
কলকাতা: ‘বোরড…বোরড…বোরড…’। ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি) স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের শার্লক চরিত্রকে নিয়ে একটি ওয়েব সিরিজ তৈরি করেছিল। এখনও সেটা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রয়েছে। শার্লকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ। তাঁর হাতে যখনই কোনও পছন্দসই কেস থাকে না, বড্ড একঘেয়ে লাগে। হাতের সামনে থাকা বন্দুকটা নিয়ে বোরড… চিৎকারে বাকিদের নাভিশ্বাস ছোটান। ভাবছেন তো, হঠাৎ কেন এই প্রসঙ্গ! পলক গুলিয়ার জন্য। আবার গুলিয়ে গেল নিশ্চয়ই! আরও সহজ করে দিচ্ছি। এশিয়ান গেমসে শুক্রবার ভারতের ঝুলিতে এসেছে আরও আটটি পদক। এর মধ্যে দুটি সোনা, চারটি রুপো এবং দুটি ব্রোঞ্জ। সব মিলিয়ে ভারতের পদক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩টি। এর মধ্যে আটটি সোনা, ১২টি রুপো এবং ১৩টি ব্রোঞ্জ। এর মধ্যে ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জিতেছেন শুটার পলক গুলিয়া। তাঁর সম্পর্কেই নানা তথ্য। বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে শুক্রবার সোনা জেতেন পলক গুলিয়া। একই ইভেন্টে রুপো আর এক ভারতীয় এষা সিং। সোনার মেয়ে পলকের কাছে শুটিং শুধুই ছিল একঘেয়েমি কাটানোর পন্থা। সেটাই যে তাঁকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দেবে, কোনও দিন ভেবেছিলেন পলক? সে কথা তো তিনি নিজেই বলতে পারবেন। বলেছেনও। পলকের কথায়, ‘গুরুগ্রামের সেইন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়ি তখন। সে সময়ই শুটিংয়ের সঙ্গে পরিচয়। সকালে এক ঘণ্টার সেশন থাকত। দেড় বছর এমনিই শুটিং করতাম।’
হরিয়ানার ঝাঝরের মেয়ে পলক। ১৭ বছরে পলক শুটিংকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেন কোভিড অতিমারীর পর। বলছেন, ‘২০১৯ সাল অবধি এই স্পোর্টস আমার কাছে স্রেফ মজা ছিল। এক ঘেয়েমি কাটাতে শুটিংয়ে ব্যস্ত রাখতাম। কিছুক্ষণের জন্য পড়াশোনা থেকে নিস্তার পাওয়া যেত। তবে কোভিড অতিমারীর শেষে এই স্পোর্টসকে গুরুত্ব দিতে শুরু করি।’
বাবা যোগীন্দর গুলিয়া ব্যবসায়ী। মেয়েকে শুটিংয়ে দিয়েছিলেন, যাতে পড়াশোনা থেকে সাময়িক বিরতি পায়। নিজের ফোকাস বাড়াতে পারে। পলক আরও বলেন, ‘আমাদের পরিবারে শুটিংয়ের কোনও সংযোগ নেই। আমিই প্রথম। পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম। অ্যাথলেটিক্স, সুইমিংও শিখতাম। শুটিং শুরুর পরও অন্যান্য স্পোর্টসে যুক্ত থেকেছি।’
শুটিংকে গুরুত্ব দেওয়া শুরুর পর মানসিকতাও বদলে যায়। অনেক বেশি সময় দিতে শুরু করেন। নিজেকে আরও নিখুঁত করায় উদ্যোগী হন। তারই সুফল, এশিয়ান গেমসে সোনার পদক।