ভুলের পাহাড়ে বসে খেতাব ভুলল বাগান

এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জন, আইএসএল (ISL) সেরার খেতাব। চলতি মরসুমে তিনবার মোহনবাগানকে (ATK Mohun Bagan) হারানো টিমই যে সেরা, ফতোরদায় সেটা বুঝিয়ে দল মুম্বই (Mumbai City FC)। অন্য দিকে, গোটা টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেও মোহনবাগানের প্রাপ্তি বলতে রানার্স হয়ে এএএফসি কাপে খেলা নিশ্চিত করা।

ভুলের পাহাড়ে বসে খেতাব ভুলল বাগান
সৌজন্যে-মুম্বই সিটি এফসি টুইটার
Follow Us:
| Updated on: Mar 13, 2021 | 10:29 PM

মুম্বই সিটি এফসি-২ : এটিকে মোহনবাগান-১ (তিরি-আত্মঘাতী ২৯’, বিপিন ৯০) (উইলিয়ামস ১৮’)

সুশোভন মুখোপাধ্যায়

স্বপ্নভঙ্গ। মুম্বই এফ সি-(Mumbai City FC)র কাছে হারের হ্যাটট্রিক। গোয়া (Goa) থেকে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে এটিকে মোহনবাগানকে (ATK Mohun Bagan)। আইএসএলে (ISL) যে ডিফেন্স ছিল মোহনবাগানের গর্বের। মেগা ফাইনালে সেই ডিফেন্সই ডোবাল হাবাসের দলকে। দুটো ভুলের জন্য তীরে এসে তরী ডুবল হাবাসের দলের। ৯০ মিনিটে বিপিন সিংয়ের গোলে ঐতিহাসিক ডাবল নিশ্চিত করল লোবেরার দল। গ্রুপ লিগে এক নম্বর দল হিসাবে শেষ করে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলা নিশ্চিত করার পর এবার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হল মুম্বই।

শনিবারের ফাইনাল ছিল মোহনবাগানের কাছে বদলার লড়াই। গ্রুপ লিগের দুটো ম্যাচেই ওগবেচেদের কাছে হারতে হয়েছিল সবুজ-মেরুনকে। ফাইনালে অবশ্য সব বিভাগেই হাবাসের দলকে টেক্কা দিল মুম্বই। কেন তারা ভারতের সেরা দল,সেটা ফতোরদায় বুঝিয়ে দিলেন লে ফন্দ্রে,বিপিন সিংরা।

উইলিয়ামসের অনবদ্য গোল, তিরির আত্মঘাতী গোল, গোল বাতিল, গোলকিপারের ভুল। মেগা ফাইনালের সব রসদই মজুত ছিল। মুম্বইয়ের পাসিং ফুটবল হাবাস কিভাবে থামান সে দিকেই নজর ছিল সবার। শুরু থেকেই প্রেসিং ফুটবলে জোর দেয় সবুজ-মেরুন। শুরুতে গোলও পেয়ে যায় তারা। আহমেদ জাহুর ভুল থেকে ডেভিড উইলিয়ামসের জন্য বল বাড়ান রয় কৃষ্ণা। জোরালো শটে অমরিন্দরকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি অসি স্ট্রাইকার। সেই লিড অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তিরি আর অরিন্দমের ভুল বোঝাবুঝিতে গোল হজম করতে হয় সবুজ-মেরুন। আহমেদ জাহুর লম্বা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই বল ঢুকিয়ে দেন তিরি। ডার্বিতে আত্মঘাতী গোল করার পর ফের তিরির ভুলে ডুবতে হল হাবাসের দলকে। পরের মিনিটেই দুরন্ত সেভ করেন অরিন্দম। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মিনিটে মারাত্মক চোট পান অময় রানাওয়াড়ে। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় তাঁকে। খেলা বন্ধ থাকে বেশ কিছুক্ষণ।

দ্বিতীয়ার্ধেও চেনা মোহনবাগানকে পাওয়া যায়নি। চোখে পড়েনি হাবাসের প্ল্যান বি। হাভির ফ্রি কিক থেকে অফসাইডের কারণে গোল বাতিল আর স্প্যানিশ মিডফিল্ডারেরই একটা দুরন্ত শট ছাড়া সে ভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি রয় কৃষ্ণাদের। অন্য দিকে, সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে অনেক আগেই লিড নিতে পারত মুম্বই। ফাঁকা গোলে বল ঢোকাতে ব্যর্থ হন হুগো।

খেলার শেষ ১০ মিনিটে দুই কোচের মানসিকতাই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়। মোহনবাগান যখন খেলা ইনজুরি টাইমে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে, তখন ওগবেচেকে নামিয়ে মাস্টারস্ট্রোক দেন লোবেরা। সেটাই মেগা ফাইনালে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াল। খেলার একেবারে শেষ মিনিটে বিরাট ভুল করে বসেন আইএসএলের সেরা গোলকিপারের পুরস্কার জেতা অরিন্দম। ওগবেচে ঠান্ডা মাথায় বল সাজিয়ে দেন বিপিন সিংকে। গোল করতে করতে ভুল করেননি এ বারের আইএসএলের অন্যতম আবিষ্কার মুম্বইয়ের এই উইঙ্গার।

আরও পড়ুন: ISL Final 2020: মাথায় মারাত্মক চোট পেয়ে হাসপাতালে অময় রানাওয়াড়ে

এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জন, আইএসএল সেরার খেতাব। চলতি মরসুমে তিনবার মোহনবাগানকে হারানো টিমই যে সেরা, ফতোরদায় সেটা বুঝিয়ে দল মুম্বই। অন্য দিকে, গোটা টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেও মোহনবাগানের প্রাপ্তি বলতে রানার্স হয়ে এএএফসি কাপে খেলা নিশ্চিত করা।

এটিকে মোহনবাগান: অরিন্দম, প্রীতম, সন্দেশ, তিরি, শুভাশিস, ম্যাকহিউ, হাভি (মার্সেলিনহো), লেনি(জয়েশ), মনবীর, উইলিয়ামস, কৃষ্ণা।

মুম্বই সিটি এফসি: অমরিন্দর, অময় (রাকিপ), মোর্তাডা, হারনান, ভিগনেশ, জাহু, রাউলিন, রেনিয়ার, হুগো, বিপিন, লে ফন্দ্রে (ওগবেচে)।