
নয়াদিল্লি: জ্যাভলিনের প্রসঙ্গ উঠলেই নাম আসে নীরজ চোপড়ার। অবশ্য জ্যাভলিনের দুনিয়ায় অবশ্য ধীরে ধীরে নিজের জায়গা করে নিচ্ছেন আর এক ভারতীয় জ্যাভলিন থ্রোয়ার। তাঁর অনুপ্রেরণা আবার নীরজ চোপড়াই (Neeraj Chopra)। কথা হচ্ছে ২৮ বছর বয়সী কিশোর কুমার জেনাকে (Kishore Kumar Jena) নিয়ে। হানঝাউ এশিয়ান গেমস (Asian Games 2023) থেকে যিনি রুপো পেয়েছেন। এবং পেয়েছেন প্যারিস অলিম্পিকের টিকিট। এই কিশোরই চলতি বছরের জুলাইতে ভেবেছিলেন জ্যাভলিন তুলে রাখবেন। তারপর কীভাবে তাঁর জীবন বদলে গেল? বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
কেরিয়ার নিয়ে বিরাট চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন কিশোর জেনা। যে কারণে চলতি বছরের জুলাই মাসে ভেবেছিলেন জ্যাভলিন ছেড়ে দেবেন। ভোররাতে এরপর তিনি ফোন করেন তাঁর বাবাকে। সেই একটা ফোনই তাঁর জীবন বদলে দেয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে জানিয়েছেন। কিশোরের ফোকাস এখন প্যারিস অলিম্পিকে। কিন্তু তিনি এই পথে এতটা এগোতেই পারতেন না, যদি তাঁর পরিবারকে তিনি পাশে না পেতেন। কেরিয়ারের কঠিন সময়ের কথা মনে করে কিশোর বলেন, ‘লেবানন চ্যাম্পিয়নশিপে ৭৮ মিটার থ্রো করেছিলাম। এই পারফরম্যান্সে আমি বিরাট হতাশ হয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, কেরিয়ারটাই যেন শেষ হয়ে যাচ্ছে। ভোর ২টো অবধি কেঁদেছিলাম আমি। এরপর ৩টে নাগাদ বাবাকে ফোন করেছিলাম। বাবাকে বলেছিলাম, সেই সময় আমার মনের অবস্থা কেমন ছিল।’
সেই সময় কিশোরকে তাঁর বাবা বলেছিলেন পরবর্তী ইভেন্টে ফোকাস করতে। তারপর শ্রীলঙ্কা অ্যাথলেটিক্স ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ প্রত্যাবর্তন করেন কিশোর। ২৮ জুলাই কিশোর শ্রীলঙ্কান চ্যাম্পিয়নশিপে ৮৪.৩৮ মিটার থ্রো করেন। এবং যা তাঁর ব্যক্তিগত সেরা থ্রো ছিল। সেখান থেকেই কিশোর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে এবং এশিয়ান গেমসে যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়ে যান। লেবাননের ওই ইভেন্টের পর পাতিয়ালায় অনুশীলন চলাকালীন কিশোর ৮৪ মিটার জ্যাভলিন থ্রো করেন।
দেখতে দেখতে ফের জ্যাভলিনকে ধ্যান-জ্ঞান মানা শুরু করেন কিশোর। হানঝাউ গেমসে ৮৬.৭৭ মিটার থ্রো করে তিনি পেয়ে যান প্যারিস অলিম্পিকের কোটা। কৃষক পরিবারের ছেলে কিশোর। ৭ ভাই-বোন তাঁরা। ছয় দিদি রয়েছে তাঁর। অভাবের সংসার। বহুকষ্টে দিন কাটত কিশোরের। জ্যাভলিনের হাত ধরে সাফল্য আসার পর কিশোর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি এখন ভাবেন, ভাগ্যিস সেদিন বাবার কথা শোনার পর জ্যাভলিন ছাড়ার কথা ভাবেননি। না হলে তিনি পরিবারের পাশে দাঁড়াতেও পারতেন না, এবং পরিচিতিও পেতেন না।