লখনৌ: ‘সোনে জ্যায়সা বাচ্চা মাটি হো গয়্যা’। অর্থাৎ, সোনার মতো ছেলেটা মাটির মতো ঝুরঝুরে হয়ে গেল। ২ বছর বয়সে পোলিও আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আত্মীয় স্বজনদের খোঁটা শুনতে হত আবু হুবেদাকে (Abu Hubaida)। আবু লখনৌয়ের বাসিন্দা। আত্মীয় স্বজনদের খোঁটার কারণই হোক বা অন্যকিছু নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ ছিল আবুর মধ্যে। বেছে নিয়েছিলেন খেলাধুলোর জগৎকে। কিন্তু হুইলচেয়ার যাঁর জীবনের অঙ্গ তিনি কীভাবে নিজেকে প্রমাণ করবেন কীভাবে? হুইলচেয়ারে বসেই ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু করেন আবু। ভারতীয় প্যারা ব্যাডমিন্টনে (Para Badminton) আজ অন্যতম সেরা নাম আবু হুবেদা। ২ বছর বয়সে পোলিও আক্রান্ত যুবকের জীবন ১৮০ ডিগ্রি পাল্টে দিয়েছে ব্যাডমিন্টন। আবুর দুর্দান্ত সাফল্যের কাহিনী তুলে ধরল TV9 Bangla।
ক্রীড়া জগতের প্রতি আবু হুবেদার আকর্ষণ তাঁর ভাইকে দেখে। ভাই ক্রিকেট খেলে বাড়ি যখন ফিরত, হাতে থাকত মেডেল, ট্রফি। সেসব দেখে উৎসাহ পান আবু। হুইলচেয়ারে বসে ব্যাডমিন্টন খেলতে খেলতে প্রথম মেডেলের স্বপ্ন পূরণ হয়ে যায় ২০০৯ সালে। ২০১৭ সালে দেশের হয়ে জেতেন প্রথম আন্তর্জাতিক পদক। আবুর বয়স এখন ২৮ বছর। ২০২৪ প্যারিস প্যারালিম্পিক থেকে সোনার পদক জয়কে পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন। তাঁরই মতো বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষদের প্রতি আবুর বার্তা, “আপনাদের যদি কেউ খোঁটা দেয় তাহলে ওই মানুষগুলিকে শত্রু না ভেবে বন্ধু ভাবুন। এমন লোকেরা জীবনে না থাকলে এগোনোর প্রেরণা পাবেন না।”
উত্তরপ্রদেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার লক্ষ্মণ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন আবু হুবেদা। ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের হাত থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য লক্ষ্মণ পুরস্কার পান। দ্রোণাচার্য পুরস্কারে সম্মানিত কোচ গৌরব খত্রার অধীনে নিজেকে তৈরি করছেন আবু। বিশ্ব ব়্যাঙ্কিংয়ে তাঁর স্থান এখন ষষ্ঠ স্থানে। লখনৌ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি কম পাশ করার পর পড়াশোনা বেশিদূর চালিয়ে নিয়ে যেতে চাননি আবু। এখন তাঁর সব ফোকাস প্যারা ব্যাডমিন্টনের দিকে। বাবা-মায়ের লাগাতার উৎসাহ আবুর শক্তি। সেই শক্তিকে সম্বল করে প্যারিস অলিম্পিকের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন আবু হুবেদা।