
ইন্সটাগ্রাম ফলোয়ার দিয়ে কি কারও জনপ্রিয়তা বোঝা যায়? তাহলে বলে রাখা ভালো, ভারতীয় অ্যাথলিটদের মধ্যে ইন্সটাগ্রামে সবচেয়ে বেশি ফলোয়ার নীরজ চোপড়ার। কিন্তু সত্যিই কি এটি দিয়েই বিচার করা যাবে! একদমই না। নীরজ চোপড়ার জায়গা প্রতিটি ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীর মনে। শূন্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে সাফল্যের শীর্ষে। তবুও মাটিতে পা। অলিম্পিকে ইতিহাস গড়ে যেমন ছিলেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েও। ফোকাস নষ্ট করা যাবে না। তাই বছরের বেশি সময় কাটে দেশের বাইরে। বিদেশেই প্রস্তুতি সারেন। লক্ষ্য, দেশকে গর্বিত করা। ২০১৮ সালে এশিয়ান গেমসে সোনা, ২০১৮ সালে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা, ডায়মন্ড লিগে সোনা। পুরো যেন সোনার কেল্লা-ফতে। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে যে আরও একটা লক্ষ্য রয়েছে! বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই বলে আসছেন। প্রায় প্রতিটি সাক্ষাৎকারেই তাঁর মুখে ৯০ মিটার প্রসঙ্গ। সেটা কী? অলিম্পিকে সোনা জিতেছিলেন ৮৭.৫৮ মিটার জ্যাভলিন ছুঁড়ে। এরপর থেকে নীরজ বলে আসছেন, তাঁর লক্ষ্য ৯০ মিটার ছোঁড়া। গত বছর চোটের কারণে কমনওয়েলথ গেমসে খেলতে পারেননি। চোট সারিয়ে ডায়মন্ড লিগে নামলেও পুরনো ফিটনেসে ফেরা সহজ ছিল না। নীরজ পর পর পদক জিতলেও ৯০ মিটারের লক্ষ্য পূরণ হচ্ছিল না। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে প্রথম থ্রো ফাউল। তাতেই কি কিছুটা ছন্দপতন? হতে পারে। পরের থ্রো ৮৮.১৭ মিটার। এই থ্রোয়েই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সোনা নিশ্চিত হয়। পরের থ্রো-য়ে প্রাণপন চেষ্টা করেন ৯০-এর ঘরে পৌঁছতে। প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
বিশ্বসেরা হয়েও নীরজের মুখে সেই ৯০ মিটার প্রসঙ্গ। অ্যাথলেটিক্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সাইডলাইনে বলেন, ‘সকলেই বলছিল, অ্যাথলেটিক্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের সোনা নেই। এ বার সেই স্বপ্ন পূরণ হল। এই দেখুন সোনার পদক (গলায় ঝোলানো পদক দেখালেন)। আমি কিন্তু নিজের লক্ষ্য ভুলিনি। বলেছিলাম, ৯০ মিটার ছুঁতে হবে। আজও চেষ্টা করেছি। হল না।’ মুখে সেই সরল হাসি রেখে বলে চললেন, ‘এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে ৯০ মিটারের চেয়ে সোনার পদকটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সামনে আরও প্রচুর প্রতিযোগিতা রয়েছে, ৯০ মিটারের লক্ষ্য পার করবই।’
জ্যাভলিনের ইতিহাসে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে পরপর অলিম্পিক এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির গড়েন নীরজ। ইতিহাসে আর দু-জন ক্রীড়াবিদের এই নজির রয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্রের জান জেলেনি এবং নরওয়ের আন্দ্রেস থোরকিলসেনের। জেলেনি ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০০ অলিম্পিকে সোনা জিতেছিলেন। পাশাপাশি ১৯৯৩, ১৯৯৫ এবং ২০০১ অ্যাথলেটিক্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতেন। অন্য দিকে, থোরকিলসেন ২০০৮ অলিম্পিকে সোনা ও ২০০৯ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। সামনেই এশিয়ান গেমস। সোনার পদকে যেন নীরজের নাম আগে থেকেই লেখা থাকবে!