
কলকাতা: গত সপ্তাহে তাঁর পারফরম্যান্স দেখে আন্দাজ করা গিয়েছিল, ভারতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য আবার খুলে যেতে পারে। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ঝাড়খণ্ডকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। ১০ ইনিংসে রয়েছে ৫১৭ রান। ফাইনালে ৪৯ বলে ১০১ নট আউট। এমন বিস্ফোরক ফর্মই নির্বাচকদের ভাবতে বাধ্য করেছিল। সত্যিই কি স্বপ্নপূরণ হবে? নিজেও হয়তো এতটা ভাবতে চাননি।
২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর, সময়টা অনেক। এই দীর্ঘ সময় ঈশান ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলের বাইরে ছিলেন। ২০২৪ সালে তাঁর চুক্তিও বাতিল করে দেয় বিসিসিআই। যা নিয়ে প্রবল সমালোচনা হয়েছিল। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের পরামর্শ শোনেননি, এমনও অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বলা হচ্ছিল, তিনি নাকি মানসিকভাবেও অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু খারাপ সময় যেন কাটছিল না ঈশানের। ক্রমশ সরে যাচ্ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের লড়াই থেকে। বছরের মাঝেই নটিংহ্যামশায়ার সফরে বন্ধুর বাইক থেকে পড়ে গিয়ে চোট পান। ভারতীয় দলে ফেরা আরো অনিশ্চিত হয়ে যায়। ক্রিকেট কেরিয়ারও থমকে গেল কিনা, তা নিয়েও চর্চা ছিল সে সময়। খেলতে পারেননি দলীপ ট্রফিতেও।
এখান থেকেই আবার ফেরার লড়াই শুরু করেন ঈশান। ঘরোয়া ক্রিকেটেই আবার ফোকাস করেন প্রত্যাবর্তনের স্বপ্নপূরণের জন্য। শট নির্বাচন থেকে ইনিংস গড়ে তোলা, ঈশানের ব্যাটে ধারাবাহিক দেখা যাচ্ছিল। ভালো পারফরম্যান্সই তাঁকে নির্বাচকদের নজরে আনে। ঈশান জানতেন, হারিয়ে যেতে যেতে ফিরতে হলে দরকার এমন কিছু ইনিংস, যা তাঁকে আবার প্রচারের আলোয় এনে দেবে। টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে বরাবর ভয়ঙ্কর ব্যাটার। আইপিএল থেকে দেশের জার্সিতে, ওপেন করতে নেমে খেলেছেন বেশ কিছু বিস্ফোরক ইনিংস। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে সেটাই করেছেন। তার ফল হাতেনাতে পেলেন ঈশান কিষান।
সদ্য শেষ হয়েছে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ৩-১ জিতে আহমেদাবাদ ছেড়েছেন সূর্য এন্ড কোং। এর মধ্যেই আজ নির্বাচক অজিত আগরকর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য নির্বাচিত ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে বোর্ড। দলে সুযোগ পাননি বর্তমান ভারতীয় দলের টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক শুবমান গিল। প্রায় দুই বছর পর আবার দলে সুযোগ পেলেন ঈশান কিষান । ভারতের পরবর্তী টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হচ্ছে ২১ শে জানুয়ারি, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধ। তার আগে ভারতীয় দলে তাঁর প্রত্যাবর্তন স্বস্তি দেবে ঈশানকে। ভারতীয় দলের দরজা যে বারবার খোলে না, তাঁর থেকে ভালো আর কে জানেন!