EURO 2020 : ‘ভিলেন’ এমবাপে, জিতে নতুন রূপকথা সুইৎজারল্যান্ডের
একই দিনে ইউরোর মঞ্চ থেকে বিদায় নিল বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স। আর প্রথমবার ইউরোর ইতিহাসে শেষ আটে পৌঁছালো সুইৎজারল্যান্ড।
ফ্রান্স- ৩ ( বেঞ্জেমা ৫৭’, ৫৯’, পোগবা ৭৫’)
সুইৎজারল্যান্ড- ৩ (স্যাফেরোভিচ ১৫’,৮১’, গাভরানোভিচ ৯০’)
টাইব্রেকার-
ফ্রান্স- ৪
সুইৎজারল্যান্ড-৫
বুখারেস্টঃ পার্কেন স্টেডিয়ামে স্পেন(SPAIN) বনাম ক্রোয়েশিয়ার অবিশ্বাস্য লড়াই দেখার রেশ তখনও কাটেনি। এদিন দ্বিতীয় প্রিকোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ যেন ছাপিয়ে গেল প্রথমটিকে। ইউরোর(EURO 2021) মঞ্চ আরও এক রূদ্ধশ্বাস ম্যাচের সাক্ষী থাকল। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে(FRANCE) টাইব্রেকারে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল সুইৎজারল্যান্ড(SWITZERLAND)। আর পেনাল্টি মিস করে ভিলেন বনে গেলেন বিশ্বকাপের নায়ক এমবাপে(KYLIAN EMBAPPE)।
স্পেন বনাম ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের হাইভোল্টেজ লড়াই দেখার পর কে আর আশা করেছিল পরের কোয়ার্টার ফাইনালের উত্তেজনা থাকবে আরও কয়েকগুণ বেশি? কারন, ধারে ও ভারে সুইৎজারল্যান্ডের থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল ফ্রান্স। স্পেন বা ক্রোয়েশিয়ার মত শক্তির নিরিখে অতি কাছাকাছি থাকা নয়। এবার দেখে নেব এদিনের ম্যাচের মুহূর্তগুলি-
১৫’- জুবেরের ক্রস থকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করে সুইৎজারল্যান্ডকে এগিয়ে দেন স্যাফেরোভিচ।
এরপর বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ তৈরি করলেও ফ্রান্সকে এগিয়ে দিতে ব্যর্থ হন গ্রিজম্যান, পোগবারা
*প্রথমার্ধের খেলা শেষ। খেলার ফল ১-০*
দ্বিতীয়ার্ধে ছিল পরতে পরতে নাটক।ঘটনাবহুল। হিসেব ওলটপালোট করে দেওয়ার ৪৫ মিনিট।
৫৩’- নিজেদের বক্সে জুবেরকে ফেলে দেন পাভার্ড। পেনাল্টি পায় সুইৎজারল্যান্ড। পেনাল্টি বাঁচিয়ে দেন হুগো লরিস।
৫৭’- এরপর ফ্রান্সের ৪ মিনিটের একটা ঝড়। বেকায়দায় পড়ে যায়। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে গ্রিজম্যানের থেকে পাওয়া বল এমবাপে কার্যত সাজিয়ে দেন বেঞ্জেমাকে। গোল করতে ভুল করেননি রিয়াল মাদ্রিদের তারকা।সমতায় ফিরল ফ্রান্স
৫৯’- সুইস ব্কেসর বাইরে এমবাপের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান খেলে গ্রিজমানের মাপা ক্রস। দ্বিতীয় পোস্টে মাথা ছুঁইয়ে গোল করলে সেই বেঞ্জেমা। ২-১ গোলে এগিয়ে গেল ফ্রান্স।
