সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্ত্তী
টোকিও অলিম্পিকের পর বাঙালি টিটি প্লেয়ার সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়ের জন্য ভারতীয় টিটিতে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। ভারতের তারকা টিটি প্লেয়ার মনিকা বাত্রা (Manika Batra) অভিযোগ তুলেছিলেন, সুতীর্থার জন্য বাঙালি কোচ সৌম্যদীপ রায় তাঁকে ম্যাচ গড়াপেটায় সামিল হতে বলেছিলেন। পুরো বিষয়টি গড়ায় আদালত অবধি। এই সকল অভিযোগের জবাবটা সুরাটে চলা ৩৬তম জাতীয় গেমসে (National Games) দিলেন সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় (Sutirtha Mukherjee)। এ বারের জাতীয় গেমসে বাংলার সুতীর্থা সোনার হ্যাটট্রিক করেছেন। ৩৬তম জাতীয় গেমসে মহিলাদের টিম ইভেন্টে, ডাবলসে এবং মহিলাদের সিঙ্গলসে সোনা জিতেছেন সুতীর্থা এখনও তিনি বাড়ি ফেরেননি। সুরাট থেকেই TV9Bangla-কে ফোনে একান্ত সাক্ষাৎকারে সুতীর্থা জানালেন, তাঁর প্রথম জাতীয় গেমসে খেলার অনুভূতি।
সোনার হ্যাটট্রিক করা সুতীর্থা বললেন, “এটা আমার প্রথম জাতীয় গেমস। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে যে তিনটে সোনা জিতেতে পেরেছি, তার জন্য আমার ভীষণ ভালো লাগছে। সত্যি বলতে আমি আমার পারফরম্যান্স নিয়ে ভীষণ খুশি।”
জাতীয় গেমসে এই সোনায় মোড়া সাফল্যের পর, কোনও তাড়াহুড়ো করতে চাইছেন না সুতীর্থা। তিনি আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে বললেন, “আমি এখনও কলকাতায় পৌঁছাইনি। আজ রাতে পৌঁছবো। আগে বাড়ি যাই, তারপর পরবর্তী প্ল্যানিং করব। এরপর কী করব তা এখনও ঠিক করিনি। সময় নিয়ে দেখে শুনে পরবর্তী প্ল্যানিং করতে চাই। যার জন্য আমি আমার কোচের সঙ্গেও কথা বলব।”
জাতীয় গেমসে মেয়েদের সিঙ্গলসের সেমিফাইনালে বাংলার সুতীর্থা হারিয়েছিলেন টিটি তারকা মনিকা বাত্রাকে। উল্টোদিকে মনিকাকে দেখে কোনও বাড়তি চাপ অনুভব করেননি এমনটাই জানালেন সুতীর্থা। তিনি বলেন, “সামনে থাকা প্রতিপক্ষ কে সেই নিয়ে খুব বেশি ভাবিনি। পুরনো জিনিস মনেও রাখিনি। পুরো খোলা মনে ম্যাচটা খেলেছিলাম।”
জাতীয় গেমসে সুতীর্থার এই সোনার সাফল্যের পিছনে বড় অবদান রয়েছে সৌম্যদীপ-পৌলমীর। সুতীর্থা এই বিষয়ে বলেন, “আমি আমার এই সাফল্য অবশ্যই আমার কোচকে উৎসর্গ করছি। বর্তমানে আমি ধানুকা ধুনসিড়ি সৌম্যদীপ-পৌলমীর অ্যাকাডেমিতে প্র্যাক্টিস করি। সৌম্যদীপদা-পৌলমীদি যেভাবে আমাকে সাপোর্ট করে, তা বলে বোঝাতে পারব না। ওরা যদি আমার পাশে না থাকত, তা হলে আমি হয়তো এইরকম পারফর্ম করতে পারতাম না।”
তারকা টিটি প্লেয়ার মনিকাকে সিঙ্গলসের সেমিফাইনালে এবং ফাইনালে সিনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সৃজা আকুলাকে হারিয়ে সোনা জিতেছেন সুতীর্থা। প্রত্যেক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও আলাদা পরিকল্পনা ছিল না তাঁর। তিনি বলেন, “প্রতিটা ম্যাচে আমার সামনে কে রয়েছে, তা নিয়ে আমি সেই অর্থে কিছুই ভাবিনি। কঠিন প্রতিপক্ষের মুখে নামলেও পুরো টুর্নামেন্টটা খোলা মনে খেলেছি। এবং উপভোগ করেছি। আমার প্রস্তুতি খুব ভালো হয়েছিল, সেই ফলটাও পেয়েছি।”
বাংলার হয়ে একটা সময় খেলছিলেন না সুতীর্থা। আবার তিনি ফিরেছেন বাংলায়। শুধু ফিরেছেন বললে ভুল বলা হবে। বাংলায় ফিরে আবার জ্বলে উঠছেন বছর ২৬ এর তারকা প্যাডলার সুতীর্থা। তিনি বলেন, “আমি আবার বাংলায় হয়ে খেলছি। আমি জাতীয় গেমসে বেঙ্গলের হয়েই খেলেছি। আগামী দিনে কী করব সেটা এখনও ঠিক করিনি।”