করাচি : মাত্র ২৮ বছর বয়স তাঁর। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বেশ সাড়াও ফেলেছিলেন। কিন্তু ডিপ্রেশনের কাছে হার মানতে হল তাঁকে। পাকিস্তানের নামী স্নুকার প্লেয়ার মজিদ আলি আত্মহত্যা করলেন। আত্মহত্যা করার জন্য গাছ কাটার মেশিন বেছে নিয়েছেন তিনি। মজিদের মৃত্যু দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছে ক্রীড়ামহল। ডিপ্রেশন শিকার খেলার দুনিয়ায় অনেক প্লেয়ার। কেউ প্রত্যাশাপূরণ করতে না পেরে, কেউ ম্যাচ হেরে গিয়ে মানসিক রোগের শিকার হয়ে যান। কিছু দিন আগে এক ইন্টারভিউতে নিক কিরর্গিওজের মতো প্রথম সারির টেনিস তারকাও স্বীকার করে নিয়েছেন, ২০১৯ সালে উইম্বলডন ফাইনালে রাফায়েল নাদালের কাছে হারের পর গভীর ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলেন। মানসিক হাসপাতালেও যেতে হয়েছিল তাঁকে। মজিদ আলির মৃত্যু এই ডিপ্রেশনকে মারাত্মক ‘রোগ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছে। মজিদ আত্মহত্যা কেন করলেন? TV9 Bangla Sports তুলে ধরল এই প্রতিবেদনে।
স্নুকার ও বিলিয়ার্ড প্লেয়ার হিসেবে দ্রুত সাফল্য পেতে শুরু করেছিলেন মজিদ। অনূর্ধ্ব ২১ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো পেয়েছিলেন তিনি। ভাবা হচ্ছিল, স্নুকারে আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানের মুখ উজ্জ্বল করবেন। সেই মজিদই বৃহস্পতিবার সমুন্দ্রির বাড়িতে আত্মহত্যা করেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক রোগের শিকার ছিলেন তিনি। লড়াই চালাচ্ছিলেন, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। তা আর হল না। মজিদের ভাই ওমর বলেছেন, ছেলেবেলা থেকেই পাক স্নুকার প্লেয়ার ডিপ্রেশনের শিকার। মাঝখানে নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন। আবার ওই একই রোগের কবলে পড়েছিলেন মজিদ।
ওমরের কথায়, ‘মজিদের মৃত্যু আমাদের কাছে একটা বিরাট ধাক্কা। কখনওই ভাবিনি যে ও এই ভাবে মৃত্যুকে বেছে নিতে পারে।’ পাকিস্তানের বিলিয়ার্ড ও স্নুকার ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট আলমগীর শেখ বলেছেন, ‘ভীষণ প্রতিভাবান প্লেয়ার ছিল মজিদ। ও দেশের প্রথম সারির স্নুকার প্লেয়ারদের একজন ছিল। প্লেয়ার হিসেবে নিজেকে সফল দেখতে চেয়েছিল। আমরাও জানতাম, পাকিস্তানের মুখ ও উজ্জ্বল করবেই। কিন্তু এ ভাবে যে নিজেকে শেষ করে দেবে, কে জানত!’
মাসখানেক আগেই পাকিস্তানের আর এক স্নুকার প্লেয়ার মহম্মদ বিলাল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তার পর মজিদের অকাল মৃত্যু। গোটা পাকিস্তানি ক্রীড়ামহল থমকে গিয়েছে এই ঘটনায়। মাসখানেক ধরে নাকি চরম ডিপ্রেশনে কাটছিল মজিদের। কেন মানসিক রোগে গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি, তার সদুত্তর অবশ্য মেলেনি। ফর্ম খারাপ ছিল, নাকি অন্য কোনও ব্যক্তিগত কারণে তিনি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, তা পরিবারের তরফে জানা যায়নি।
ডিপ্রেশন যে খেলার দুনিয়ায় মারাত্মক চেহারা নিচ্ছে, তা অনেকেই আজকাল স্বীকার করে নিচ্ছেন। বিরাট কোহলির মতো ক্রিকেটার এর আগে বলেছেন, ফর্মে না থাকার কারণে একসময় তিনিও ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলেন। ডিপ্রেশনের কারণেই ক্রিকেট থেকে সাময়িক সরে দাঁড়িয়েছিলেন বেন স্টোকস।