনায় সুস্থ আছেন। বিশ্বকাপের খেলাও দেখছেন। এমনকি, বিশ্বকাপ জেতার পর আর্জেন্টিনা ও লিওনেল মেসিকে অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন। সেই পেলে মারা গেলেন। ব্রাজিলের স্থানীয় সময় বিকেল ৩.২৭ নাগাদ কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারের মৃত্যুর খবর সরকারি ভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হল। ফুটবল সম্রাটের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সারা বিশ্বে। পেলের প্রয়াণের খবর তুলে ধরল TV9 Bangla

রাজনীতিক থেকে অভিনেতা, গায়ক থেকে চিত্রশিল্পী, সমাজের প্রতিষ্ঠিত থেকে আমজনতা, হারতে হারতে ঘুরে দাঁড়ানো মানুষ— সব মহলে অবাধ গতিবিধি ছিল পেলের। তাঁকে খেলতে দেখা প্রবীণ মানুষ থেকে মেসি-রোনাল্ডোর ভক্ত— পেলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সবাই। সেই পেলের প্রয়াণে চোখের জলে ভাসছে সারা পৃথিবী। ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে পথাচলা শুরু হয়েছিল ১১ বছরের একটি ছেলের। সেই তিনিই ১৫ বছর বয়সে সই করেছিলেন ব্রাজিলের বিখ্যাত স্যান্টোস এফসিতে। ১৬ বছর বয়সে ব্রাজিলের জাতীয় টিমে অভিষেক। বাকিটা ইতিহাস। ফুটবলকে সঙ্গী করেই ছুটিয়ে দিয়েছিলেন অশ্বমেধের ঘোড়া। বিশ্বজয় করেছিলেন তিনি এবং তাঁর ব্রাজিল। ৮২ বছর বয়সে সেই পেলেই চলে গেলেন।

দিন কয়েক আগেই মেয়ে কেলি নাসিমেন্টো ইন্সটাগ্রামে বাবার সঙ্গে আবেগঘন ছবি পোস্ট করেছিলেন। সেই কেলিই পেলের প্রয়াণের খবর পোস্ট করে লিখেছেন, ‘সব কিছুর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ বাবা। সীমাহীন ভাবে তোমাকে ভালোবেসে যাব। শান্তিতে ঘুমোও, বাবা!’ পেলের এজেন্ট জো ফ্রাগাও বলেছেন, ‘সম্রাট চলে গেলেন!’

১৯৫৭ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল— ২০ বছরের বর্ণময় কেরিয়ারে ৮৩১টা ম্যাচ খেলে করেছেন ৭৫৭টা গোল। যদিও বেসরকারি হিসেবে সেই গোলের সংখ্যা হাজারেরও বেশি। দুই দশক ধরে পেলে ফুটবলকে দু’হাত ভরে দিয়েছেন। মাঠ ও মাঠের বাইরে ফুটবলকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেওয়ার কাজটা একক ভাবে চালিয়ে গিয়েছেন আমৃত্যু। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর সে ভাবে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি তাঁকে। কিন্তু তার আগে পেলে সারা অক্লান্ত ভাবে ঢুকে বেরিয়েছেন বিশ্ব। ভাষা, বর্ণ, ধর্ম সব কিছুকে যেন মিলিয়ে দিয়েছিলেন একাই।

পেলের প্রয়াণের পর তাঁর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তাও কম মর্মস্পর্শী নয়। লেখা হয়েছে, ‘অনুপ্রেরণা আর ভালোবাসায় ভরা ছিল সম্রাট পেলের ফুটবলযাত্রা। শান্তিতে যিনি চলে গেলেন অন্য দুনিয়ায়। নিজের যাত্রাপথে এডসন তাঁর নৈপুন্য দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছিলেন খেলাটাকে। থামিয়ে দিয়েছিলেন যুদ্ধ। সামাজিক কাজ করে গিয়েছেন বিশ্ব জুড়ে। আর যে মন্ত্রে বিশ্বাস করতেন তিনি, সেই ভালোবাসাই ছড়িয়ে গিয়েছেন জীবনভর। পরের প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্য হয়ে থেকে যাবেন। ভালোবাসা, ভালোবাসা ও ভালোবাসা, চিরকালের জন্য।’