৭৫’- আবার এগিয়ে গেল ফ্রান্স। এবার গোলদাতা পল পোগবা।বেঞ্জিমার পাস। সুইস বক্সের বাইরে থেকে ডানপোস্টের দিকে জোরালো শটে নজরকাড়া গোল পোগবার। ৩-১ গোলে এগিয়ে গেল ফ্রান্স।
৮১’- পাল্টা আঅঘাত সুইসদের। ১০ মিনিটের ঝড়ে তছনছ ফ্রান্সের ডিফেন্স। এমবাবুর ক্রস। এমবাপে-ভারানেকে টপকে হেডে দুরন্ত গোল স্যাফেরোভিচের। ম্যাচে তাঁর দ্বিতীয় গোল। ব্যবধান কমাল সুইৎজারল্যান্ড। খেলার ফল ৩-২।
৮৮’- গ্রিজম্যানকে তুলে নামানো হয় সিসোকোকে।
৯০’- মাঝমাঠ থেকে জাকার মাপা পাস।ফরাসি ডিফেন্ডার কিমপেম্বেকে টপকে গোল পরিবর্ত ফুটবলার হিসেবে নামা গাভরানোভিচের। ফরাসি গোলকিপার লরিসের কিচ্ছু করার ছিল না। ম্যাচে সমতায় ফিরল সুইৎজারল্যান্ড। খেলার ফল ৩-৩। ম্যাচ গড়া একস্ট্রাটাইমে।
*নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ। খেলার ফল ৩-৩।*
- একস্ট্রা টাইমে দুই দলই আক্রমণের ঝড় তোলে। তবে গোলের মুখ খুলতে পারেনি কেউই। ম্যাচের ফয়সালা একস্ট্রা টাইমে না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।৯৪ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন বেঞ্জেমা। নামানো হয় জিরুকে।
*টাইব্রেকার*
সুইৎজারল্যান্ডের প্রথম শট- গোল করলেন গাভরানোভিচ
ফ্রান্সের প্রথম শট- গোল করলেন পোগবা
সুইৎজারল্যান্ডের দ্বিতীয় শট- গোল করলেন স্কার
ফ্রান্সের দ্বিতীয় শট- গোল করলেন জিরু
সুইৎজারল্যান্ডের তৃতীয় শট- গোল করলেন আকাঞ্জি
ফ্রান্সের তৃতীয় শট- গোল করলেন থুরাম
সুইৎজারল্যান্ডের চতুর্থ শট- গোল করলেন ভারগাস
ফ্রান্সের চতুর্থ শট- গোল করলেন কিমপেেম্বে
সুইৎজারল্যান্ডের পঞ্চম শট- গোল করলেন মেহমেডি
ফ্রান্সের পঞ্চম শট- এমবাপের শট বাঁচিয়ে দিলেন সুইৎজারল্যান্ডের গোলকিপার সমার। ৫-৪ ফলে টাইব্রেকারে জয় সুইৎজারল্যান্ডের।
পেনাল্টি মিস করার পর বিশ্বকাপের নায়ক এক লহমায় বনে গেলেন সমর্থকদের চোখের ভিলেন। কেন এমবাপেকে দেওয়া হল পেনাল্টি মারতে? কারন, ফ্রান্সের যে দুজন পেনাল্টি স্পেশ্যালিস্ট বলে পরিচিত তাঁরা হলেন গ্রিজম্যান ও বেঞ্জেমা। ফ্রান্স তখন ম্যাচ জিতছিল যখন গ্রিজম্যানকে তোলা হয়। আর একস্ট্রা টাইমে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন বেঞ্জেমা। তাই পেনাল্টি শ্যুটআউটে ফ্রান্স অভাব বোধ করেছেন এই দুনেরই। এই হারের ফলে শেষ হয়ে গেল গ্রিজম্যানদের এবারের মত ইউরোর দৌড়। একই দিনে ইউরোর মঞ্চ থেকে বিদায় নিল বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স। আর প্রথমবার ইউরোর ইতিহাসে শেষ আটে পৌঁছালো সুইৎজারল্যান্ড।
আগামি শুক্রবার সেন্ট পিটার্সবার্গে কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে স্পেন ও সুইৎজারল্যান্ড।