
বারবার বিশ্বরেকর্ড করেন কী করে? এই প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে শুটিং মহলে। টোকিও অলিম্পিকে ভারত কিছুই করতে পারেনি। শুটারদের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। গত দু’বছরে ভারতীয় শুটিং টিমের প্রত্যাবর্তন কী ভাবে হয়, দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন সবাই। এশিয়ান গেমসের (Asian Games) মঞ্চই বেছে নিলেন ভারতীয় শুটাররা। আরও ভালো করে বললে, ঐশ্বর্য প্রতাপ সিং টোমার যেন স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের টিম ইভেন্ট থেকে জিতেছিলেন সোনা। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের ব্যক্তিগত ইভেন্টে ছিল ব্রোঞ্জ। ভারতকের সোনা খাতা খুলেছিলেন যিনি, তিনি আরও একবার সোনা ফলালেন। এ বার ৫০ মিটার থ্রি-পজিশন প্রোন থেকে। আর সেখানেও করেছেন বিশ্বরেকর্ড। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল যেমন তাঁর নিয়মিত ইভেন্ট, তেমনই ৫০ মিটার থ্রি-পিতেও প্রচুর সাফল্য রয়েছে মধ্যপ্রদেশের শুটারের। কী ভাবে ধারাবাহিক সোনার হাসি হাসছেন ঐশ্বর্য টোমার (Aishwary Pratap Singh Tomar)? TV9Bangla Sports এ বিস্তারিত।
মধ্যপ্রদেশের খরগো জেলা থেকে উঠে আসা ঐশ্বর্যের। ৮ বছর বয়স থেকে শুটিং করছেন। নজরে পড়ে যেতে সময় লাগেনি। শুটিং কেরিয়ারে সব মিলিয়ে ৭টা সোনা জিতেছেন। ১৩টা সোনা জিতেছেন টিম ইভেন্ট থেকে। শুটিং বিশ্বকাপের ৫০ মিটার প্রোন থেকে এর আগে জিতেছেন জোড়া সোনাও। ২০২১ সালে দিল্লিতে আয়োজিত ৫০ মিটার থ্রি পজিশনে সোনা জিতেছিলেন। ধারাবাহিকতা যে বরাবরই রেখেছেন, কেরিয়ারে নজর রাখলেই বোঝা যায়। থ্রি-পিতেই তিনি সবচেয়ে বেশি সফল। সেই ঐশ্বর্য এশিয়ান গেমসেও প্রমাণ করে দিলেন, তাঁকে থামানো কঠিন।
১৫ বছর বয়সে মধ্যপ্রদেশে রাজ্য শুটিং অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং শুরু করেন। তার পর আর পিছন ফিরে তাকাননি। ঐশ্বর্য বলছেন, ‘পেশাদার শুটার হওয়ার স্বপ্ন কোনও দিনই ছিল না। কিন্তু পড়াশোনায় একেবারে ভালো ছিলাম না। যে কারণে আমার বাবা-মা কোনও একটা খেলায় দিতে চেয়েছিলেন। আমার দাদা নভদীপ সিং রাঠোর আন্তর্জাতিক শুটার। দাদার কাছে শুটিংয়ের প্রাথমিক পাঠ নিয়েছিলাম। ততদিনে শুটিং ভালো লাগতে শুরু করেছে। ২০১৫ সালে পেশাদার শুটার হয়েছিল। এ বারের এশিয়ান গেমস থেকে সোনা জেতার পর আমার লক্ষ্য প্যারিস অলিম্পিক। ওখান থেকে সোনা আনাই আমার জীবনের স্বপ্ন, লক্ষ্য।’
শুটিংয়ে মনোঃসংযোগের জন্য দরকার পড়ে মেডিটেশন। এই খেলায় যাঁরা জুড়ে থাকেন, তাঁরা কি শারীরিক কসরৎ করেন? বছর কয়েক আগের ছবি পাল্টে দিয়েছেন এই প্রজন্মের শুটাররা। ফিটনেসের উপরেও সমান জোর দেন তাঁরা। ঐশ্বর্য তো বলেই দিচ্ছেন, ‘যত বেশি প্র্যাক্টিস করব, তত ভালো পারফর্ম করব। কিন্তু শুটিংয়ে ফিজিক্যাল ফিটনেসের থেকে মেন্টাল ফিটনেস অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি নিজের ফিটনেস রাখার জন্য নিয়মিত টেবল টেনিস খেলি। যাতে নিজেকে ফিট রাখতে পারি। ক্রিকেটও ভালোবাসি। বিরাট কোহলির বিরাট ভক্ত আমি। ওর ধারাবাহিকতা, আগ্রাসন আমাকেও মোটিভিট করে।’