হানঝাউ: মাল্টি স্পোর্টস ইভেন্ট। প্রায় ১২ হাজার অ্যাথলিট। শতশত সোনা, রুপোর পদক। এর মধ্যে টিম ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পাওয়া একজনের কথা আলাদা করে কে মনে রাখে? কিন্তু আরতিকে যে মনে রাখার মতোই! তার নানা কারণ রয়েছে। চাইলে নিজের দৈনন্দিন জীবনেই আটকে থাকতে পারতেন। কী হয় একটা ব্রোঞ্জ পদকে! ক্রীড়াবিদদের কাছে সেটা শুধুমাত্র একটা পদক নয়, অনেক ত্য়াগ, পরিশ্রমের ফসল। আরতি কস্তুরি রাজ। তেমনই একজন। রোলার স্কেটিংয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছেন টিম ইভেন্টে। চলুন ওঁকে একটু চিনে নিই। বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
গত মে মাসের কথা। স্কেটিং প্র্যাক্টিস করতে গিয়ে গুরুতর দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ২০ জায়াগায় কেটে যায়। ২৬টি সেলাই। এর মধ্যে কপালে ক্ষত অনেকটাই গভীর ছিল। ভরসা হয়ে ওঠেন তাঁর চিকিৎসক মা। এশিয়ান গেমসের আগেই সুস্থ করে তোলেন মেয়েকে। আরতি নিজেও চিকিৎসক। এমবিবিএস। মায়ের একটি হাসপাতাল আছে। সেখানেই দায়িত্ব সামলান ড: আরতি কস্তুরি রাজ। এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে কিছুদিনের ছুটি নিয়েছিলেন। দেশে ফিরেই আবার দায়িত্ব পালনে লেগে পড়বেন।
আরতি বলেন, ‘দিনটা এখনও মনে আছে। ২৬ মে। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা হয়। ২৬টি সেলাই পড়ে। এরপর বাইকে ট্রেনিং শুরু করি। রিহ্যাব করি।’ আরতির বাবা কস্তুরি রাজ ব্যবসায়ী। মা মালা রাজ গায়নোকলোজিস্ট। সাত বছরেই স্কেটিং শুরু আরতির। পড়ে যাওয়া, কাটা, ছড়ে যাওয়া, রক্ত ঝড়া, এ তো রোজকার ঘটনা! তবে আমার স্বপ্নপূরণ হল। সারাক্ষণ মা পাশে ছিল।’
জাতীয়, আন্তর্জাতিক স্তরে একশোর বেশি পদক। একটা সময় রোলার স্কেটিংয়ে বিশ্ব ক্রমতালিকায় পাঁচ নম্বরে ছিলেন। হঠাৎ কেন এই স্পোর্টসই বেছে নিলেন! ‘প্রতিটা স্পোর্টসেই তো চোট আঘাতের সম্ভাবনা থাকে।’ মায়ের পথেই হেঁটেছেন কস্তুরি। চেন্নাইয়ের এসআরএম মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস। এরপর ক্লিনিকাল এমব্রিওলজিতে মাস্টার্স।
আর তাঁর সবচেয়ে বড় সাপোর্ট? আরতির স্বামী সন্দীপ ওয়ারিয়ের। এই নামটা চেনা লাগতে পারে। তামিলনাডুর ক্রিকেটার। ঘরোয়া ক্রিকেটে পরিচিত নাম। ২০১৯ সালে বিয়ে হয়। তাতে অবশ্য প্যাশনে কোনও বাধা পড়েনি। ‘বিয়ের পরও কিছুই বদলায়নি। ও সবসময় পাশে থেকেছে,’ বলেন আরতি। তবে তাঁর আপশোস, অলিম্পিকে রোলার স্কেটিং নেই। হতেই পারে, আগামীতে এই খেলাও অন্তর্ভূক্ত হল অলিম্পিকে! ভারতের রোলার স্কেটাররাও হয়তো সুযোগ পাবেন।